বাকেরগঞ্জে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষকসহ দুজনার বিরুদ্ধে থানায় মামলা


বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি :
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দুধল ইউনিয়নের গোমা গ্রামের কালাম হাওলাদারে পুত্র মো: জাবের (১৬) সুন্দরকাঠী জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় প্রধান শিক্ষকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে বাকেরগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
১ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) নিহত শিক্ষার্থী জাবেরের মা রিনা বেগম বাদি হয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ আহসান হাবিব মোল্লা ও মনোয়ার হোসেন মন্টু দুই জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। যাহার মামলা নং – ১।
সরেজমিনে ও থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট দুধল ইউনিয়নের সুন্দরকাঠী জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী জাবের সহ শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মিলে তাদের বিদ্যালয়ে দুপুরে বিদ্যালয়ের মাঠে পিকনিকের আয়োজন করে। ঐ রাতে ১০.৩০ মিনিটে নিহত জাবের সহ তার কয়েকজন বন্ধুরা বিদ্যালয়ে সাউন্ড বক্সে গান বাজায়। এ সময় প্রধান শিক্ষক হাবিব মোল্লা ও মনোয়ার হোসেন মন্টু হাতে লাঠি নিয়ে গান-বাজনা বিরক্তি হয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। জাবের পালাতে গিয়ে বিদ্যালয় এর মাঠে দক্ষিণ পাশে পড়ে গেলে প্রধান শিক্ষক ও তার সাথে থাকা মনোয়ার হোসেন মন্টু জাবেরের বুকের উপর দাঁড়িয়ে লাঠি দ্বারা শরীরের বিভিন্ন স্থান আঘাত করে। ঘটনাস্থলে জাবের অজ্ঞান হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বিদ্যালয় এর পাশের বাড়ি রনি গাজীর ঘরে নিয়ে রাতে ঘুম পাড়িয়ে রাখে। পরের দিন সকাল ১০ টায় জাবের বাড়িতে ফিরে তার মা রিনা বেগমের কাছে রাতের ঘটনা খুলে বলেন।
এ বিষয়ে নিহত ছাত্রের মা রিনা বেগম জানান, স্থানীয় ফার্মেসী থেকে প্রথমে ওর জন্য ঔষধ এনে কয়েকদিন খাওয়াই। তারপর আমার ছেলের সুস্থ না হওয়ায় ওকে চিকিৎসার জন্য ২০ আগস্ট বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরে জাবের বাড়ি ফিরতে চাইলে তার অনুরোধে গত ২৭ আগস্ট তাকে বাড়িতে নিয়ে আসি।
ঐ দিন রাত ৮.৩০ মিনিটে জাবের বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এই খবর শুনে প্রধান শিক্ষক মোঃ আহসান হাবিব মোল্লা নিজে ফোন করে একটি অ্যাম্বুলেন্স আমাদের বাড়িতে পাঠায়। ঐ সময় জাবেরকে আবার চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে আমার ছেলে মারা যায়। আমার ছেলের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসলে ২৮ আগস্ট সকালে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ খবর পেয়ে এসে লাশ থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে লাশ আমাদের কাছে দিয়ে দেয়। ছেলে হারানোর শোকে অসুস্থ হয়ে পড়ি একটু সুস্থ হয়ে আজ বাকেরগঞ্জ থানায় প্রধান শিক্ষকসহ দুইজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। জাবেরের মা দু চোখের পানি ছেড়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে সঠিক বিচারের দাবি জানায়।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, নিহত শিক্ষার্থী ঘটনায় প্রধান শিক্ষক সহ দুজনে বিরুদ্ধে থানা একটি মামলা এজাহার হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।