বরিশাল বাংলাদেশ

ভোলার ৬ শিক্ষার্থীর অপ্রীতিকর অবস্থার নিউজ প্রকাশ করায় অধ্যক্ষের হুমকি

IMG 20231013 WA0001
print news
ভোলা প্রতিনিধি :
ভোলার দৌলতখানের ‘দক্ষিন জয়নগর আহাম্মদের হাট আলিম মাদ্রাসার’ প্রাঙ্গণের একটি নির্জন ঘর থেকে অপ্রীতিকর অবস্থায় ৬ জনকে আটক করেছে ঐ মাদ্রাসার  শিক্ষকরা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে দামাচাপা দিতে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এবিষয়ে নিউজ প্রকাশ করায় ঐ মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফোনে মামলা হামলার ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এনিয়ে মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ও এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে মাদ্রাসার পিছনের সবুজের ঘর থেকে তাদের আটক করা হয়।
লিখিত ভাবে উদ্ধার করা শিক্ষিকা বলেন, আমি লিজা। আমার পিতা মোঃ লোকমান। আমি সোমবার (৯ অক্টোবর) বেলা ১:৩০ ঘটিকায় হেলাল স্যার, ও আব্দুর রহিম স্যারের নির্দেশে মাদ্রাসার পিছনে সবুজের ঘরে প্রবেশ করে মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর তিনজন ছাত্রী আখি, ফাহিমাকে ও তারেক, জিহাদের সাথে অপ্রিতিকর অবস্থায় দেখতে পাই। অমিকে দরজার পিছনে দেখতে পাই। সাকিলকে ঘরের বাহিরে পাহারা দিতে দেখতে পাই। এবিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রিন্সিপাল ও সভাপতি বলেছে এবিষয় কাউকে না জানাতে। যদি জানাই তাহলে তার সমস্যা হবে। তবে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে। প্রশাসনের কেউ ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশাসনের কেউ ছিলো না। তবে বাহিরের একজন লোকসহ মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিষয়টি মিমাংসা করেছে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনির শিক্ষিকা ও সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, তাকে ছাড়পত্র দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়া হবে। তার এতো বড় সাহস কই থেকে আসলো। এছাড়া সাংবাদিককে মামলা হামলা ও স্থানীয় নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় ঐ অধ্যক্ষ। সাংবাদিক কেনো নিউজ করলো এবিষয়ে তিনি জানতে চান। তিনি আরো বলেন, মাদ্রাসা একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে যা হয়েছে তাতে সাংবাদিকদের কি। এসব ছোটখাটো বিষয় সাংবাদিক পিছু লেগে এলাকার মেয়েদের মানসম্মান নিয়ে খেলতেছে। মিমাংসার বিষয় ফোনে জানতে চাইলে তিনি আগের কথা অস্বীকার করে জানান, ঐ ঘরে তারা জাম্বুরা না কি খেয়ে আনন্দ পূর্তি করছে। সেখান থেকে তাদের রাগ করে আনছি। তিন ছেলেকে দশ বেট করে দেওয়া হয়েছে এবং মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র না হয়েও তার নির্দেশে তিন ছেলেকে দশটি লাঠির আঘাত করা হয়েছে। আঘাতের কারন জানতে চাইলে তিনি আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে যায়। আপনারা যা পারেন গিয়ে করেন। পারলে মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ যারা আছে সবাইকে জানান। মাদ্রাসা এটার ভিতরে জিনা চলতেছে।
ঐ অধ্যক্ষের এমন আচরণ জঘন্য বলে সাংবাদিক মহল ক্ষোভ প্রকাশ করে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
মাদ্রাসার সভাপতি আলতাফ মাষ্টার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মাদ্রাসার বিষয়টি আমরা মিমাংসা করবো। আপনারা প্রিন্সিপাল এর সাথে দেখা করুন।
অভিভাবকরা জানান, ছয় জন ছেলে-মেয়েকে একটা ঘর থেকে আটকের ঘটনা শুনেছি। এতো বড় অন্যায় করছে অথচ তিন ছেলেকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দিলো প্রিন্সিপাল। স্বজনপ্রীতির কারণে তাদের উপযুক্ত বিচার করা হয়নি। তাদের উপযুক্ত বিচারের আওতায় না আনলে আমাদের সন্তানরাও তাদের দেখা দেখি নষ্ট হয়ে যাবে। ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে সন্তান কোথায় নিরাপদে পড়াশোনা করতে পারবে। মাদ্রাসার কার্যক্রম নিয়ে এলাকাবাসীসহ তারা ক্ষিপ্ত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পাঠান মোঃ সাইদুজ্জামান জানান, এবিষয়ে আমি কিছু জানি না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলাপ করেন। যদি অশোচনীয় কিছু হয় তাহলে বিষয়টি আমাকে জানিয়েন।

*গুরুত্বপূর্ণ  সব সংবাদ ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।

অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়।
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *