ফিচার

ভোলার যুব উদ্যেক্তা এ্যানি হ্যান্ডপেইন্ট করে স্বাবলম্বী

unnamed
print news

সাব্বির আলম বাবু : ভোলার যুব উদ্যেক্তা এ্যানি নিজ উদ্যেগে ইউটিউব দেখে হ্যান্ডপেইন্ট শিখে এখন স্বাবলম্বী। স্বামীর মৃত্যুর পর দিশেহারা হয়ে পড়েন প্রমিতা এ্যানি। ছোট বোন ও ভগ্নিপতির পরামর্শে বিকল্প আয়ের জন্য ইউটিউব দেখে শুরু করেন হ্যান্ডপেইন্টের কাজ। আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তার হাতের নিখুঁত ডিজাইনের শাড়ি, পাঞ্জাবি, টু-পিস, বেড শিট ও শিশুদের পোশাক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ক্রেতাদের কাছে। এ্যানির সফলতা দেখে ভোলার স্থানীয় নারীরাও ছুটে আসছেন তার কাছে কাজ শিখতে। জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটেরঘর গ্রামের প্রমিতা এ্যানি দুই সন্তানের মা। ২০২০ সালে স্বামী রবিন্দ্র মজুমদার পিন্টুর অকাল মৃত্যু হয়। এরপর মাসসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। দিশেহারা হয়ে পড়েন সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। পরে ছোট বোন সঙ্গিতার বাড়িতে বেড়াতে যান। তখন বোন ও ভগ্নিপতির পরামর্শে ঘরে বসে বিকল্প আয়ের চিন্তা করেন। এরপর স্বামীর বাড়ি ফিরেই ইউটিউব দেখে ২০২১ সালের জুলাই মাসে শুরু করেন হ্যান্ডপেইন্টের কাজ। খুব অল্প সময়ে তার হাতের নিখুঁত কাজ ক্রেতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

Screenshot 20231201 075325 1
প্রমিতা এ্যানি জানান, তিনি বর্তমানে শাড়ি, পাঞ্জাবি, টু-পিস, ওয়াড পিস, বেড শিট ও শিশুদের পোশাকে হ্যান্ডপেইন্ট করে থাকেন। অনলাইন ও স্থানীয়ভাবে তিনি অর্ডার পেয়ে থাকেন। প্রতিমাসে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকার অর্ডার পান তিনি। এতে সব খরচ বাদে মাসে তার আয় প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকা। আর এই আয় দিয়ে তার দুই সন্তানের লেখাপড়া, ব্যবসা বৃদ্ধি ও সংসারের খরচ চলে। তার ডিজাইন করা শাড়ি দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, পাঞ্জাবি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, ওয়ান পিস ও টু-পিস ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, বেডশিট ২ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার ও বাচ্চাদের পোশাক ৩০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তিনি আরও জানান, তার স্বামীর অকাল মৃত্যুতে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। সব সময় সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকতেন। পরে ছোট বোন ও ভগ্নিপতির পরামর্শে এবং ইউটিউব দেখে আজ তিনি সফল। তার মতে সব নারীরা যদি ঘরে বসে কিছু করার চিন্তা করে তাহলে তাদের ভাগ্য সহজেই পরিবর্তন হবে। প্রমিতা এ্যানির মেয়ে নন্দিনী প্রিয়া মজুমদার জানায়, সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে। মায়ের কাছ থেকে কিছুটা হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শিখে পড়াশুনার পাশাপাশি এখন মায়ের কাজে সহযোগিতা করে।
এদিকে প্রমিতা এ্যানির সফলতা দেখে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও শিক্ষার্থীরা ছুটে আসছেন তার কাছে হ্যান্ডপেইন্টের কাজ শিখতে। ভোলা পৌর ১নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফারজানা হাসি ও সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের ভোটের ঘর গ্রামের সোমা মজুমদার জানান, তারা এ্যানির কাছ থেকে কাজ শিখছেন। শেখা শেষ হলে তারাও ঘরে বসে এ কাজ করবেন। ভোলা সদরের ইলিশা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ক্রেতা মিতু রানী দে জানান, তিনি লোকমুখে শুনে এ্যানির কাছে একটি শাড়ির অর্ডার দেন। সেটি পরার পর সবাই ডিজাইনের প্রশংসা করেন। পরে তার আশপাশের নারীরাও এ্যানির কাছে অর্ডার দেন। ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, প্রমিতা এ্যানি স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সরকারিভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। এ্যানির দেখাদেখি অন্যান্য নারীরাও উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী হচ্ছেন। এছাড়াও সরকারিভাবে নারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *