জামালপুর পৌরশহরের উত্তর কাচারিপাড়ার বাসিন্দা মার্জিয়া আক্তার। বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী, মা গৃহিণী। ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায়। পড়াশোনায় কয়েক বছর বিরতির পর ২০১৪ সালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) শেষ করেন।
সে সময়ই মার্জিয়ার ইচ্ছা হয় নিজে কিছু করার। ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু এগোয়নি সেই উদ্যোগ। ২০১৬ সালে মা হন মার্জিয়া। সদ্যজাত সন্তানকে রেখে চাকরি করাও সম্ভব হয়নি। তাই ঘরে বসেই কিছু করার চিন্তা করেন। তখন ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের কথা জানতে পারেন মার্জিয়া। এ কাজ ঘরে বসেই করা যায় বলে কাজের প্রতি বেশ আগ্রহ জাগে তার।
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ। সে বছরের এপ্রিলে ৫ ডলারের প্রথম কাজ পান মার্জিয়া। ৫ ডলারে শুরু করা মার্জিয়ার এখন মাসে আয় ১ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ টাকারও বেশি। চার বছরে মার্জিয়া আয় করেছেন প্রায় ৩৩ লাখ টাকা।
গ্রাফিক্স ডিজাইন দিয়ে কাজ শুরু করা মার্জিয়া পরে দক্ষ হয়ে ওঠেন জীবনবৃত্তান্ত (সিভি রাইটিং) লেখায়। এখন গ্রাফিক্সের কাজ বাদ দিয়ে জীবনবৃত্তান্ত লেখার কাজই করে যাচ্ছেন। গত আগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ফ্রিল্যান্সার সম্মেলনে ‘ময়মনসিংহ বিভাগের সেরা ফ্রিল্যান্সার’ পুরস্কার অর্জন করেছেন মার্জিয়া।
মার্জিয়া বলেন, ‘আমার সন্তান আর ঘর সামলে সময় কাটাতাম। ইন্টারনেটে দেখতাম ঘরে বসেই অনলাইনে আয় করা য়ায়। কিন্তু কীভাবে সেটা জানতাম না। ২০১৯ সালে গ্রাফিক্স ডিজাইনের একটি অনলাইন কোর্সে ভর্তি হই। তখনই শুরু হয় আমার এই ফ্রিল্যান্সিংয়ের পথচলা। শুরুতে কাজ পেতাম খুবই কম। বসে না থেকে দুই বছর পোর্টফোলিও সমৃদ্ধ করার কাজ চালিয়ে গেছি। যা পরবর্তী সময়ে আমাকে সাহায্য করেছে।’
তিনি আরও জানান, ‘আমার স্বামীর উৎসাহ ও সহযোগিতায় ২০২১ সালে শুরু হয় মূল পথচলা। গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে প্রথমে বিভিন্ন ছবি, কোম্পানির লোগো, ফ্লায়ার তৈরির কাজ করতাম। এরপর ধীরে ধীরে জীবনবৃত্তান্ত লেখার কাজ শুরু করি। জীবনবৃত্তান্ত লেখায় নিজের দক্ষতা বাড়াতে থাকি। এখন আমার বেশিরভাগ কাজই জীবনবৃত্তান্ত লেখার।’
এখন পর্যন্ত ৯০০-এর বেশি গ্রাহকের জীবনবৃত্তান্ত লেখার কাজ করেছেন। যার সবাই বিদেশি গ্রাহক। যারা ফ্রিল্যান্সিংয়ে আসতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশে মার্জিয়া বলেন, ‘নিজেকে যোগ্য করে তুলতে হবে। অল্পতেই হতাশ হওয়া যাবে না। ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার মতো করে নিজেকে তৈরি করতে হবে।’
মার্জিয়ার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘প্রথম থেকে আমাদের পুরো পরিবার মার্জিয়াকে সাপোর্ট দিয়ে গেছি। নিজের চেষ্টায় মার্জিয়া আজ এ পর্যন্ত এসেছে। তার সফলতায় সবাই খুশি।’
অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।
ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী ,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইমেইল: [email protected], web:www.etihad.news
এম এম রহমান, প্রধান সম্পাদক, ইত্তেহাদ নিউজ, এয়ার পোর্ট রোড, আবুধাবী, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত