বরিশাল বাংলাদেশ

৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ইলিশা লঞ্চ ও ফেরিঘাট মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধে ধস

22 2309101511
print news

উত্তাল মেঘনা নদী আবার ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। উজানের তীব্র স্রোতের আঘাতে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা এলাকায় মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণের দুটি স্পটে হঠাৎ করে গত কয়েকদিনে ধরে ৭০ মিটার সিসি ব্লক ধসে গেছে। ফলে ইলিশা এলাকায় অবস্থিত তিনটি লঞ্চঘাট ও দুইটি ফেরিঘাটও হুমকির মুখে পড়েছে। এতে করে ওই এলাকার মানুষের মাঝে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এই পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি ভিত্তিতে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্লকের ধস ঠেকাতে ডাম্পিং শুরু করেছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান রবিবার জানিয়েছেন, শনিবার পর্যন্ত ৩ হাজার ২শত ব্যাগ বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে।

পাউবো সূত্র জানান, ইলিশা এলাকায় মেঘনা নদী ভাঙন রোধে নদীর তীর সংরক্ষণে ৪ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লক স্থাপন ও সাড়ে তিন কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয়। ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২১ সালে। তারপর মানুষের মধ্যে স্বস্তি আসে। অনেকেই এলাকায় জমি কিনে ঘরবাড়ি করে। অনেকে পাকা স্থাপনা করে। কিন্তু পাউবোর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প শেষ হওয়ার দুই বছরের মাথায় হঠাৎ ব্লক ধসে গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটের দক্ষিণে তালতলি লঞ্চঘাটের কাছে ইলিশা-রাজাপুর রক্ষা প্রকল্পে ব্লকবাঁধের দুটি স্থানের ৭০ মিটার ব্লক ধসে দেবে গেছে। ব্লক ধসের স্থান থেকে বেড়িবাঁধের দূরত্ব মাত্র ১৫ ফিট হওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে ইলিশা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের। স্থানীয়রা জানান, মেঘনা নদীর মাঝে চর থাকায় পানির স্রোত তীরে এসে চাপ সৃষ্টি করে। যা বর্ষার শেষ সময়ে ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়ায় এ বছরও নদীর ভয়ঙ্কর রূপের কারণে ৮৫-৯০ ফুট গভীর হয়ে বাঁধ ধসে যাচ্ছে। এদিকে ধস রোধে পাউবোর ঠিকাদারের শ্রমিকরা একটি বার্জ থেকে জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করে ব্লক ধসের স্থানে ফেলছে।

ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটনসহ স্থানীয়রা জানান, ৭-৮ বছর আগে ভোলার ইলিশা রাজাপুর এলাকায় প্রায় ৪ কিলোমিটার শত শত বসতবাড়ি, স্থপনা, বহুপ্রতিষ্ঠান, মাছঘাট, ফেরিঘাট, কৃষিজমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। তখন ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে ৩৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ ব্লক বাঁধ ও সাড়ে ৩ কিলোমিটার নদী সংরক্ষণ সিসি ব্লক বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। ২০২১ সালে এ নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরপর রক্ষা হয় ভোলার ইলিশা অঞ্চল। কিন্তু হঠাৎ করে নদীর তীব্র পানির স্রোতে গত সপ্তাহে ব্লক ধসে যায়। ব্লক ধসের স্থান থেকে বেড়িবাঁধের দূরত্ব প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট।

তাৎক্ষণিক এই ধস ঠেকাতে না পারলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, ইলিশায় ব্লক ধসে যাওয়ার পর জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলছে। এ কাজ শেষ হতে আরও ৫-৭ দিন লাগতে পারে। প্রাথমিকভাবে তারা ১২ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করবে। প্রয়োজনে এই সংখ্যা পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়া শুকনো মৌসুমে সিসি ব্লক দিয়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাব।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *