বর্ষায় পর্যটন কেন্দ্র সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় একের পর এক ঢেউ আঁচড়ে পড়ছে। একই সাথে আকাশের কালো মেঘ জানান দিচ্ছে বর্ষার ধ্বনি। এমন রুদ্র মূর্তি দেখে অনেকেই ভয়ে সমুদ্রে নামছে না,
আবার কেউ ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে সমুদ্রে গোসলসহ আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছে। এ যেনো প্রকৃতি আর পর্যটকের নীরব সেতু বন্ধন। এসব পর্যটকদের কাছে বর্ষায় সমুদ্র বিলাস আলাদা অনুভূতি। তবে এমন দৃশ্য স্মরণীয় করে রাখতে অনেকেই ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুলছেন।
সমুদ্র সৈকত ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচ-সাত বছর আগে বর্ষায় কুয়াকাটা পর্যটকের পদচারণা ছিল না, চোখে পড়ত না জেলে ছাড়া কাউকে।
আবাসিক হোটেল ব্যবসা পর্যন্ত অনেকের বন্ধ থাকত, কিন্তু চিত্র এখন পাল্টে গেছে। আগত পর্যটকরা শুটকি পল্লী, গঙ্গামতির লেক, রাখাইন পল্লী, ঝাউ বন, লেম্বুর বন, লাল কাঁকড়ার চর, তিন নদীর মোহনা, কুয়াকাটার কুয়া, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহারসহ অধিকাংশ পর্যটন স্পট এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই শুধু সপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার নয়, এখন অন্যান্য দিনেও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কুয়াকাটা পর্যটকদের আগমন বেড়ে গেছে আগের চেয়ে অনেক বেশি।
এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটক মো: মোমেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে কুয়াকাটায় এসেছি।
আমাদের মতো করে বহু পর্যটক এখানে বেড়াতে এসেছে। বর্ষা মৌসুমে সাগরের ঢেউ আর স্নিগ্ধ প্রকৃতি দেখার জন্যই এখানে মানুষ ছুটে এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ঢাকা এবং কুয়াকাটার সড়ক সংযোগ এখন অতি সহজ হয়ে গেছে।
আগত পর্যটক বিকাশ লিমিটেড এর বরিশাল রিজিওনের Rsm আবু হেনা কিবরিয়া জানান, অসম্ভব সৌন্দর্যে ঘেরা কুয়াকাটা কখনো বর্ষা মৌসুমে আসা হয়নি। এবার বর্ষায় এলাম। উথালপাতাল ঢেউ আর বৃষ্টি ভেজা এখানকার প্রকৃতি খুবই ভালো লেগেছে। এখানকার স্থানীয় মানুষ খুবই আন্তরিক।
অপর দুই পর্যটক দাইয়ান ও বারতা মনি জানায়, বর্ষায় কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বেড়ানোর মজাই আলাদা। কিছুটা নিরিবিলি পরিবেশ এবং সন্ধার পরে টুনা ফিস স্কুইট লবস্টার ও কাকরা সহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের সমাহার নিয়ে বসেন ভ্রাম্যমান দোকানিরা যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। আর পছন্দমত কেউ ফ্রাই আবার কেউ বারবিকিউ নিয়ে বসে পড়েন খোলামেলা টেবিলগুলোতে।
কেউ বন্ধুবান্ধব আবার কেউ পারিবার পরিজন নিয়ে আনন্দময় মুহূর্তগুলো উপভোগ করেন।
অপর এক পর্যটক মোসা: মৌসুমি জানান সবকিছুই ভালো ছিল, তবে বর্ষায় পাখি মারা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রাস্তার খুবই বেহাল অবস্থা হয়ে পড়েছে। যদি এই রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা হতো তাহলে পর্যটকেরা স্বাচ্ছন্দ ও ক্লান্তিবিহীনভাবে আসা-যাওয়া করতে পরতো।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পরিদর্শক হাসনাই পারভেজ জানান, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষনিক সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। উত্তাল সমুদ্রে গোসল, সাঁতার কাটতে গিয়ে যেন কোন দুর্ঘটনায় না পরে সেদিকেও খেয়াল রাখছেন তারা। পাশাপাশি দুর্ঘটনা রোধে স্পিড বোট ও ওয়াটার বাইক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া মাইকিং করে বারবার সচেতন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত