গণপূর্ত অধিদপ্তরের ’দুর্নীতির রানী’ নন্দিতা রানী : দুই দশকেও ঢাকার বাহিরে বদলি হয়নি


ঢাকা প্রতিনিধি : ২০ বছর’র বেশী সময় ধরে ঢাকায় কর্মরত গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রানী সাহা। তবে এই দপ্তরে তাকে কেউই বাবা-মায়ের দেওয়া নামে চেনেন না। গণপূর্ত অধিদপ্তরে নন্দীতা রানী নিয়োগ ও পদোন্নতি বাণিজ্যের দুর্নীতির “রানী” হিসেবেই বেশী পরিচিত। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে ২১ তম বিসিএস’র মাধ্যমে নিয়োগ পান তিনি। অবৈধ উপায়ে সম্পদের পাহাড় বানানোর লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘মূল’ লোক বনে গেছেন দুর্নীতির এ রানী। তবে কাজ করছেন এখনও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জন্য।টাকার বিনিময়ে বিএনপির শাসনামলে মির্জা আব্বাসের হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত অফিস সহায়কদের পদোন্নতি দিতে কম্পিউটার পরীক্ষায় একদমই অযোগ্য লোকদের পদন্নোতি দিয়েছেন নন্দীতা রানী সাহা। যেমন, যোগ্য কর্মচারীদের অবমূল্যায়ন করে তাঁর নিজ দপ্তরে অফিস সহায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন (রোল নং ১৩২) কে টাকার বিনিময়ে পদোন্নতির তালিকায় রেখেছিলেন তিনি।প্রসঙ্গত, নিয়োগ ও পদোন্নতি কমিটির সভাপতি নিয়োগ বোর্ডে যা বলবেন অন্য সদস্যরা এর বাহিরে মত প্রকাশ করে খুবই কম। ঠিক নন্দীতা রানী সাহার বিষয়েও একই নিয়ম মানা হয়। নিয়োগ ও পদোন্নতি কমিটির সভাপতি সর্বোপরি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তাই এক্ষেত্রে ভেঙ্গে বুঝানোর কিছু নেই।অভিযোগ রয়েছে, নন্দীতা রানী সাহা বিভিন্ন মানুষকে প্রকাশ্য বলে বেড়ান মন্ত্রণালয় ও তাঁর উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপঢৌকন দিয়ে-ই নিয়োগ ও পদোন্নতি দেন। তাঁদের খুশি না করলে কোন কাজ তাঁর একার পক্ষে করা সম্ভব না বলেও জানান নন্দীতা রানী সাহা। একই ভাবে মন্ত্রণালয়ের স্যারদের ম্যানেজ করে-ই আমি সব কাজ করি এমন গল্পও শোনান নন্দীতা রানী সাহা।বেশ কিছুদিন আগে, পদোন্নতির লক্ষে ৯৫ জন পরিক্ষা দিলেও এর মধ্যে থেকে যারা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের জন্যই শুধুমাত্র পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করেছিলেন তিনি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে পদোন্নতি পরীক্ষায় প্রায় দেড় শতাধিক পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও সেখানে মাত্র চারজন উত্তীর্ণ হয়েছিল। এখান থেকেই প্রমান হয় নন্দীতা রানী সাহা কত বড় দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন।অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, একই কর্মস্থলে একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ ৩ বছর থাকার কথা। কিন্তু নন্দীতা রানী সাহার রহস্যময় খুঁটির জোরে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে গণপূর্ত অধিদপ্তরে বহাল তবিয়তে দুর্নীতির জাহাজ চলু রেখেছেন। এমনকি চাকরি জীবনে কখনো তার ঢাকার বাহিরে বদলী হয়নি। এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে আসলে তাঁর খুঁটির জোর কোথায়?।মূলত নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক বলে পরিচয় দিয়ে বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন নন্দীতা রানী সাহা এমন অভিযোগ গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মচারী ইউনিয়নের নেতাদের। বিভিন্ন লোকজনের কাছে নন্দীতা রানী সাহার ভাষ্য, সবকিছু ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন অধিদপ্তরের টিকে আছি। যদি ম্যানেজ না করতে পারতাম তাহলে কত আগেই বান্দরবন, খাগড়াছড়ি থাকতে হত। নন্দীতা রানী সাহা এর পদোন্নতি বাণিজ্য নিয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব বরাবর পত্র পাঠানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে গণপূর্ত’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নন্দিতা রাণী সাহা বলেন, ‘এরকম হয়েছে নাকি? আমার জানা নেই। কার বেলায় হয়েছে বলবেন? আমার চাকরির বয়স ২০ বছরের একটু বেশী হয়েছে। তবে যোগদানের পর বদলি হয়নি। সেটা ভিন্ন ব্যাপার।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news