নানকের দেনা স্ত্রীর কাছে ৮৮ লাখ টাকা, মেয়ে পাবেন দেড় কোটি


ঢাকা প্রতিনিধি : আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। নৌকার এ প্রার্থী তার হলফনামায় ব্যাংক, স্ত্রী-কন্যা ও ব্যবসায়িক দায়ের তথ্য জানিয়েছেন। এতে নানক উল্লেখ করেন, স্ত্রীর কাছে ৮৮ লাখ টাকা এবং কন্যার কাছে এক কোটি ৫৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দেনা রয়েছে তার।ঢাকা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা হলফনামায় নানক উল্লেখ করেন, অগ্রণী ব্যাংক ও ইউসিবিএলে তার ঋণের পরিমাণ ২ কোটি ৮৬ লাখ ১৯ টাকা। এরমধ্যে অগ্রণী ব্যাংকে তার হোম লোনের পরিমাণ ২ কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এছাড়াও ইউসিবিএল থেকেও ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া আছে। একই ব্যাংকে অটো লোন রয়েছে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।ব্যক্তিগত দায়ের (দেনা) বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন, স্ত্রীর কাছে দেনা ৮৮ লাখ টাকা, কন্যার কাছে এক কোটি ৫৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া নির্মাণসামগ্রী কেনা বাবদ ব্যবসায়িক দায় ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্যর সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ রয়েছে ৪৫ লাখ টাকা। এছাড়া কৃষিখাত থেকে তার বাৎসরিক আয় ২ লাখ ২৫ হাজার, বাড়ি থেকে ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা।
হলফনামায় দাখিল করা সম্পদের বিবরণীতে নানক জানিয়েছেন, মৎস্য খামার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন তিনি। তাঁর উত্তরায় একটি ছয়তলা ভবন ও একটি ফ্ল্যাট আছে। মোহাম্মদপুরে আটতলা একটি ভবন ও একটি ফ্ল্যাট আছে। বরিশালে ৪ কোটি ২৯ লাখ ৭৯ হাজার ২৭৬ টাকার ভবন ও একটি টিনশেড বাড়ি আছে। স্ত্রীর নামে গ্রিন রোডে একটি ফ্ল্যাট আছে। আগে ব্যাংকে তাঁর দায় ছিল আড়াই কোটি টাকা। এটি বেড়ে এখন দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের কাছে এখন প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকার দায় আছে তাঁর।
মাছ চাষ ও বাড়ি-দোকান ভাড়া থেকে আয় বাড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। ২০১৪ সালে এসব খাতে তাঁর কোনো আয় ছিল না। এখন মৎস্য খাত থেকে বছরে ৯০ লাখ ২৬ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। আর ভাড়া থেকে আয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা।
পেশা হিসেবে আইন ব্যবসা ও কৃষি দেখিয়েছেন নানক। ২০১৪ সালের হলফনামায় কৃষি খাতে আয় দেখিয়েছিলেন ১ লাখ ২১ হাজার টাকা। এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে সোয়া দুই লাখ টাকা। আইন পেশা থেকে বছরে দুই লাখ টাকা ও স্থায়ী আমানতের লভ্যাংশ থেকে ২ লাখ ৭ হাজার টাকা আয় করেন।
তবে নগদ টাকা আগের চেয়ে কমেছে নানকের। ২০১৪ সালে তাঁর নগদ টাকা ছিল ১১ লাখ ৪৩ হাজার ও স্ত্রীর কাছে ছিল প্রায় ৮২ লাখ টাকা। এখন তাঁর হাতে নগদ টাকা আছে প্রায় তিন লাখ, তাঁর স্ত্রীর কাছে আছে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা। আগে ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে আগের চেয়ে। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগ ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, এখন আছে ২ কোটি ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। একই খাতে স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ ছিল ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭ টাকা। এখন আছে পৌনে দুই কোটি টাকা।
ঢাকা-১৩ আসনে ৯ম ও ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন নানক। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন নানক।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news