ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন সামনের সড়কে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বেঁচে যাওয়া হোসাইনের ঠাঁই হয়েছে ফুফুর কোলে। তবুও অশ্রুসিক্ত এক জোড়া নিষ্পাপ চোখ খুঁজে ফিরছে আপন ঠিকানা মায়ের কোল। কিন্তু সাত মাসের হোসাইন জানে না তার মা নেই। আর কখনও ফিরে আসবে না। নেই বাবা ও বোনও। প্রতিবেশী সবাই হোসাইনকে কোলে নিচ্ছে যেন একটু হলেও শান্ত হয়। কারো কাছেই তার চেনা কোল মিলছে না।
মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তির প্রতিবেশীদের কোল ছেড়ে হোসাইন চলে গেছে ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরপাশা গ্রামে। তার পেছনের গাড়িতে ছিল সাদা কাপড়ে মোড়ানো বাবা-মা আর বোনের নিথর দেহ। সারারাত দাদা-নানার কোল বদল করতে করতে পথ শেষ করে গন্তব্যে পৌঁছে গেছে। আর সেখানে গিয়ে ফুফু নাসরিনের কোলে উঠেছে। এই ফুপুর কোলই এখন হোসাইনের ঠিকানা। সে এখানেই নিরাপদে বেড়ে উঠবে বলে পরিবারের সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হোসাইনের বর্তমান অবস্থা ও আগামীর ঠিকানা, তার লালন-পালনের দায়িত্ব নিয়ে এভাবে বর্ণনা দিলেন ঝিলপাড় বস্তির বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, মিরপুর থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হোসাইনকে নিয়ে তার স্বজনরা বের হন। মাঝরাতে ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরপাশা গ্রামে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে অ্যাম্বুন্সে ছিল হোসাইনের মা-বাবা ও সাত বছরের বোন লিমার মরদেহ। নিহতদের দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। আশপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ জড়ো হয় মিজানের বাড়ি। সবাই মিলে নিহতদের দাফননে সহায়তা করেন।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, গাড়ি থেকে নেমেই হোসাইনকে তার দাদি নিরু বেগমের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয়। শনিবার দাদা-নানা ও ঢাকা থেকে যাওয়া প্রতিবেশিদের উপস্থিতে হোসাইনকে তার ফুফুর কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার রাতে অতিবৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যায়। মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের। প্রাণে বেঁচে ফিরেছে মৃত মিজান-মুক্তা দম্পতির সাত মাসের ছেলে হোসাইন।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত