ভোলার মাছঘাট ও বাজার ইলিশের পরিবর্তে দখল করেছে নদীর পোয়া-পাঙাস


সাব্বির আলম বাবু: কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে ভোলার মাছেঘাট ও বাজারগুলোতে। তবে ইদানীং জেলেদের জালে ইলিশের পরিবর্তে বেশি উঠছে নদীর পোয়া ও পাঙাশ। ২ নভেম্বর মাছ ধরা নিয়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর ঘাটগুলোতে এখন এমন চিত্র। দিনের আলো ছড়িয়ে পড়তেই দক্ষিণের সাগর মোহনা থেকে দুলাল মাঝির ট্রলার এসে লাগল ভোলাখালে। সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নে ভোলাখালের মাথায় এক মাছঘাট। নাম ভোলাখালের মাথা মাছঘাট। সেখানে দেখা যায়, মাছঘাটে ট্রলার ভিড়তেই মৎস্য ভিক্ষুকেরা ঘিরে ধরেন। জেলেদের কাছ থেকে চেয়ে মাছ নেন। এসব মাছ বিক্রি করে তাঁরা একেকজন প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা আয় করেন। এ দিয়েই চলে তাঁদের সংসার। দুলাল মাঝির ট্রলারের মাল্লারা বরফের ঝাঁপি থেকে ভাগে ভাগে নানা রকম মাছ তুলে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ঢালেন। সেখানেই ডাক তুলে মাছ বিক্রি করেন। মাছঘাটগুলোতে ধরতে গেলে সারা দিনই মাছ কেনাবেচা হয়। দুলাল মাঝি বলেন, ৩ নভেম্বর তিনি বড় আশা নিয়ে সাগরে যান। গতকাল সকালে ফিরে আসেন। কারণ, সাগর মোহনায় কোনো ইলিশ নেই। সব মাছই পোয়া আর দু–একটা পাঙাশ মাছ। ৫ দিনে প্রায় ৭০ হাজার টাকার মাছ পেয়েছেন তিনি। যে পরিমাণ মাছ তিনি পেয়েছেন, তার বেশির ভাগ পোয়া মাছ বলে তেমন দাম নেই। ভোলার দৌলতখান উপজেলার হাজীপুর হুজুরের খাল মাছঘাট, তজুমদ্দিন উপজেলার স্লুইজ মাছঘাট, লালমোহন উপজেলার বাত্তিরখাল মাছঘাট, চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর সাগরে গিয়ে ইলিশের দেখা তেমন পাওয়া যায়নি। বাত্তিরখালের মৎস্য আড়তদার মো. ঝিকু বলেন, ‘পোয়া মাছ ছাড়া তেমন কোনো মাছ নেই। মাঝে মাঝে পাঙাশ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ নাই কইলেই চলে। ছোড জাইল্লারা ৩-৪ হাজার টাকার পোয়া মাছ পায়। বড় জেলেরা ৫০-৬০ হাজার, এক-দেড় লাখ টাকার।’ তজুমদ্দিন স্লুইজ মাছঘাটের আড়তদার ও জেলে সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাইজালের জেলেরা দেড়-দুই লাখ টাকার পোয়া মাছ পাচ্ছেন।
চরফ্যাশন উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মারুফ হোসেন বলেন, প্রজনন মৌসুম শেষে ডিম ছাড়ার পর ইলিশ সাগরে চলে যায়। আবার পোয়া মাছের প্রধান খাবার ইলিশ মাছের ডিম। তাই নদীতে পোয়া মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, মা ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে সব মাছই ডিম ছাড়ে। এ কারণে শুধু পোয়া মাছ নয়; পাঙাশ মাছও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তবে আর কিছুদিনের মধ্যে ইলিশ পড়বে বলে আশা তাঁর।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news