বরিশালের মানুষ ঢাকামুখী অভিবাসনে এগিয়ে, বিদেশে যাওয়ায় শীর্ষে চট্টগ্রাম


ঢাকা প্রতিনিধি : গত সপ্তাহে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত দেশের ষষ্ঠ আদমশুমারির প্রতিবেদনে উঠে আসে, সাড়ে ৫০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক বর্তমানে বিদেশে বসবাস করছেন; যাদের মধ্যে চট্টগ্রামের মানুষই বেশি। চট্টগ্রামের সাড়ে ২০ লাখ মানুষ বিদেশে বসবাস করছেন, যা বিদেশে বসবাসরত মোট বাংলাদেশির ৪০.৬১%। এ সংখ্যা অন্য সব বিভাগ থেকে বেশি।জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ঢাকায় সবচেয়ে বেশি অভিবাসন ঘটেছে বরিশাল থেকে। বরিশালের স্থানীয় লোকজনের ১৮.৬২% এখন ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা।বরিশালের পরেই আছে ময়মনসিংহ। ময়মনসিংহের স্থানীয়দের ১৪.৪৩% বর্তমানে ঢাকায় বসবাসরত।তালিকায় এরপর আছে রংপুর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী; তবে এই তিন বিভাগ থেকে আসা লোকের সংখ্যা কম।এছাড়া, খুলনা ও সিলেট থেকে আসা লোকের সংখ্যা অন্যান্য বিভাগের তুলনায় কম। এরমধ্যে, সিলেট থেকে ঢাকায় আসা মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে কম।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম বলেন, “দারিদ্র্যই ঢাকায় অভিবাসনের প্রধান কারণ।””বরিশাল থেকে যারা এসেছে তারা মূলত মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে নিম্ন আয়ের মানুষ এবং তারা ঢাকায় মূলত কাজের সন্ধানে আসে। এছাড়া, বন্যার মতো পরিবেশগত দুর্যোগও ঢাকায় অভিবাসনের পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে,” বলেন তিনি।জলবায়ু পরিবর্তনকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ড. ইসলাম বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ভবিষ্যতে এটি আমাদের জনসংখ্যার গতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দেশের অনেক অঞ্চলেই দেখা যাচ্ছে।”নগর স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “ঢাকা ও চট্টগ্রামের বস্তিগুলোতে যারা বসবাস করছেন, তাদের বেশিরভাগই বরিশাল থেকে এসেছেন।”এদিকে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত দেশের ষষ্ঠ আদমশুমারির প্রতিবেদনে উঠে আসে, সাড়ে ৫০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক বর্তমানে বিদেশে বসবাস করছেন; যাদের মধ্যে চট্টগ্রামের মানুষই বেশি।চট্টগ্রামের সাড়ে ২০ লাখ মানুষ বিদেশে বসবাস করছেন, যা বিদেশে বসবাসরত মোট বাংলাদেশির ৪০.৬১%। এ সংখ্যা অন্য সব বিভাগ থেকে বেশি।দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা। ঢাকার ২৮.৩২% মানুষ বিদেশে বসবাসরত। এরপর তালিকায় আছে সিলেট (১১.৩৪%), খুলনা (৬.০৭%), রাজশাহী (৫.৩৩%), ময়মনসিংহ (৩.০৫%) এবং বরিশাল (৩%)।রংপুর থেকে বিদেশে অভিবাসনে যাওয়া মানুষের হার সবচেয়ে কম (২.২৮%)।অভিবাসন বিশেষজ্ঞ এবং আইএলও পরামর্শক আসিফ মুনির ব্যাখ্যা করেন, চট্টগ্রাম বিভাগের যেসব মানুষ ছোটখাটো ব্যবসা চালাতেন তাদের মধ্যপ্রাচ্যে অভিবাসনের প্রবণতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কয়েক প্রজন্ম ধরেই এ প্রবণতা প্রচলিত রয়েছে।রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেছিলেন, বাংলাদেশ যখন ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝিতে জনশক্তি রপ্তানি শুরু করে, তখন চট্টগ্রাম ও ঢাকার লোকেরাই বিদেশে কাজের জন্য যায়।”একবার বিদেশে যেয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর তারা নিজ নিজ এলাকা থেকে আরও বেশি মানুষ অভিবাসনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে,” ড. সিদ্দিকী বলেছিলেন। তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ের অভিবাসীরা পরবর্তীতে তাদের পরিচিতদের বিদেশে নিয়ে যায়। এভাবে এই জেলাগুলোতে অভিবাসীদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি হয়।
*গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news