অনুসন্ধানী সংবাদ

অন্ধ হাফেজ হাফেজ মাওলানা শামীম  ককটেল বিস্ফোরণ মামলার আসামি

77449 ondho
print news

হাফেজ মাওলানা শামীম আক্তার। অজানা এক রোগে ১৯৯০ সালে দৃষ্টিশক্তি হারান তিনি। এরপর থেকে চলাচল করতে নিতে হয় অন্যের সহযোগিতায়। আর সেই অন্ধ ব্যক্তিই চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় দায়েরকৃত একটি বিস্ফোরণ মামলার আসামি। মামলার এজাহারে মাওলানা শামীমের নাম ‘অন্ধ শামীম’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র মতে, গত ৫ই অক্টোবর সকালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানাধীন পদুয়া এলাকায় মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। এ ঘটনার জেরে ককটেল বিস্ফোরণসহ এলাকায় ভয়ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় মামলা করা হয়। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ ৮০-৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। সেই মামলায় অন্ধ মাওলানা শামীমকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়। মামলার বাদী লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পদুয়া ঘোনার পাড়া এলাকার আব্দুল করিমের পুত্র মো. মামুনুর রশীদ (২১)। তার দেয়া তথ্যমতে, গত ৫ই অক্টোবর পদুয়ার ঠাকুরদীঘি এলাকার ব্যাংক এশিয়ার সামনে উপজেলা জামায়াতের আমীর আসাদুল্লাহর নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়ে সাধারণ জনতাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, পথরোধ, জখম ও ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে।

মামলার ৩ নম্বর আসামি মাওলানা শামীম আধুনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মাওলানা ইসহাকের পুত্র। তার জন্ম ১৯৬৭ সালে। জন্মের পর থেকে তিনি চোখে কম দেখতেন। এরপর চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৯০ সালে কামিল পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে চিরতরে হারিয়ে ফেলেন চোখের দৃষ্টিশক্তি। মামলার বিষয়ে মাওলানা শামীম  বলেন, মামলার উল্লেখিত সময়ে আমি ঘরে ছিলাম। ককটেল বিস্ফোরণ করার তো প্রশ্নই আসে না। কারণ আমি চোখে দেখি না। যেখানে কারও সহযোগিতা ছাড়া হাঁটতে পারি না, সেখানে বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মিছিল করা, ককটেল ফাটানো এগুলো গায়েবি কথা। শামীমের ভাতিজা হেলাল বলেন, চাচাকে আমার জন্মের পর থেকে অন্ধ হিসেবে দেখছি। আমি বড় হওয়ার পর নিয়মিত চলাচলে সহযোগিতা করি। আর এই ব্যক্তি মিছিল করে ককটেল ফাটাবে, সেটা বিশ্বাসযোগ্য না। তার স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে বিয়ের পর থেকে অন্ধ হিসেবে পেয়েছি। উনার মতো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এই মামলা প্রত্যাহার চাই।

কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, মাওলানা শামীম অন্ধ মানুষ। যিনি অন্যজনের সাহায্য ছাড়া মসজিদে পর্যন্ত পারেন না। সেখানে পুলিশের এসব কথা অবান্তর। আসলে তারা বিরোধী দলের রাজনীতিকে দমিয়ে রাখতে গায়েবি মামলা করেন। আর এসব গায়েবি মামলায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হয়। এদিকে মামলার বিষয়ে জানতে বাদী মামুনুর রশীদের এজাহারে দেয়া নম্বরে ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম  বলেন, মামলার বাদী তো আমরা নই। আমরা কেবল মামলা নিয়েছি। আর যতটুকু জানি লোকটা জামায়াতের নেতা। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই মামলা আছে। তবে তিনি অন্ধ কিনা আমরা নিশ্চিত নই। এরপরও যখন আপনি জানিয়েছেন, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবো।

*গুরুত্বপূর্ণ  সব সংবাদ ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।

অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়।
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *