রাজনীতি

বাংলাদেশের বর্তমান শাসনকে ‘পাকিস্তান মডেল’ বললেন আনু মুহাম্মদ

anu muhammad
print news

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেই চেতনার যত বড় ক্ষতি করেছে, তা দেশের আর কোনো সরকার করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেছেন, বলা হয় যে বাংলাদেশ যাতে পাকিস্তান মডেলে যেতে না পারে, সে জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করছে। কিন্তু বাংলাদেশ পাকিস্তান মডেল থেকে বেরই হতে পারছে না। বাংলাদেশ এখন আসলে পাকিস্তান মডেলেই চলছে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ছাত্র-জনতার এক সমাবেশে অংশ নিয়ে আনু মুহাম্মদ এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগসহ ১৩ দফা দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট।

সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, পাকিস্তান মডেল হচ্ছে ২২ পরিবারের মতো বিপুল সম্পদশালী কিছু গোষ্ঠীর হাতে দেশকে তুলে দেওয়া। বাংলাদেশে সেটাই হয়েছে। পাকিস্তানে যেভাবে ২২ পরিবার ছিল, এখনকার ২২ পরিবার তার চেয়ে অনেক বেশি সম্পদশালী।

বাংলাদেশে সামরিক-বেসামরিক আমলাদের যে কর্তৃত্ব, এটা পাকিস্তান মডেল বলে মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে যে স্বৈরতন্ত্র ও মানুষের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন, এর বিরুদ্ধে লড়াই করেই তো মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। নিপীড়ন-নির্যাতন তো পাকিস্তান মডেল। বাংলাদেশ এখন আসলে পাকিস্তান মডেলেই চলছে। এটা চালাচ্ছে তারা, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে।

আওয়ামী লীগ সরকার ‘মানুষের ভোটের মর্যাদা’ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনসহ একটা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না। এগুলো সরকারের দলীয় একেকটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ অভিযোগ করেন, ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে, লাখ-কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, মেগা প্রকল্পের নামে লুটপাট হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্র ধ্বংস করে’ যে উন্নয়ন উপহার দিয়েছে, তা দেশের মানুষের কাজে লাগেনি বলে মন্তব্য করেন লেখক–গবেষক মাহা মির্জা। বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেন, এই উন্নয়নের বাংলাদেশে কৃষক-শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাত থেকে বহু আগে মাছ-মাংস-ডিম হাওয়া হয়ে গেছে। তাহলে এটা কিসের উন্নয়ন?
গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসভাপতি জামশেদ আনোয়ার, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার সমন্বয়ক জাফর হোসেন, শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি আ ক ম জহিরুল ইসলাম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ফেডারেশনের (মুক্তি কাউন্সিল) সভাপতি মিতু সরকার বক্তব্য দেন। বক্তারা প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিলের কড়া সমালোচনা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *