একসঙ্গে রাত কাটানোর কু প্রস্তাবের অডিও-ভিডিও কল ফাসেঁর ঘটনায় তোলপাড়


ঝালকাঠি সংবাদদাতা :
ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের বিষয়ে
কারা মহাপরিদর্শক ও জেলা প্রসাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ এবং অডিও -ভিডিও কলের রেকর্ডিং ফাঁসের সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।গত ৩১ আগষ্ট থেকে ধরাবাহিকভাবে অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। সংবাদ প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
কারাবন্দি নলছিটির মামুন অর রশিদের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার জেলার আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কারা মহাপরিদর্শক ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ৩০ আগষ্ট।
আবেদন ও অডিও থেকে জানা গেছে,ওই নারীর স্বামী ২৯ জুলাই থেকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে হাজতে আছেন। স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার জেল গেটে গেলেও স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে না পেরে জেলের এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের নম্বরে ফোন করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে জেলার বন্দি স্বামীর সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়ে ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর নেন। পরবর্তীতে জেলার তার ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ওই নারীকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন। এরপর স্বামীর সঙ্গে দেখা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ওই নারীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে একসঙ্গে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন জেলার। এতে ওই নারী রাজি না হওয়ায় তাকে আর তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং তার স্বামীকে জেলে শাস্তি দিবে বলে ভয়ভীতি দেখান জেলার।
ওই নারী বলেন, আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি জেলার আক্তার হোসেন। আমি আমার দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে জেলগেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনের পর দিন গিয়েছি। কিন্তু দেখা পাইনি। জেলারের কুপ্রস্তাবের সব রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি বুধবার আবার জেলগেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে কারারক্ষী দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাকে টাকা দিতে না পারায় আমাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন…..
হাজতির স্ত্রীকে কু-প্রস্তাব দিলেন ঝালকাঠি কারাগারের জেলার আক্তার হোসেন
অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ বলেন, অভিযোগটি সত্য না। এটা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ও বানোয়াট। অডিও রেকর্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন এডিটিং করেও অনেক কিছু করা যায়।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এনডিসি মং এছেন বলেন, নারীকে তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ায় জেলারের বিরুদ্ধে কারা অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক বরাবর ওই নারী অভিযোগ পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে সুমাইয়া আক্তারের মোবাইলে কল করা হলে তিনি বলেন,আমাকে কারা মহা পরিদর্শকের দপ্তর থেকে কল দিয়ে জানানো হয়েছে যে,জেলারের কু প্রস্তাবের ঘটনায় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।এ ছাড়া একটি গ্রুপের মাধ্যমে এক লাখ টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব দিয়েছে জেলার আক্তার সাহেবের পক্ষে। আমি আপোষ মিমাংসার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বিচার চেয়েছি।
ঝালকাঠি কারাগার: কু-প্রস্তাবের দাম দশ লাখ টাকা! জেলার বহাল তবিয়তে – ইত্তেহাদ
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৩[…] […]