রাজনীতি

সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে ফেলায় ব্যবসায়ীর গলায় জুতার মালা পরানোর অভিযোগে মামলা

barishal 20230827225110
print news

বরিশালে ব্যক্তিগত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিদায়ী মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে ফেলায় মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ীকে আটকে মারধর এবং গলায় জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে।

জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দারের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হেনস্তার শিকার মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু চরামদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সোনার বাংলা মটরসের স্বত্বাধিকারী।

এদিকে ব্যবসায়ীর গলায় জুতার মালা পরানোর দুটি ভিডিও ইতোমধ্যে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভিডিও এক মিনিট দুই সেকেন্ডের, অপরটি ১৭ সেকেন্ডের।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে বলতে শোনা গেছে, সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়ে রাখায় শাস্তিস্বরূপ গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। একটি ভিডিওতে ওই ব্যবসায়ীকে বাধ্য করা হয়েছে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি দোকান থেকে নামিয়ে রাখা অন্যায় হয়েছে বলতে। অপরটিতে শোনা গেছে, ছবি নামানোর শাস্তিস্বরূপ শিক্ষা দেওয়ার কথা।

মারধরের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু বলেন, বরিশালের ১১নং ওয়ার্ড বান্দ রোডে সোনার বাংলা মটরস নামে আমার একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। মূলত আমার পূর্ব পরিচিত নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দারের নেতৃত্বে আমাকে নির্যাতন করা হয়। ২২ আগস্ট মোবাইলে আমাকে ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুর রহমান ছাবিদের ক্লাব হিসেবে পরিচিত শহীদ রহিম স্মৃতি পাঠাগার ক্লাবের পশ্চিম পাশের কক্ষে ডেকে নেন। বিকেল ৩টার দিকে সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রুম আটকে ওখানে থাকা সাব্বির, আব্দুল, কাওছার, সোহাগ মারধর শুরু করে। এর মধ্যে একজন বিএনপির সমর্থক ও বাকি চারজন সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী। আমাকে রুমের মধ্যে আটকে ৮/৯ দফায় মারধর করে। মারধর করে তারা আমাকে বলতে বলে যে আমার ব্যক্তিগত অফিস থেকে মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি। ওরা যতবার এই কথা বলতে বলেছে, ততবার আমি বলেছি যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে আমি নামাইনি। শেষে মারধরের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পরে বাধ্য হয়ে ওদের শেখানো কথা বলি যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি নামিয়েছি এবং তা অন্যায় হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী। আমাকে হেনস্তা করার জন্য কাওছার জুতার মালা বানিয়ে দেয় আর সোহাগ আমার গলায় পরিয়ে দেয়। আমি দুই-তিনবার ফেলে দিই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে আরও মারধর করে। শেষে আমি জ্ঞান হারালে গলায় জুতার মালা পরিয়ে চেয়ারে বসিয়ে ভিডিও করে।

মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু বলেন, এর আগে মঈন জমাদ্দার কয়েক দফায় হুমকি দিয়েছে, আমি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর পক্ষে কাজ করলে বরিশালে থাকতে দেবে না। সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশালে ফিরলে আমাকে মারধর করবে। আমার কক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ছবি আছে। যেহেতু আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি এবং আমার অফিস সোনার বাংলা মটরসে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ আসেন। এই ইস্যু কাজে লাগিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে যে সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি আমার অফিস থেকে নামিয়ে রেখেছি। এই অভিযোগ তুলে আমাকে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, মনিরুজ্জামান খান বাচ্চুর যে ভিডিও ছড়িয়েছে তা আমি ধারণ করেছি ও ছড়িয়েছি এটা সত্য। কিন্তু জুতার মালা পরানোর যে ভিডিও তার আগের ভিডিওর সঙ্গে সম্পৃক্ত না। তাছাড়া ওখানে সাদিক আব্দুল্লাহর নাম বলাটাও আমার উচিত হয়নি। এটা আমি ভুল করেছি। এজন্য সাদিক ভাইও (সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ) আমার ওপর খুব ক্ষিপ্ত হয়েছেন।

এদিকে, মারধর ও জুতার মালা পরানোর অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছেন মনিরুজ্জামান খান বাচ্চু। মামলায় নাজমুল হাসান ওরফে মঈন জমাদ্দার ও মো. সোহাগের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

রোববার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় মুঠোফোনে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই আরাফাত হাসান। তিনি বলেন, মামলা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *