অনুসন্ধানী সংবাদ

খুলনা পাউবোর এডি আব্দুস সোবাহান ও হিসাব রক্ষক মাহাফুজ যেন আলাদিনের চেরাগ

RAC K
print news

ফকির শহিদুল ইসলাম,খুলনা:
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের র‌্যাক অফিসের এডি আব্দুস সোবাহান ও হিসাব রক্ষন মাহাফুজের ঘুষ বানিজ্য অতিষ্ঠ পাউবোর ঠিকাদাররা । বিল তৈরি করে যাবতীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ঠ পাউবো কর্মকর্তারা খুলনা পানি ভবনের (অহিনি) র‌্যাক অফিসে সংশ্লিষ্ঠ বিলের চেক উত্তোলনের প্রেরন করে । ঠিকাদাররা তাদের বিলের চেক উত্তোলনে র‌্যাক অফিসে গেলেই হয়রানীর স্বীকার হন । ঘুষের দাবীকৃত টাকা না দিলে ঐ ঠিকাদার আর বিলের চেকতো দুরে থাক তার কাগজপত্র নিয়ে এডি আব্দুস সোবাহান শুরু করে তালবাহানা । এভাবে ঠিকাদারদের হয়রানীর মাধ্যমে র‌্যাক অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা হয়ে গেছেন কোটি কোটি টাকা,গাড়ি,বাড়ি,নামে বেনাম অবৈধ সম্পদের মালিক ।

আর এই ঘুষ বানিজ্যের মুল সিন্ডিকেটে রয়েছেন হিসাব রক্ষক মাহাফুজুর রহমান ও চেক ইস্যুকারী মাহামুদা । ঘুষ বানিজ্যের মুল সোবাহান ঢাকা শহর এবং তার গ্রামের বাড়িতে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছেন। আর মাহাফুজ তার স্ত্রীর নামে নগরীর গুরুত্বপূর্ন বয়রা কলেজ রোড জলিল স্বরনীতে
গড়ে তুলেছে কয়েক কোটি টাকা মুল্যের আলিশান বাড়ি । একজন হিসাব করনিক কর্মচারী ঘুষের টাকায় কেডিএর -ই ১২ নং প্লটে চারতলা বাড়ি ছাড়াও রয়েছে নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। তার পদবীর সাথে এই সম্পদ দেখে প্রতিবেশীরা অবাক। চেক ইস্যুকারী মাহামুদা থাকেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোয়াটারে । সম্প্রতি তিনি নগরীর গুরুত্বপূর্ন এলাকায় কোটি টাকা মুল্যে সম্পত্তি ক্রয় করছেন । মাহামুদার গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার থুকরায় তার স্বামী কেসবপুরে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকতা করেন । কোয়াটারে ব্যাচেলর থাকা এডি সোবাহানের সাথে তার রয়েছে
বিশেষ সখ্যতা ।

এই ঘুষ বানিজ্যে র‌্যাক অফিস ঘুস- দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা এই র‌্যাক অফিসের এডিসহ সকল র‌্যাক অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাহাড়সম অবৈধ সম্পদের খোঁজ নিতে দুদকের হস্থক্ষেপ কামনা করছেন । জানাগেছে, খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর আওতাধীন দুটি সার্কেলে ৭টি ডিভিশন রয়েছে । ডিভিশনগলো হচ্ছে খুলনা পাউবো বিভাগ ১ এবং ২, সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ ১ এবং ২,বাগেরহাট পাউবো,যশোর পাউবো ও নড়াইল পাউবো। ৫টি জেলার পাউবোর বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন,বেড়িবাঁধ মেরামত উন্নয়ন কাজের জন্য মান দন্ডের সম্পুর্ন দায়বদ্ধ থাকেন সংশ্লিষ্ঠ কাজের শাখা কর্মকর্তা,উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী,নির্বাহী প্রকৌশলীগন । প্রকল্প বাস্তবায়ন বেড়িবাঁধ মেরামত উন্নয়ন কাজের জন্য দরপত্র অনুযায়ী নিয়োগ করা হয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান । আর পাউবোর এই ৭টি ডিভিশনের উন্নয়ন প্রকল্প দ্রæত বাস্তবায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধে এসও,এসডি ও নির্বাহী প্রকৌশলী যাবতীয় ডকুমেন্ট তৈরি করে কাজের চেক ইস্যুর জন্য খুলনা পানি ভবনের দ্বিতীয়তলায় অবস্থিত র‌্যাক অফিসে প্রেরন করেন। সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক বা তার প্রতিনিধি চেক উত্তোলন করতে অফিসে আগমন করলেই মাহাফুজ এডিকে জানিয়ে দেন । এডরি দপ্তরে বিলের কাগজপত্র দেখে সিন করে বেড়িয়ে যান । এডি বেড়িয়ে গেলে দুর দুরান্ত থেকে আসা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক বা তার প্রতিনিধি পরেন বিপত্তিতে । তখন মাহাফুজ ও মাহামুদার দ্বারস্থ হন ঠিকাদাররা । বিল ভেদে ১ থেকে ২ ভাগ পার্সেটিস ও পিসি খরচ নগদ হলেই ধুর্ত সোবাহান অফিসে এসে বিলে স্বাক্ষর করেন ।সম্প্রতি সাতক্ষীরার এক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ৭টি ছোট বিল নিতে এসে সোবাহানকে নগত ৫হাজার টাকা ঘুষ দেন । ঘুষের বিনিময় একটি বিল ছাড় করলেও অন্য বিল ছাড় দেননি সোবাহান । কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্তেও বিল ছাড় না দেয়ায় ঠিকাদার তাকে জিজ্ঞাসা করেন বাকি বিল কেন দেননি ,এসময় সোবাহান বলেন কাগজপত্র ঠিক নেই । ঐ ঠিকাদার একটি বিল না নিয়ে সাতক্ষীরার
চলে যান এবং সম্পুর্ন বিলের কাগজপত্র পুনরায় নিয়ে এসে সোবাহানকে দেয়া ঘুষের টাকা ফেরত নেন । এছাড়াও গত ঈদ আযহায় ঠিকাদারদের কাছ থেকে গরু ক্রয়ের টাকা উত্তোলন করেন । এছাড়াও র‌্যাকের হেড অফিসের কথা বলে কয়েক লক্ষ টাকা উত্তোলন করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে । ভুক্তভোগি ঠিকাদাররা জানান আমাদরে বিশ পচিশ বছরের কাজরে অভিজ্ঞতায় কোন এরকম হয়রানী হতে হয়নি । এডি সোবাহান,মাহাফুজ ও মাহামুদা র‌্যাকের অফিসকে নিজের বাপের সম্পত্তি মনে করে ঠিকাদারদের হয়রানী করে ঘুষ দেয়ায় বাধ্য করেন । এ বিষয়ে হিসাব রক্ষক মাহাফুজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ঘুষ খাইনা।আলিশন বাড়ির কথা বললে তিনি বলেন ঐ বাড়ি আমার স্ত্রীর । আপনার স্ত্রী কি কোন চাকরী করেন,জবাবে তিনি বলেন,আমার স্ত্রী গৃহিনী। একজন গৃহিনী কিভাবে এই আলিশন বাড়ি তৈরি করেন এমন প্রশ্নে তিনি ফোন কেটে দেন । হিসাব করনিক মাহামুদার কাছে এ প্রতিবেদক জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার কাজ চেক ইস্যু করা। চেক নেয়ার সময় কেহ যদি খুশি হয় টাকা দেয় সেটা কি ঘুষের মধ্যে পড়ে। র‌্যাকের উপ-পরিচালক আব্দুস সোবানের কাছে তার ঘুষ বানিজ্য এবং দুর্ণীতির বিষয় এ প্রতিবেদক জানতে
চাইলে তিনি বলেন,আমার অফিসে কোন ঘুষ নেয়া হয়না । মাহাফুজ ও মাহামুদার মাধ্যমে ঘুষের টাকা নেয়ার প্রমান আছে এমন প্রশ্নে তিনি লাইনটি কেটে দেন । সোবাহান,মাহাফুজ,মাহামুদার বেপরোয়া ঘুষ বানিজ্যের বিষয়ে নিয়ন্ত্রক (অহিনি) মোঃ হেমায়েতুল ইসলামের ব্যাবহৃত  নন্বরে এ প্রতিবেদক কয়েকবার কল দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি ।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *