হাসপালে পানি না থাকায় রোগীসহ স্বজনরা ভোগান্তিতে


ইবরাহীম সোহেল,বরগুনা : বরগুনার আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের বৈদ্যুতিক মটারটি নষ্ট হয়ে যাওায়ায় ৫দিন পর্যন্ত পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের সাথে আসা স্বজন এবং আবাসিক ভবনে বসবাসরত ডাক্তার, নার্স পরেছে চরম ভোগান্তিতে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহের জন্য ১ বছর আগে একটি নতুন বৈদ্যুতিক মটার বসানো হয়েছে। মটারটি ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে আকস্মিক ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অদ্য ২৭ আগস্ট রবিবার পর্যন্ত হাসপাতাল এবং আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
হাসপাতালে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগীসহ নানা সমস্যা নিয়ে একাধিক রোগী ভর্তি থাকলেও পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় রোগী এবং তাদের সাথে আসা স্বজনরা পড়েছে ভোগান্তিতে। পানির অভাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়রা রোগীদের গোসল করা এবং শৌচাগার সারা দুরহ হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে শৌচাগারে ময়লার পাহার জমে দূর্গন্ধে এখন আর কেউ তার ধারে কাছেও যেতে পারছেন না। রোগী ও তাদের সাথে আসা স্বজনরা আশপাশের স্বজনদের বাসাবাড়িতে গিয়ে গোসল এবং শৌচাগার করে থাকেন।
২৭ আগস্ট (রবিবার) সরেজমিন হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, রোগী এবং স্বজনরা বালতি এবং পানির বোতল ভরে বাহিরের গভীরনলকুপ থেকে পানি নিয়ে আসছেন। অনেক রোগী আবার বাহিরে গিয়ে গোসল ও শৌচাগারের কাজ সেরে আসছেন।
রোগীর সাথে আসা রাশেদা বেগম নামের এক স্বজন বলেন, গভীর নলকুপ থেকে পানি ভরে চার তলায় নিয়ে ওঠা খুব কষ্টকর। এভাবে আর পারা যায় না, আমরা অনেক ক্লান্ত হয়ে পরেছি।
ডেঙ্গু জরে আক্রান্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, ভাই ৫দিন ধরে গোসল করতে পারছি না, শৌচাগারে যেতে পারছি না। শহরের কোন এক দুর-সম্পর্কের আত্মীয়রে বাসায় গিয়ে গোসল এবং শৌচাগার কাজ সেরে আসি।
হাসপাতালের আবাসিক ভবনে চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বসবাসরত চাকুরিজীবিরা পরেছে মহাবিপদে। হাসপাতালের অভ্যান্তরে একটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে ৪টি আবাসিক ভবন। ওই সকল ভবনে বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মচারীরা পানির অভাবে ঠিকমত গোসলসহ সাংসারিক কাজকর্ম করতে পারছে না।
আমতলী উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পানি সরবরাহের জন্য ২০২২ সালের প্রথম দিকে ৮-৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি বৈদ্যুতিক মটার বসানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, ঠিকাদার স্বাস্থ্য প্রকৌশলীর যোগসাজসে কম মূল্যের এবং নিম্ম মানের একটি বৈদ্যুতিক মটার বসানোর কারনে ১ বছরের মাথায় সেটি নষ্ট হয়ে গেছে যার ফলে এতটা ভোগান্তিতে পরেছেন সবাই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পটুয়াখালীর উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেবব্রত হালদার বলেন, কি কারনে মটারটি নষ্ট হয়েছে তা জানি না তবে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে নিম্নমানের মটার বসানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, ভালো মানের মটার বসানো হয়েছিল।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনায়েম সাদ বলেন, পানি সমস্যা সমাধানের জন্য সিভিল সার্জন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। আশাকরি দু’একদিনের মধ্যে এর সমাধান হয়ে যাবে।