মামুনুর রশীদ নোমানী :
ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ও জেলা প্রসাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পাওয়া । কারা অধিদপ্তরের নির্দেশে স্ট্যান্ড রিলিজ করার নির্দেশ প্রদান করেন।
বুধবার ১৩ সেম্টেম্বর বেলা সাড়ে চারটায় ঝালকাঠি কারাগারের ডেপুটি জেলার মোঃ মিজানুর রহমান তার স্ট্যান্ড রিলিজের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
ঝালকাঠি জেলা কারাগারের জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের বিষয়ে অডিও -ভিডিও কলের রেকর্ডিং ফাঁসের সংবাদ প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃস্টি হয়।কারা অধিদপ্তর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দশ লাখ টাকার বিনিময়ে অভিযোগকারী সুমাইয়া আক্তারের সাথে সমঝোতাও করেন। তবে তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরে রিপোর্ট দাখিল করার পরে ১২ সেপ্টেম্বর জেলার আক্তার হোসেন শেখকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে ডিআইজি প্রিজন বরিশাল বিভাগীয় অফিসে সংযুক্তির আদেশ দেয়া হয়। দুপুরের পরেই চুপিসারে ঝালকাঠি ছাড়েন জেলার আক্তার হোসেন শেখ। ১৩ সেপ্টম্বর ডিআইজি প্রিজন বরিশাল বিভাগীয় অফিসে যোগদান করেন ।
কারাবন্দি নলছিটির মামুন অর রশিদের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার জেলার আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কারা মহাপরিদর্শক ও ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ৩০ আগষ্ট।
গত ৩১ আগষ্ট থেকে ধরাবাহিকভাবে অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকাগুলোতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়
আবেদন ও অডিও থেকে জানা গেছে,ওই নারীর স্বামী ২৯ জুলাই থেকে ঝালকাঠি জেলা কারাগারে হাজতে আছেন। স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য বারবার জেল গেটে গেলেও স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে না পেরে জেলের এক কর্মচারীর পরামর্শে জেলার আক্তার হোসেন শেখের নম্বরে ফোন করে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি জানান। পরবর্তীতে জেলার বন্দি স্বামীর সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দিয়ে ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর নেন। পরবর্তীতে জেলার তার ব্যক্তিগত নম্বর থেকে ওই নারীকে নিয়মিত ফোন করে কথা বলতে থাকেন। এরপর স্বামীর সঙ্গে দেখা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ওই নারীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ভিডিও কল দিয়ে অশালীন কথাবার্তা বলেন এবং অনৈতিক প্রস্তাব দেন। একপর্যায়ে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে একসঙ্গে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন জেলার। এতে ওই নারী রাজি না হওয়ায় তাকে আর তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি এবং তার স্বামীকে জেলে শাস্তি দিবে বলে ভয়ভীতি দেখান জেলার।
ওই নারী বলেন, আমি তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেননি জেলার আক্তার হোসেন। আমি আমার দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে জেলগেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনের পর দিন গিয়েছি। কিন্তু দেখা পাইনি। জেলারের কুপ্রস্তাবের সব রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি বুধবার আবার জেলগেটে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে কারারক্ষী দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। তাকে টাকা দিতে না পারায় আমাকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
এবাপারে মানবাধিকার কর্মী নীলা জানান,নৈতিকস্থলন জনিত কারনে অবিলম্ভে ঝালকাঠী কারাগারের জেলারের বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তি দেয়া হোক। যারা এমন কথা বলে তারা জেলার পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছে। তার মুখের ভাষাই বলে দেয় তিনি একজন অসামাজিক ও লুচ্চা শ্রেনী মানুষ।
এ বাপারে ঝালকাঠীর সুশীল সমাজ,রাজনীতিবীদ ও সাংবাদিকরা জানিয়েছেন ,কারাগারের জেলার একজন দুর্নীতিবাজ তিনি টাকা টাকা ও সারাদিন নারীদের সাথে কল করে কথা বলে সারাদিন ব্যস্ত থাকে।তারা দ্রুত জেলারকে বরখাস্তের দাবী জানান।
উল্লেখ্য,ঝালকাঠী কারাগারে জেলার হিসেবে মোঃ আক্তার হোসেন শেখ ২০২২ সালের ১২ জুন যোগদান করেন।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত