বগুড়ায় যোগ-সাজসে ভেজাল ভোগ্যপন্যের জমজমাট ব্যাবসা


আশাদুজ্জামান আশা,বগুড়া : বগুড়া শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বি এস টি আই এর অনুমোদিত এবং অনুমোদনবিহীন নিম্নমানের ভোগ্যপন্যে বাজার ছেয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।অভিযোগের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে নেমে দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় মিলিয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় এক ডজন অননুমোদিত মিল ও কারখানা। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ দিয়ে নোংড়া ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে এবং বোতলজাত সরিষার তেল, মোড়কজাত করা হচ্ছে হলুদগুড়া, মরিচ গুড়া, চানাচুর জাতীয় নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। এসব ব্যবসায়ীরা কোনো সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তৈরি করছেন এসব ভোগ্যপন্যজাত সামগ্রী। অধিকাংশ কারখানা অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠিত এবং নিম্নমানের ভোগ্যপণ্য অন্য কোম্পানির বা কাল্পনিক নাম দিয়ে কোম্পানির লেবেল লাগিয়ে বিএসটিআইয়ের সীল ব্যাবহার করে অনুমোদন ছাড়াই বাজারজাত করছে। এদের নেই বি এস টি আই এর অনুমোদন, নেই পাকেজিং লাইসেন্স, এমনকি নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। মানুষের খাওয়ার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভোগ্যপন্য উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলাতেও অবাধে পাঠানো হচ্ছে। বিএসটিআই অনুমোদনহীন নিম্ন মানের, হলুদগুড়া, মরিচ গুড়া, সরিষার তেল ইত্যাদি কোম্পানীর নামের লেবেলযুক্ত প্যাকেটে প্যাকিং হয়ে অবাধে বাজারজাত করছে। বি এস টি আই এর অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে এবং দেখতে চাইলে দেখা যায় দু/একটি পন্যের অনুমোদন আছে আর বাজারজাত করছে দশ থেকে আঠারোটি পন্যের। এমনই শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি গ্রামে গড়ে উঠেছে “সাদমান এগ্রো ফুড প্রোডাক্ট” নামে ভোগ্য পণ্য উৎপাদনের একটি কারখানা। যাদের দু-একটি প্রডাক্টের বিএসটিআইয়ের অনুমোদন থাকলেও তৈরি করছে প্রায় ১৮/২০টি নিম্নমানের ভোগ্যপণ্য। কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন শ্রমিক কোনো ধরনের সেফটি ইকুইপমেন্ট ছাড়াই ঘরের মেঝের উপর নোংরা ও ময়লাযুক্ত স্থানে ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে কাজ করছে। তেলের বোতলে তেলের পরিমান ২০০ গ্রাম লেখা থাকলেও তেল থাকে ১৫০/১৬০ গ্রাম। এ প্রসঙ্গে কারখানা মালিক সরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তারা সংশ্লিষ্ট বি এস টি আই এর সাথে যোগাযোগ করে ব্যবসা পরিচালনা করছে বলে জানান। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এহেন অপকর্ম নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে বলে জানা যায়। সচেতন মহল ভেজাল পন্যের বাজারজাতকরণ যেন না হতে পারে সে বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে বিএসটিআই বগুড়ার ইঞ্জিনিয়ার মেসবাউল হাসান (ফিল্ড অফিসার) এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরামর্শ দেন। এমন কয়টি কারখানার অনুমোদন রয়েছে জানতে চাইলে, তিনি এভাবে কোন তথ্য দেওয়ার নিয়ম নেই বলে জানান। তথ্য ফরমে আবেদন করলে তথ্য দেওয়া যেতে পারে বলে তিনি জানিয়ে দেন।
* দেশ বিদেশের সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।