অনুসন্ধানী সংবাদ সংবাদ

জোড়া খুন: সমিতির ঋণের টাকা জোগাড় করতে ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ছিল

image 703425 1691165156
print news

স্থানীয় একটি সমিতি থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়েছিল টাঙ্গাইলের সখিপুরের মোস্তফা মিয়া (২০)। কিন্তু ওই ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। এ কারণে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। মোস্তফা জানতেন, মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায়ী শাহজালাল প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন করেন। দিন শেষে এক থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে বাসায় যান। তাই মোস্তফা পরিকল্পনা করেন রাতে যখন শাহজালাল বাসায় ফিরবেন তখন তার ওপর হামলা চালিয়ে টাকা লুট করবেন। এ কারণে তিনি আলামিন নামে একজনকে সঙ্গে নেন। আলামিন তার সঙ্গেই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।

ঘটনার দিন মোটরসাইকেলে বাসায় ফেরার পথে শাহজালালের সঙ্গে ছিলেন তার চাচা মজনু মিয়া। পথে নির্জন স্থানে মোটরসাইকেল থামিয়ে শাহজালাল ও মজনুর ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় মোস্তফা ও আলামিন। এতেই মৃত্যু হয় চাচা-ভাতিজার।

শুক্রবার কাওরান বাজারস্থ র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও টাঙ্গাইলের সখিপুরে অভিযান চালিয়ে মোস্তফা মিয়া ও আলামিনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ভিকটিম শাহজালালের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। তিনি জানান, ১৯ জুলাই রাতে টাঙ্গাইলের সখিপুরের জামালের চালা এলাকায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন শাহজালাল ও মজনু মিয়া। এ ঘটনায় শাহজালালের বাবা বাদী হয়ে টাঙ্গাইলের সখিপুর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।

র‌্যাব জানায়, সখিপুরের হামিদপুর বাজারে দীর্ঘদিন যাবত মনিহারি ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা করছিলেন শাহজালাল। চাচা মজনু মিয়া কৃষি কাজের পাশাপাশি তাকে ব্যবসায় সহযোগিতা করতেন। ঘটনার দিন শাহজালাল রাতে বাসায় ফেরার পথে চাচা মজনু মিয়াকে দেখে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা ও আলামিন সখিপুরের বাঘের বাড়ি এলাকায় জামালের চালায় নির্জন স্থানে ওতপেতে থাকে। চাচাকে নিয়ে শাহজালাল ওই স্থানে পৌঁছতেই মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মোস্তফা। এরপরই শাহজালালের মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এতে শাহজালাল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মোস্তফা শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে মজনু মিয়া চিৎকার দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আলামিন লোহার রড দিয়ে তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে।

র‌্যাব জানায়, এরপর লোহার রড দিয়ে পুনরায় এলোপাতাড়ি আঘাত করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে মোস্তফা ও আলামিন। তারা শাহজালালের মোটরসাইকেলটি পাশের একটি জমিতে ফেলে দেয়। শাহজালালের দুটি মোবাইল ফোনের একটি আলামিনকে দিয়ে অপরটি স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেয় মোস্তফা। হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমদিকে গ্রেফতারকৃতরা এলাকায় থাকলেও পরে টাঙ্গাইল, গাজীপুর এবং ঢাকায় আত্মগোপন করে।

র‌্যাব আরও জানায়, শাহজালাল ও তার চাচার কাছে কাঙ্ক্ষিত টাকা পায়নি মোস্তফা ও আলামিন। পেয়েছে মাত্র ৬০০ টাকা।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *