চট্টগ্রাম বাংলাদেশ

পেকুয়ায় সিসি টিভি ফুটেজ দেখেও শনাক্ত হচ্ছেনা চোর

Untitled 2
print news

পেকুয়া প্রতিনিধি :

পেকুয়ায় গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া গ্রামে লোহার গেইট ভেঙে পার্কিং এরিয়া থেকে এনজিও কর্মকর্তা আবিদুর রহমানের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যায় মুখোশ পরিহিত একজন চোর। পুরো ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। চুরির বিষয়টি জানতে পেরে পরদিন সকালে পেকুয়া থানায় যান ভুক্তভোগী আবিদুর রহমান। কিন্তু চুরির স্পষ্ট প্রমাণ থাকা স্বত্তেও মামলা নেয়নি পুলিশ। বরং লিখিত একটি অভিযোগ দাখিল করিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন। এর মাঝে সময় পেরিয়ে গেছে একমাস। কিন্তু চুরি হওয়া বাইক কিংবা চোরের কোন হদিস নেই।
পুলিশ আছে উদাসীন ভূমিকায়।  এ নিয়ে গত ২ মাসে পেকুয়া সদরে চুরি হয়েছে অন্তত ২০টি বাসাবাড়ি। যার অধিকাংশ চুরি হয়েছে মোটরসাইকেল। তবে দুঃখের বিষয় হলো একজন চোরকেও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই কায়দায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা কোয়ার্টার থেকে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারি মোটরসাইকেল চুরি হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে পেকুয়া শেখের কিল্লা ঘোনা এলাকার মাহমুদ নুরের ভাড়া বাসা থেকে পল্লী বিদ্যুতে কর্মরত আমান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তির ১২৫ সিসি একটি ডিসকাভার মোটরসাইকেল চুরি হয়। ২২ সেপ্টেম্বর পেকুয়া গোঁয়াখালী এলাকার প্রবাসী মোহাম্মদ হিজবুল্লার বাড়ি থেকে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর পেকুয়া ইসলামী ব্যাংকের পাশে একটি এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ ২ লক্ষ ৭০হাজার টাকা চুরি হয়। ৩১ আগস্ট রাতে পেকুয়া উপজেলা সদরের চৌমুহনী স্টেশনের উত্তর পাশে ঘরের জানালা ভেঙে ব্যাংক কর্মকর্তা এরশাদের দুটি মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটে। তার আগে ৩০ আগস্ট ডিসি রোড় সংলগ্ন প্রবাসী নুর মোহাম্মদের বাড়ির মূল্যবান মালপত্র চুরি হয়। ২৩ আগস্ট পেকুয়া সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লা ঘোনা কেজি স্কুলের পাশে মাওলানা শহিদুল হকের বাড়ি থেকে ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ২৪ জুলাই সদর শেখের কিল্লা ঘোনা এলাকার শফি আলমের বাড়ি থেকে ডিসকাভার ১০০ সিসির একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। ৭ জুন ডিসি রোড় এলাকায় জাহেদুল হকের বাড়ি থেকে এনজিও কর্মী মিহির চামকার একটি মটর বাইক চুরি হয়। তার আগে পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়ার ভাড়া বাসা থেকে চুরি হয় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিনের সদ্য কেনা মোটরসাইকেল।

পুলিশ সূত্র জানা গেছে, চুরির ঘটনায় গত আগস্ট মাসে পেকুয়া থানায় কোন মামলা রুজু হয়নি। সেপ্টেম্বর মাসে চুরির তিনটি মামলা রুজু হয়েছে। এর মধ্যে একটি উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার সরকারী মোটরসাইকেল চুরি, একটি গরু চুরি ও অপরটি বিকাশ দোকানের টাকা চুরির।

ভুক্তভোগী আমান উল্লাহ ও আবিদুর রহমান বলেন, সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ফুটেজসহ থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে তা নেয়নি পুলিশ। ডিউটি অফিসার এসআই অমর বিশ্বাস বলেছিলেন, মামলা হলে আসামি দিতে হবে। কিন্তু শনাক্ত না করে কাকে চোর বলে সাবস্ত করবো। চোর শনাক্ত করা, আইনের আওতায় আনা তো পুলিশের কাজ। পুলিশ আমাকে নয়ছয় বুঝিয়ে একটি হারানোর জিডি রুজু করে। কিন্তু আমার মোটরসাইকেল তো হারিয়ে যায়নি, চুরি হয়েছে। এরপরও পুলিশ যদি মোটরসাইকেল উদ্ধারে তৎপর হতো, তবে মনকে সান্তনা দিতে পারতাম। চোর চিহ্নিত করতে বা চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারে পুলিশের কোন গরজ নেই। তাই এর আশা বাদ দিয়েছি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) অমর বিশ্বাস বলেন, কেউ অভিযোগ বা জিডি নিয়ে এলে তো আমরা জোর করে মামলা রুজু করতে পারি না। এটা সম্পূর্ণ ভিক্টিমের উপর নির্ভর করে। তারা যেভাবে লিখে আনে আমরা সেভাবে গ্রহন করি ৷

পেকুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্য বলেন, মামলা, জিডি বা অভিযোগ যা-ই করবে তা ভুক্তভোগীর এক্তিয়ার। এখানে পুলিশের পক্ষ থেকে কোন চাপ থাকার কথা নয়। হয়তো ভুক্তভোগীরা যেভাবে লিখে এনেছেন, দায়িত্বরত কর্মকর্তা সেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছেন। তারপরও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।

*গুরুত্বপূর্ণ  সব সংবাদ ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *