বরিশাল বাংলাদেশ

সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে ঢাকার প্রধান সড়ক

image 705272 1691601317
print news

সকালে রোদ ঝলমলে আকাশ দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে ছিলেন কর্মমুখী মানুষ। কিন্তু বিধিবাম। বিকালে মাত্র আধাবেলার বৃষ্টিতে ডুবে যায় ঢাকার অধিকাংশ রাস্তা। শ্রাবণের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। রাজধানীর বসুন্ধরা, পল্টন, খিলক্ষেত, মতিঝিল, কাকরাইল, রামপুরা, শান্তিনগর, শাহবাগ, ধানমন্ডি, পুরান ঢাকা ও মিরপুর, পীরেরবাগসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে পানি জমে যায়। ফলে যানজট এবং গণপরিবহণ কমে যাওয়ায় ঘরে ফেরা মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে বাসায় ফিরতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। যারা নিজস্ব গাড়িতে চলাচল করেন তারাও দীর্ঘ যানজটে নাকাল হয়েছেন। দুর্ভোগের শিকার হন শিক্ষার্থীরাও।

বিকাল ৬টার দিকে মিরপুর শেওড়াপাড়া থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে থেকে মহাখালী, বনানী, সাহারা ও কুড়িল এলাকায় সরেজমিন ঘুরে মানুষের দুর্ভোগের চিত্র চোখে পড়ে। স্থানে স্থানে মানুষের জটলা চোখে পড়ে। বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করে কেউ কেউ হেঁটেই রওয়ানা হন বাসার পথে।

আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, বিকালে ঢাকায় ৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার। সকালে ঢাকার বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং বিকালে তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৯৭ শতাংশে।

সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় একই চিত্র। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে পানি জমে থাকায় যানবাহনও কম ছিল। কোথাও অটোরিকশার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সেখানে থাকা যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। বৃষ্টিতে বেশি জলাবদ্ধতা দেখা গেছে শান্তিনগর, মগবাজার, মৌচাক, নয়াপল্টন, আরামবাগ, মতিঝিলে। এসব এলাকার অলিগলিতে হাঁটুপানি জমে। এতে যানবাহন কমে যায়। বৃষ্টির ফলে প্রগতি সরণির কুড়িল-রামপুরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। এ সড়কে যানবাহন চলাচলেও ধীরগতি ছিল। এছাড়া যানস্বল্পতায় বৃষ্টিতে ভিজেও অফিস ফেরত মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

রাজধানীর জুরাইন, শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী এলাকার মুরাদপুর মেডিকেল রোড, হাই স্কুল রোডেও পানি জমে যায়। স্থানীয় পথচারীরা জানান, দীর্ঘ বছর ধরে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। আর বেশি বৃষ্টি হলে পানি নেমে যেতে সময় লাগে আরও বেশি। মতিঝিলের বলাকা চত্বর, শাপলা চত্বর, বাংলামোটর, পল্টন মোড়ে বাড়ি ফেরা মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। কিছুক্ষণ পরপর একটি করে গাড়ি আসার সঙ্গে সঙ্গে হুড়োহুড়ি লেগে গিয়েছিল।

বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ  জানান, অফিস থেকে বের হওয়ার পর থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি চলছে। স্টাফ গাড়ি এখনো আসেনি। সড়কে গণপরিবহণ কম থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায়ও যেতে পারছি না। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে অফিসের নিচে অপেক্ষা করছি। শুধু আমি নই, আমার অনেক সহকর্মীরই একই অবস্থা। এদিকে উত্তরা রাজউক কলেজের শিক্ষার্থী অর্থি বাবার গাড়িতে করে যাতায়াত করেন। দুপুরে ব্যাচে প্রাইভেট পড়তে যান কুর্মিটোলায়। পড়া শেষে বিকালে মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসায় ফেরার পথে যানজটে পড়ে যান। এ সময় যুগান্তরকে বলেন, প্রায় আধাঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে গাড়ি চলছে। বাসায় কখন ফিরব জানি না।
বিকালের বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে যায় মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তানের, ফার্মগেট, মিরপুর-১০ নম্বরসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাতের সব দোকান। তারাও দুর্ভোগে পড়েন। সাধারণ ফুটপাতে ঘরে ফেরা মানুষের কাছেই তাদের পণ্য বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু বিকালের বৃষ্টি তাদের আয়-রোজগারেও বাগড়া দিয়েছে।

সূত্র জানায়, রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমাতে ওয়াসার দায়িত্বে থাকা ২৬টি খাল দুই সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু এতেও খুব বেশি কাজ হয়নি। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে ঢাকার প্রধান সড়কসহ অলিগলি।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *