বরিশাল বাংলাদেশ

বরগুনায় এক দশকেও সংস্কার হয়নি সড়ক, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

20230914 171129 scaled
print news

ইবরাহীম সোহেল, বরগুনা:
সংস্কারের অভাবে বরগুনা সদর উপজেলার ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়নের সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কটির ৯ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পথচারী ও গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।

বরগুনা সদর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী
(এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ছোটপোটকাখালী খেয়াঘাট বাজার থেকে নলী পর্যন্ত সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার। ছোট পোটকাখালী থেকে লেমুয়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছে ২০২২ সালে

20230914 171123

তবে লেমুয়া থেকে নলী বাজার পর্যন্ত সড়কটির প্রায় ৯ কিলোমিটার দশ-বার বছরেও হয়নি কোন সংস্কারের কাজ।

এলাকার ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার-পাচঁ বছর আগে থেকেই এই সড়কে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বরগুনা সদর উপজেলার ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। সর্বশেষ দশ থেকে বার বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়। এরপর মেরামত না করায় সড়কের অনেক স্থানে বিটুমিন ও ইট-পাথর উঠে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৭নং ঢলুয়া ইউনিয়নের সড়কের লেমুয়া থেকে নলী বাজার পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের অসংখ্য স্থানে কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া ও পাথর বেরিয়ে পড়েছে। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ভ্যান ও ইঞ্জিনচালিত বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে।

এ সময় অটোরিকশা চালক মিলন মিয়া বলেন, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এ রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে সুস্থ-সবল মানুষ অসুস্থ হয়ে পরে। অনেক সময় রিকশায় করে এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে তাঁদের অবস্থা আরও কাহিল হয়ে পড়ে। যেখানে নলী থেকে বরগুনা যেতে ৩০-৪০ মিনিট লাগতে সেখানে এখন এক থেকে দের ঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায়।

20230914 170751

এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, আমাদের জরুরী চিকিৎসার জন্য যেতে হলে এই সড়কটি দিয়েই যেতে হয়। তবে কোন গর্ভবতী রোগী নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে গেলে, রাস্তাই বাচ্চা প্রসব হয়ে যাবে। তাই উপর মহলের কাছে দাবী যাতে আমাদের ভোগান্তি দুর করার জন্য এই রাস্তাটি সংস্কার করে দেয়।

মটর সাইকেল চালক (রেন্টে-এ-কার) জাফর হোসেন বলেন, ভাঙাচোরা রাস্তায় মটর সাইকেল চালাতে গিয়ে প্রায়ই গাড়ির চাকা লিক (ছিদ্র) হয় এবং গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে সারা দিন গাড়ি চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামত করতেই শেষ হয়ে যায়।

৭নং ঢলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক স্বপন বলেন, ঢলুয়া ইউনিয়নের একমাত্র সড়কটি সংস্কারের অভাবে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় কাদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কটির কারণে এলাকাবাসী চরম বিপদে রয়েছে। কোন মানুষ অসুস্থ হলে তাদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে নিয়ে যেতে পারে না। কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যেতে বা জরুরি প্রয়োজনে বরগুনা যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। জনস্বার্থে সড়কটি সংস্কার করা দরকার।

সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে এলজিইডি উপ সহকারি প্রকৌশলী সনজীব কুমার তালুকদার বলেন, লেমুয়া থেকে সড়কটির ৩ কিলোমিটার সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।পরবর্তীতে বাকি সড়ক সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এই অর্থবছরেই সড়কটি সংস্কারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *