দালাল ছাড়া মেলে না লাইসেন্স বরিশাল বিআরটিএ


দালাল ছাড়া বরিশাল বিআরটিএ অফিসে লাইসেন্স করতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় সেবাগ্রহীতাদের। অতিরিক্ত অর্থ না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ। অনিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জড়িত বলে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বরিশাল বিআরটিএ অফিসে সময় টেলিভিশনের ক্যামেরা দেখে সতর্ক হতে থাকে দালালরা। একজনকে সন্দেহ হলে পিছু নেয় সময়ের ক্যামেরা। কিছুদূর এগোতেই তার হাতে থাকা ব্যাগে পাওয়া যায় অন্যদের লাইসেন্স আবেদনের বিভিন্ন কাগজপত্র। তার দাবি, এক-দুইশ’ টাকার বিনিময়ে শুধু ফরম পূরণ করে দেন তিনি।
সেখানে অবস্থান করা শেখ জলিল নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘কেউ ফরম পূরণ করতে না পারলে আমি তাদের কাগজপত্র পূরণ করে ঠিক করে দেই। এতে তারা খুশি হয়ে ৫০-১০০ টাকা চা খেতে দেয়।’
তবে সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, একটি শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বিআরটিএ অফিসে। এদের বাইরে গাড়ির লাইসেন্স করতে গেলে, নানা নিয়মের বেড়াজালে হতে হয় হয়রানির শিকার।
ভুক্তভোগীরা বলছে, এখানে কর্মরত তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা আমাদের হয়রানি করছে। যেখানে মেডিকেল করতে প্রয়োজন ২২০ টাকা সেখানে নেয়া হচ্ছে হাজার টাকা। এরপরও আমাদের লাইসেন্স সময় মতো পাচ্ছি না। মোটকথা এখানে দালাল ছাড়া কাজ হয় না। দালাল দিয়ে করালে সব ঠিক, না হয় অযথা হয়রানি হতে হয়।
কতিপয় দালালের কারণে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হচ্ছে দাবি করে অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বিআরটিএ বরিশাল সার্কেল সহকারী পরিচালক বলেন, ‘আমার কাছে প্রায় অনিয়মের অভিযোগ আসে। এতে আমার ও আমার ডিপার্টমেন্টর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। কয়েক জন আনসারের দুর্নীতির জন্য পুরো ডিপার্টমেন্টের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।’
তবে অভিযুক্ত আনসার হুমায়ুনের দাবি বিআরটিএর লোকজনই জড়িত অবৈধ লেনদেনে।
আনসার বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার বলেন, বিআরটিএর লোকজনই অনিয়মে জড়িত।
দায়িত্বরত অন্য আনসার সদস্যরা বলছেন, আমরা অফিস চলাকালে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করি। সে জন্য সরকারি বেতন পাই এবং সে টাকায় চলি, বাড়তি টাকা নেব কেন!
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগ বিআরটিএ পরিচালক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত কেউ বা প্রতিষ্ঠানের কেউ যদি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশাল বিভাগে মোট ৬টি বিআরটিএ সার্কেল অফিস রয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ নতুন লাইসেন্সের জন্য এসব অফিসে আবেদন করেন।