বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের রাস্তাঘাট পানির নীচে


শ্রাবনের পূর্ণিমায় ফুসে ওঠা সাগরের সাথে উজানের ঢালের পানিতে সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রমের ফলে প্লাবনের সাথে ভারী বর্ষণে বরিশাল মহানগরী সহ পুরো অঞ্চল জুড়ে প্রায় সব ফসলি জমি ও জনপদসমূহ প্লাবিত হবার পরে দুর্যোগ পুনরায় কড়া নাড়ছে। রোববার দুপুর ৩টার পূর্ববর্তী ৩৪ ঘন্টায় বরিশালে প্রায় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময়ে সাগর পাড়ের খেপুপাড়াতে একশ মিলি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে মৌসুমী বায়ু দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় ও উপকূল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় থাকার কথা জানিয়ে বরিশাল অঞ্চল সহ উপকূলভাগ জুড়ে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি সহ বজ্র বৃষ্টি এবং কোন কোন স্থানে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে রোববার রাতের প্রথম প্রহর থেকে মাঝারী বর্ষণে বরিশাল মহানগরীর অনেক এলাকা আরো একবার ডুবেছে। বছরের ১২ মাস নিমজ্জিত নগরীর নবগ্রাম রোড রোবববার সকাল থেকে পুনরায় পানির তলায় চলে গেছে। ফলে এ সড়কটির বটতলা বাজার থেকে করিম কুটির পর্যন্ত হাজার হাজার বাসিন্দার দুর্ভোগের শেষ নেই। সড়কটির বেশীরভাগ অংশই এখন প্রায় দেড় ফুট পানির তলায়। নগরীর আরো বেশ কিছু এলাকার বাসা বাড়ী ও রাস্তাঘাটও পুনরায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রমের পাশাপাশি প্রবল বর্ষণে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের প্রায় পৌনে ২লাখ হেক্টর জমির পাকা আউশ ধান ছাড়াও অর্ধ লক্ষাধিক হেক্টরের আমন বীজতলা নিমজ্জিত হবার ফলে পুনরায় মারাত্মক ঝুঁকির মুখে।
সামনে ভাদ্রের বড় অমাবশ্যা নিয়েও এ অঞ্চলের কৃষকরা চরম দুঃশ্চিন্তায়। গত তিন বছর ধরে ভাদ্রের অমাবশ্যায় বরিশাল কৃষি অঞ্চলের রোপা আমন ও আউশ নিয়ে কৃষকের দুর্ভোগের শেষ নেই। সদ্য সমাপ্ত খরিপ-১ মৌসুমে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭৮ ভাগ জমিতে আউশ আবাদ হলেও ইতোমধ্যে তা একদফা প্লাবিত হবার পরে পুনরায় বর্ষণ আর প্লাবনের ঝুঁকির মুখে। এপর্যন্ত মাত্র ৮৮ ভাগ জমির পাকা আউশ মাঠে। অপরদিকে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের মাত্র ২০ ভাগ আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৫০ হাজার হেক্টরের বেশী জমিতে আমন বীজতলা তৈরী হলেও তা ইতোমধ্যে একদফা প্লবিত হবার পরে সামনে ভাদ্রের আমাবস্যা নিয়ে কৃষকরা শংকিত। এবার আউশ ও আমন থেকে বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ২৩ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ্য স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।