বিদেশিদের পেছনে ডলার খরচ করে বিএনপির কোনও লাভ হয়নি: তথ্যমন্ত্রী


বিদেশিদের পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে বিএনপির কোনও লাভ হয় নাই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন নানামুখী ষড়যন্ত্র। কিন্তু এই ষড়যন্ত্র করে কোনও লাভ হয়নি। বিদেশিদের পেছনে ঘুরে কোনও লাভ হয়নি। লাভ না হওয়ার কারণে বিএনপি এখন ভিন্ন সুরে কথা বলছে। তারা লাখ লাখ ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিল। এরমধ্যে কয়েকটা বিবৃতি দিয়েছিল। একেকটা বিবৃতির পেছনে কয়েক লাখ ডলার খরচ হয়েছে। কংগ্রেসম্যানরা বিবৃতি দিলো। তারা বিবৃতি দেওয়ার পর হোয়াইট হাউজে যখন প্রশ্ন করা হলো কংগ্রেসম্যানরা একটা বিবৃতি দিয়েছে, তোমরা কিছু জানো কিনা? তারা বললো—আমরা তো কিছু জানি না। অথচ এই চিঠি লেখার পেছনে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। তাই এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে, এত বিদেশিদের পেছনে ছুটে কোনও লাভ হয় নাই। বিএনপির দাবি কেউ সমর্থন করে না।
এ জন্যই বিএনপির সুর এখন ভিন্ন। তারা এখন বলছে, ভারত কী বললো আসে যায় না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী বললো আসে যায় না, যুক্তরাজ্য কী বললো আসে যায় না, চীন কী বললো আসে যায় না—এখন সুরটা আরেক রকম হয়ে গেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন কয়েক দিন আগে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ১৩ জন জঙ্গি আটক হয়েছে। এই জঙ্গি আটকের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বললেন, আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য, মানুষ দৃষ্টি সরানোর জন্য জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। যেমন চেয়ারম্যান তেমন মহাসচিব! যখন সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছিল, অনেক জঙ্গি আটক করছিল, তখন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিল- ‘কিছু মানুষকে জেলে দেওয়া হয়। কিছু দিন আটক রাখা হয়। তারপর যখন চুল দাড়ি লম্বা হয় তখন তাদের জঙ্গি আখ্যা দেওয়া হয়’। আর এখন ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলছেন মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়ার জন্য নাকি জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা হচ্ছেন জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
তিনি আরও বলেন, যারা জঙ্গি সমর্থক, জঙ্গিদের লালন-পালন করে, কোনও বিদেশি শক্তি তাদের সমর্থন করে না। আর আপনারা জানেন তারেক রহমানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি। ভিসা না দেওয়ার জন্য এখান থেকে তারবার্তা পাঠানো হয়েছিল। এখানকার মার্কিন দূতাবাস থেকে স্টেট ডিপার্টমেন্টে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছিল তারেক রহমান একজন জঘন্য প্রকৃতির মানুষ, তাকে যেন ভিসা না দেওয়া হয়। সুতরাং সেই তারেক রহমান যখন সেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হয় সে দলকে কেউ সমর্থন করতে পারে না। আপনারা আরও জানেন কানাডার আদালত বিএনপিকে পর পর পাঁচবার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডিপার্টমেন্টও বিএনপিকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল।
তাদের সঙ্গে কেউ নাই। এখানে ফখরুল সাহেব লাফালাফি করলেও কিছু আসে যায় না, গয়েশ্বর বাবু অভিনয় করলেও কিছু আসে যায় না, আমানউল্লাহ আমান অবচেতন হওয়ার ভান করলেও কিছু আসে যায় না। তাদের সঙ্গে কেউ নাই।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবাহান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ডিইউজে সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন, সাংবাদিক নেতা মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ।