রাজনীতি

পুলিশ আতঙ্কে দেশের ২ কোটি মানুষ ফেরারি জীবনযাপন করছে:রিজভী

cc7324f1119f169af67b2473156e37b7 656dc21a4e389
print news

ঢাকা প্রতিনিধি :  বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের অভিযোগ, পুলিশ আতঙ্কে দেশের ২ কোটি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন এলাকায় নিমিষে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। এরা ফেরারি জীবনযাপন করছে।গত দুই মাসে প্রায় ২০ হাজার মুক্তিকামী জনতাকে কারাগারে বন্দি করা হয়েছে। কারাবন্দী নির্যাতনের নেপথ্যে কাহিনী অবর্ণনীয়, এগুলো হচ্ছে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা, অসুস্থ বন্দিকে হাত-পায়ে শিকল পরিয়ে কারা হাসপাতালের ফেলে রাখা, ছোট্ট সেলে ধারণ ক্ষমতার তিনগুন বন্দিকে গ্যাস চেম্বারের মতো নিগৃহীত করা।অত্যাচারে কাশিমপুর কারাগারে ৬ দিনের ব্যবধানে বিএনপির দুই নেতার মৃত্যু হয়েছে। ‘২৯টি নিবন্ধিত দল নিয়ে সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, যে ২৯ দল নির্বাচনে যাচ্ছে তাদের মধ্যে তিন-চারটি বাদে অন্যগুলোর নামও শোনেনি কেউ। স্বগৃহে ইলেকশান থিয়েটারে রঙ্গনাটক মঞ্চস্থ করতে যাদের আনা হয়েছে তারা হলো আওয়ামী লীগের সঙ্গ-অনুসঙ্গ। এটা আসলে বাকশালের নতুন ভার্সন। আপডেটেড বাকশাল ২.০ ভার্সন। এই তথাকথিত বাকশাল সঙ্গীদের নিয়ে ‘সুপার-ইমপোজড’ নির্বাচনের আজব তামাশা করছেন শেখ হাসিনা।সোমবার (৪ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের আশা-দূরাশায় পরিণত হয়েছে এখন। মনোনয়ন নিয়ে তাদের সঙ্গে কামড়া-কামড়ি শুরু হয়েছে। যারা এইসব দোকান থেকে মনোনয়ন কিনেছিল তাদের অধিকাংশই জমা দেয়নি। আর যাদের এমপি বানানোর মুলো দেখানো হয়েছিল তারাও ঘুরছে নিরাশায়। আসলেও তাদের আশায় গুড়েবালি। আওয়ামী লীগ যে প্রতারক তা বুঝতে পারছে হাড়ে হাড়ে।তিনি বলেন, ৫২ বছর আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর চেয়েও এই আওয়ামী রক্ষী বাহিনী-হানাদার বাহিনী ভীষণরকম হিংসাশ্রয়ী, তাদেরকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর। তাদের কাছে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যরা মানুষ না। বিএনপির নেতাকর্মী ও তাদের পরিবার এমনকি তাদের আত্মীয় স্বজনও হামলার লক্ষ্যবস্তু আর তাদের সম্পদ যেন গণিমতের মাল।রিজভী বলেন, রাতের গভীরে আওয়ামী দলদাস হানাদার বাহিনী হানা দিচ্ছে গণতন্ত্রকামী মানুষের বাড়ি-বাড়ি। বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের না পেলে তাদের ছেলেসন্তান, স্ত্রী, মা-বোন-ভাই-বাবাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ভাংচুর লুটপাট করছে। মুক্তিপণ আদায় করছে। ১৯৭১ সালে রাজাকার, আল বদর, আল শামস, শান্তিবাহিনীর লোকজন পাকিস্তানী বাহিনীকে বিভৎস হত্যার মদদ দিতো, ধরিয়ে দিতো মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের পরিবারের লোকজনদেরকে। বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিচ্ছে।গত এক মাস ধরে দেশে রক্ত ঝরাচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসবাদী দল। মাথায় হেলমেট, মুখে মুখোশ পরে নম্বর প্লেটবিহীন মাইক্রোবাস অথবা মোটরসাইকেলে রাতের অন্ধকারে এসে গুপ্ত হামলা করছে আওয়ামী গুপ্ত ঘাতকরা। রাতের অন্ধকারে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও ককটেল বোমা মারা হচ্ছে। এইসব ঘটনায় সরাসরি পুলিশ প্রশাসন মদদ দিচ্ছে। তার প্রমাণ হলো কোনো ঘটনায়ই থানায় অভিযোগ ও মামলা নিচ্ছে না। দেশের আইন-শৃংখলা বলে কিছুই নেই। সব দুর্বৃত্তদের অধিকারে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।আপনারা দেখেছেন, কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ছেলেকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ মা আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিএনপির খুলনা জেলার যুগ্ম আহবায়ক শামসুল আলম পিন্টুকে তার কপিলমুনির বাসায় রাত আড়াইটায় অভিযান চালিয়ে বাসায় না পেয়ে পুলিশের এসআই সাহাজুল পিন্টুর স্ত্রী এবং সন্তানদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে। বাসার আসবাব-টেলিভিশন যা পেয়েছে ভাংচুর করেছে। খাবারে চাউলের ড্রাম রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। এক উচ্ছৃঙ্খল উল্লাসের দৃশ্যপট দেশজুড়েই। এক ভয়াবহ বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। এতকিছুর পরও প্রবল শক্তিতে হানাদারমুক্ত বাংলাদেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষে আন্দোলনের মাঠে লড়ছে বিএনপিসহ সমস্ত গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলো। বৈপ্লবিক স্তরে প্রবেশ করেছে তারা। একদলীয় তামাশার নির্বাচনের স্বপ্ন ধুলিষ্যাৎ করে জনগণের মুক্তি ঘটবে যে কোন সময়ে।রিজভী বলেন, একতরফা নির্বাচনকে লোক দেখানো বৈধতা দিতে সরকারের প্রস্তুতি ছিল প্রার্থী বেচাকেনার হাট জমিয়ে তোলার। কর্মীবিহীন নাম সর্বস্ব দলের নেতাদের পকেটে পুরতে উদয়াস্ত খেটেও সুবিধা করতে পারেনি সরকারি দলের আজ্ঞাবহ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। নির্বাচন কমিশন এরপরেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে যাচ্ছেন। এই প্রহেলিকার উত্তর লুকিয়ে আছে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায়। বাসে আগুন দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত আসামি তেলেসমাতির জামিনে এক ঘণ্টায় কারামুক্ত হয়ে নৌকায় চড়ে-স্বঘোষিত ‘হ্যাডমওয়ালা’ ব্যক্তির মুখ থেকে শুনলাম ২ কোটি দিয়া প্রত্যেককে ইলেকশনে দাঁড় করানো হয়েছে! তিনিই বলেছেন, এগুলো তো ফকিন্নি পার্টি। দু-তিন কোটি টাকা পাইছে, দাঁড় করাইছে।’

একদিকে যেমন চলেছে বেচাকেনা তেমনি কাজে লাগানো হয়েছে চাপ প্রয়োগের কৌশলও। মামলা, হামলা হুমকি কোনো কিছুই বাদ যায়নি এ থেকে। কিন্তু কথিত দু-তিনটি ‘রাজদল’ বা কুইন্স পার্টি নামকাওয়াস্তে গঠন করে বিএনপিসহ সকল জনপ্রিয় দলকে দূরে সরিয়ে তাদের নির্বাচনের পাতানো খেলার মাঠে নামানো হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের আশা-দূরাশায় পরিণত হয়েছে এখন।

 

*গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়
সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ ডেস্ক :

About Author

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *