বরিশালে শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক জুতাপেটা করার ঘটনায় তোলপাড়


বরিশাল অফিস : বরিশাল নগরীর ৮৩ নং মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সম্প্রতি এক শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ স্কুলের শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও এস এমসি সদস্যরা। একের পর এক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিচ্ছে বিতর্কিত ও বহুল সমালোচিত প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বদলীর আদেশ দিলেও অদৃশ্য কারনে স্থগিত হয় বদলীর আদেশ। এর পরেই বেপরোয়া হয়ে ওঠে মাহমুদা খাতুন। একের পর এক শিরোনাম নাম হচ্ছেন টেলিভিশন,পত্র-পত্রিকা ও অনলাইন গনমাধ্যমের।মাহমুদার খুটির জোড় নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।মাহমুদার বিরুদ্ধে মানববন্ধন,ঝাড়ু ও জুতা মিছিল করেছে স্থানীয় লোকজন।
আরও পড়ুন :
বরিশালে প্রধান শিক্ষকের রুপের জাদুতে পাচঁ বিয়ে-দুর্নীতি অনিয়ম ঢাকতে থাকেন ঢাকায়!
১৯ অক্টোবর মাহমুদা খাতুনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমানিত অভিযোগ এনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাহের উপ পরিচালকের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন এস এমসির সভাপতি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা খাতুনের বদলী বাতিল হবার পর থেকে সে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে, তাঁর অত্যাচারে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সহকারি শিক্ষক এবং এসএমসি সদস্যগণ মারাত্মক মনকষ্টে রয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণির একজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা করা। চতুর্থ শ্রেণির আরেক মেয়ে শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পর মারা এবং অভিভাবক কর্তৃক টিসি নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করা। নানাবিধ আর্থিক অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা। সভাপতির স্বাক্ষরবিহীন একজন এসএমসি সদস্য’র স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষকদের মাসিক বেতন শীট দাখিল করা।অভিভাবক ও এসএমসি সদস্যদেরকে ভুল বুঝিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর সরবরাহ করা। এসএমসি সভা না করা, যতটা করা হয় সেটাও নিয়ম মেনে করা হয় না। নিজের খেয়াল মতো নানাবিধ জাতীয় দিবস উদযাপন করা।সহকারি শিক্ষকদের তীব্র পরিবারিক এবং ব্যক্তিগত সংকটে ছুটি প্রদান না করা। চতুর্থ শ্রেণির একজন মেয়ে শিক্ষার্থীকে জুতাপেটা করা,তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুন ঐ শিক্ষার্থীকে বেদমজুতাপেটা করেছে। শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি যখন লোকমুখে বাহিরে আলোচনা হচ্ছে তখন প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীর মায়ের কাছে হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছে যাতে সে যেন কারও কাছে না বলে। উল্লেখ্য, উক্ত ঘটনার স্বীকারোক্তীর ভিডিও সংগ্রহ রয়েছে এ প্রতিবেদকের হাতে। চতুর্থ শ্রেণির আরেক মেয়ে শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পর মারা এবং অতপরঃ অভিভাবক কর্তৃক টিসি নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করা , চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থিকে চড়-থাপ্পর মেরেছে। শিক্ষক ক্লাশে ঢোকার পূর্ব মুহুর্তে শিক্ষার্থী বারান্দায় থু ফেলতে গেছে, প্রধান শিক্ষক তা দেখে তাকে চর-থাপ্পর মেরেছে। প্রধান শিক্ষকের উপড় ক্ষিপ্ত হয়ে তার অভিভাবক সে শিক্ষার্থিকে অন্যত্র নিয়ে গেছে। একজন অভিভাবক কতটা কষ্ট পেলে বছরের শেষ সময়ে(২মাস বাকি থাকতে) এসে তার সন্তানকে অন্য বিদ্যালয়ে নিয়ে যেতে পারে। নানাবিধ আর্থিক অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনাঃ প্রায় আড়াই বছর যাবৎ বিদ্যালয়ে এসএমসি কাজ করছে যেখানে বিদ্যালয়ের অনেক বরাদ্দ প্রধান শিক্ষকের একাউন্টে দেয়া হয় কিছু বরাদ্দ যৌথ একাউন্টে দেয়া হয়। যৌথ একাউন্টের অর্থ সভাপতি-র স্বাক্ষরে উঠানো হলেও প্রধান শিক্ষিকা সেটি নিজের হাতে খরচ করেন। উক্ত খরচের হিসেব সভাপতিকে দেখানো হয় না যেখানে নিয়মে বলা রয়েছে সভাপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত না হলে উক্ত বিল গ্রহণযোগ্য হবে না। বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র-মেরামতের টাকা হতে ১২০০০ টাকা এক জায়গায় দেয়ার কথা বলে নিয়ে পরবর্তীতে পাঁচ হাজার টাকা প্রদান করেছে; এটাাই কি যথেষ্ট নয় তাঁর আর্থিক অনিয়মের প্রবৃত্তি প্রমাণের জন্য? পূর্বের বিদ্যালয় (বীর নারায়ন সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়) থেকেও একই অপরাধে তাঁর শাস্তিমূলক বদলী হয়। এছাড়াও বিভিন্ন দিবস উদযাপন এবং কন্টেজেন্সী বিলের একটি টাকাও বিদ্যালয়ের কাজে খরচ করেন না। সভাপতির স্বাক্ষরবিহীন একজন এসএমসি সদস্য-র স্বাক্ষর নিয়ে শিক্ষকদের মাসিক বেতন শীট দাখিল করা, সভাপতি স্টেশনে থাকা সত্বেও তার কাছে রিটার্নে স্বাক্ষর নিতে আসেনা। তার অনেকগুলো গুরুতর কারণ রয়েছে। বারবার ভুল , অসম্পূর্ণ রিটার্ন স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো, স্কুলের যাবতীয় কেনাকাটা/খরচের হিসাব না দেওয়া, মিটিং রেজুলেশন হালনাগাদ না করা, মিটিং আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি এমন সিদ্ধান্ত রেজুলেশনে লেখা ইত্যাদি কারণে গত দুটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেনি সভাপতি। সভাপতির কাছে স্বাক্ষরের জন্য না পাঠিয়ে অন্য একজন এস এম সির সদস্যের স্বাক্ষর নিয়ে রিটার্ন দাখিল করেছে যা আইনত ঘোর অপরাধ। শিক্ষা বিভাগ তাকে এই সুযোগ প্রদান করলে বিদ্যালয়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। অভিভাবক ও এসএমসি সদস্যদেরকে ভুল বুঝিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর সরবরাহ করাঃ প্রধান শিক্ষক কিছু কিছু অভিভাবককে তার বিশেষ কক্ষে ডেকে নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলেন এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা (শিক্ষকরা ক্লাশ করেনা) বলার জন্য চাপ দেন । এতে অভিভাবকেরা অসম্মতি এবং স্বাক্ষর দিতে না চাইলে প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের শুনিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের অভিশাপ দেয় যাতে তারা ভয় পায়। প্রধান শিক্ষক এও বলে হুমকি দেন-”স্বাক্ষর না দিলে আপনাদের সন্তানদের বিপদ হবে, সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে (অভিভাবকদের ভাষ্য অনুযায়ী)। প্রধান শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে, শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলে আসা বারান্দায় অপেক্ষারত অভিভাবকদের দুরদুর করে তাড়িয়ে দিয়ে কলাপ্সিবল গেটে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এর পূর্বে অভিভাবকরা এখানেই অবস্থান করতেন। কলাপ্সিবল গেটের চাবি থাকে দপ্তরির কাছে। তিনি বিভিন্ন কাজে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে মাঝে মাঝে স্কুলের বাহিরে চলে যান। এমতাবস্থায় স্কুল ভবনে কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার কে নিবে? এসএমসি সভা না করা, যতটা করা হয় সেটাও নিয়ম মেনে করা হয় নাঃ এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনো প্রতিকার পায়নি অভিযোগকারীরা। নিজের খেয়াল মতো নানাবিধ জাতীয় দিবস উদযাপন করাঃ এ বিষয়ে পূর্বের অভিযোগগুলিতেও স্পষ্টপ্রমাণ রয়েছে। সম্প্রতি শেখ রাসেল দিবস উদযাপনের বিষয়টিতেও এসএমসিকে সম্পৃক্ত করা হয়নি।সহকারি শিক্ষকদের তীব্র পরিবারিক এবং ব্যক্তিগত সংকটে ছুটি প্রদান না করাঃ প্রায়ই শোনা যায় সহকারি শিক্ষকদের সাথে গায়ে পরে ঝগড়া করে পরিস্থিতি ঘোলা করা প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুনের একটি পারিত্রিক বৈশিষ্ট। তার অনৈতিক বা অযৌক্তিক কর্মকান্ডে কেউ সমর্থন না দিলেই তার সাথে সাপেবর অবস্থা। সহকারি শিক্ষকদের সাথে এধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের জরুরি প্রয়োজনে এমনকি অসুস্থ হয়ে পরলে, নিকট আত্মীয় কেউ মারা গেলেও তাদের ছুটি দেয়না। সে নাকি হুঙ্কার দিয়ে বলে আমাকে সহযোগিতা না করলে আমি কাউকে ছুটিছাটা দিবনা। মাহমুদার অত্যাচারে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থী,অভিভাবক,সহকারি শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন। মাহমুদার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী সংশ্লিষ্ট সকলের।
এ ব্যাপারে মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা খাতুনের মোবাইলে দুবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এস এমসি সভাপতি মোঃ সাইদুল হক পলাশ বলেন,মাহমুদাকে অনত্র বদলী এবং শাস্তিমুলক ব্যবস্থা না নেয়া হলে স্কুলটি ধ্বংস হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপ পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন বলেন,আবেদন পেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।তদন্ত রিপোর্ট পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যা জানুয়ারী মাসেই দেখতে পাবেন।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
বরিশালের মাহমুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাচারী প্রধান শিক্ষিকা স্ট্যান্ড-রিলিজ !
ডিসেম্বর ৭, ২০২৩[…] বরিশালে শিক্ষার্থীকে প্রধান শিক্ষক জ… […]