চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে ১৫ শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় পরিবহন দপ্তর, নিরাপত্তা দপ্তর এবং চবি ক্লাব ও অতিথি ভবনে হামলা ভাঙচুর করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন সাড়ে ৯টার দিকে হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় এলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে টায়ার-চেয়ার জ্বালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ মানুষের মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, শাটল ট্রেনে যে ঘটনা ঘটেছিল, এর মাধ্যমে যৌক্তিকভাবে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীদের শাটল ট্রেনের সমস্যাগুলোর একটা সমাধান করা যেত। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারীর কারণে একদিকে যেমন এই সমস্যাগুলোর সমাধান কঠিন হয়ে গেছে, অন্যদিকে আমাদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন দপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন বলেন, প্রায় ৩০ কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৬০ এর অধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম যেন স্বাভাবিকভাবে চলে আমরা সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ১১ টার দিকে হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির দরজা, জানাল, গ্লাস ভেঙে চুরমার করে, সেখানকার চেয়ারগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর একদল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে এবং আরেক দল উপাচার্যের তিনতলা বাসভবনের বিভিন্ন কক্ষে তাণ্ডব চালায়।
এরপর রাত ১২টার দিকে হামলাকারীরা উপাচার্যের বাসভবন থেকে পরিবহন দপ্তরে এসে পরিবহন দপ্তরে থাকা ২টি এসি বাসসহ ৩০টি বড় বাস, ১৮টি প্রাইভেটকার, ২টি পিকআপ, ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি পুলিশের গাড়িসহ প্রায় পঞ্চাশের অধিক গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
রাত সাড়ে ১টার দিকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা চবি ক্লাব ও অতিথি ভবনেও তাণ্ডব চালানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন বলেন, আমরা চবি ক্লাবে অবস্থানকালে হঠাৎ করে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমরা পুরো প্রক্টরিয়াল বডি কোনোরকম প্রাণে বেঁচে যাই। এরপরও তারা আমাদের আবদ্ধ করে রাখে অনেক সময়। এটা এটেম্প্ট টু মার্ডার। আমরা এর বিচার চাই।
আরেক সহকারী প্রক্টর ড. মো. মোরশেদুল আলম বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত তাণ্ডবলীলা। আমাদেরকেও পর্যন্ত তারা হামলা করেছে। তারা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়টাকে অচল করে দিয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এসব হামলাকারী ও তাণ্ডব চালানো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম সিকদার বলেন, শাটল ট্রেনের ছাদে থাকা প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী গাছের বাড়ি খেয়ে আহত হয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে যারা ক্যাম্পাসের এই তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত তারা কোনোভাবেই পার পারে না।
রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। এ সময় তিনি বলেন, এমন ধ্বংসযজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর কখনোই দেখেনি। যারা এর সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।
হাটহাজারী সার্কেল থানাটর তদন্ত অফিসার মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মামলা করে, আমরা ব্যবস্থা নেব।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত