বরিশালের বাকেরগঞ্জে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নামে সড়ক উদ্বোধন, জানে না উপজেলা প্রশাসন


বরিশালের বাকেরগঞ্জে একটি সড়ক বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নামে নামকরণ করা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৭ আগস্ট উপজেলার কলসকাঠী-ডিংগামানিক সড়কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রত্না ও তার স্বামী দলের কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তবে, উপজেলা প্রশাসন বলছে, তিন কিলোমিটার ওই সড়কের নামকরণের বিষয়ে কিছুই জানে না তারা।
বাকেরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজল কুমার শীল বলেন, নামকরণ প্রক্রিয়াটি যথাযথ হয়নি। কারণ বাংলাদেশি কারও নামে নামকরণের ক্ষেত্রে উপজেলা কমিটি থেকে প্রস্তাব যেতে হয়। আর বিদেশি কারও নামকরণের ক্ষেত্রে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এখানে সেসব নিয়মের কোনোটাই মানা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আমাকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণও জানানো হয়নি। শুধু একদিন এমপি মহোদয় ফোন দিয়ে বলেছিলেন, একটি রাস্তার উদ্বোধন রয়েছে, আপনি থাকবেন। কিন্তু কোন রাস্তা কীসের রাস্তা কিছুই জানানো হয়নি।’
নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, সড়কের নামকরণের ব্যাপারে আগে থেকে তারা কিছুই জানতেন না। কিছু না জানিয়েই তাদের অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে দুটি শ্বেতপাথরের ফলক লাগিয়েছেন এমপি মহোদয়। এখানে আমাদের কী করার রয়েছে।
এদিকে, জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের সাবেক একজন হাইকমিশনারের নামে সড়কের নামকরণ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকাটি তেরঘর জমিদারদের এলাকা নামে প্রসিদ্ধ। এখানে অনেক পুরোনো ভবন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনারা এখানে গণহত্যা চালিয়েছিল।
বধ্যভূমি এবং এখানে প্রতিষ্ঠিত গান্ধী আশ্রম পরিদর্শনের জন্য ২০১৬ সালে তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা কলসকাঠী সফর করেছিলেন।
নামকরণের বিষয়ে জানতে চাইলে এমপি নাসরিন জাহান ও রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, এখানে পাকিস্তানি আর্মি গুলি করে হিন্দুদের হত্যা করেছিল। জায়গাটি পরিদর্শনের জন্য ভারতের সাবেক হাইকমিশনার এসেছিলেন। তার স্মরণে ও বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নামে ফলকটি লাগানো হয়।
তার দাবি, শোক দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় উপজেলার কর্মকর্তারা আসতে পারেনি। ২ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মিত হলে তা বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর স্মৃতি হয়ে থাকবে।