বরিশালের হোটেল রেস্তোরাঁয় মানা হচ্ছে না সরকারি বিধিনিষেধ : এক দরজার রেস্তোঁরার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ভোক্তারা


মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল : বিভাগীয় শহর বরিশাল। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তথ্য মতে বরিশাল মহানগরীয় অঞ্চলে বসবাসরত জনসংখ্যা ৩ লাখ ২৮ হাজার ২৭৮ জন। এছাড়া লঞ্চঘাট ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ,বাজার ও হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার সাধারন মানুষের যাতায়াত। নগরীর ও বাইরের বহু মানুষকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় খেতে হয়। কিন্তু তারা সেখানে কী খাচ্ছে? অভিযোগ আছে, বেশির ভাগ হোটেল-রেস্তোরাঁর খাবারই নিম্নমানের। অনেক রেস্তোরাঁয় পচা-বাসি খাবার পরিবেশন করা হয়। অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাবার তৈরি করা হয়। এদিকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় আইন কানুন আর বিধিমালার কোন বালাই নাই।সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ নোটিশ দিয়েই দ্বায়িত্ব শেষ করে দেয়।
হোটেল-রেস্তোরাঁয় খাবার সংরক্ষণও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। একই ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংস ও রান্না করা খাবার রাখা হয়। খাবারে ক্ষতিকর রং ব্যবহার করা হয়। পোড়া তেল জমিয়ে রেখে দীর্ঘদিন ধরে তা দিয়ে খাদ্য তৈরি করা হয়। স্বাস্থ্য সম্মত নয় এমন খাবারও খাওয়ানো হয় ভোক্তাদের। শুধু ছোটখাটো হোটেল-রেস্তোরাঁই নয়, অনেক নামি-দামি হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও চলছে একই অনিয়ম। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানেও উঠে এসেছে এমন অনেক অনিয়ম। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান খুবই কম।সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নিয়মিত পরিদর্শন নেই বললেই চলে।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ,ফায়ারসার্ভিস,পরিবেশ অধিদপ্তর,বিসিসির স্যানিটারি ইন্সপেক্টরসহ সকলেই নিরব।খাদ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, জনস্বাস্থ্যের প্রতি হুমকিস্বরূপ এই হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর বিরুদ্ধে শুধু সামান্য জরিমানা নয়, কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোর গ্রেডিং পদ্ধতি চালু করেছিল। খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে চার ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করা হয়। ১০০-এর মধ্যে ৯০ নম্বরের বেশি স্কোর হলে ‘এ+’ (সবুজ বর্ণের স্টিকার), স্কোর ৮০ থেকে ৯০-এর মধ্যে হলে ‘এ’ (নীল বর্ণের স্টিকার), ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত স্কোর হলে ‘বি’ (হলুদ বর্ণের স্টিকার) এবং ৪৫ থেকে ৫৫-এর মধ্যে স্কোর হলে ‘সি’ (কমলা বর্ণের স্টিকার) ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়।নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কর্ম কাগজ কলমেই সীমাবদ্ধ।
লাইসেন্স’ ছাড়াই চলছে ৫০ শতাংশ রেস্তোরাঁ:
বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না কোন হোটেল ও রেস্তোরাঁ । অথচ বরিশালে হচ্ছে সম্পূর্ণ উল্টো। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রায় ৫০ শতাংশ রেস্তোরাঁই ব্যবসা করছে লাইসেন্সবিহীন সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। বিপুল সংখ্যক রেস্তোরাঁ লাইসেন্সের বাইরে থাকায় সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। আইন প্রয়োগে প্রশাসনের উদাসীনতায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বেহাত হচ্ছে বলে দাবী সংশ্লিষ্টদের।
হোটেল রেস্তোঁরা মালিক সমিতি বরিশাল শাখার অধীনে সদস্য হোটেল রেস্তোঁরা রয়েছে ৬৫ টি। এছাড়া সমিকির বাইরে রয়েছে অর্ধশতাধিক হোটেল ও রেস্তোঁরা।সব শ্রেণির রেস্তোরাঁর জন্যই রয়েছে ন্যূনতম ২৪ ধরনের বিধি। এর মধ্যে পরিষ্কার রান্নাঘর, রান্না ও বাসনপত্র ধোয়ার কাজে পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার, রান্নায় ভালো তেল ব্যবহার, পরিবেশনকারীদের নির্দিষ্ট পোশাক, উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম, প্রশিক্ষিত বাবুর্চি দিয়ে রেস্তোরাঁ পরিচালনা ইত্যাদি। অথচ বেশির ভাগ হোটেল-রেস্তোরাঁয়ই স্বাস্থ্য সুরক্ষার ন্যূনতম নিয়ম-কানুনও মানা হয় না। তাহলে এসব বিধি-বিধান করে লাভ কী? প্রায় সব হোটেল-রেস্তোরাঁয়ই রয়েছে অনিয়ম। দু-চার দিনের অভিযানে এসব অনিয়ম দূর হবে না। নিয়মিত অভিযান ও তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। রেস্তোরাঁর লাইসেন্স দেওয়ার সময়ই রেস্তোরাঁ পরিচালনার শর্তগুলো যথাসম্ভব যাচাই করে নিতে হবে। কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে সঙ্গে সঙ্গে লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধনের মাধ্যমে হোটেল-রেস্তোরাঁয় অনিয়মের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখতে হবে।
একাধিক রেস্তোরাঁ মালিকদের দাবী, জেলা প্রশাসন কোন সময় লাইসেন্সের বিষয়ে তাগাদা বা নোটিশ দেয়নি। চাপ না আসায় লাইসেন্স নিয়ে কারও মাথাব্যথাও নেই। আবার কেউ কেউ দাবি করছেন, অনেকে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে কোন নিয়ম-কানুন না মেনেই রেস্তোরাঁ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা ‘লাইসেন্স’ নেওয়ার বিষয়টি তোয়াক্কাই করছে না। এছাড়া জেলা প্রশাসনের আইন প্রয়োগে উদাসীনতার সুযোগকেও কাজে লাগাচ্ছে তারা। যারা লাইসেন্সের আওতায় রয়েছে তাদের কেবল সব নিয়ম-কানুন মানতে হচ্ছে। আর যাদের লাইসেন্স নেই তারা কোন নিয়ম-কানুনতো মানছেই না, বরং সবকিছুতেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আইন প্রয়োগে উদাসীন মনোভাব পরিহারের দাবী জানান তারা।
অর্ধেক রেস্তোরাঁয় নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা
বরিশাল নগরীতে ব্যাঙের ছাতার মতো যেখানে-সেখানে গড়ে উঠেছে রেস্তোরাঁ। বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকায় ভবন ভাড়া নিয়ে নির্মিত এসব রেস্তোরাঁর ৫০ শতাংশ বা অর্ধেকে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আইন অমান্য করে এসব রেস্তোরাঁ ব্যবসার কারণে নগরীতে প্রায়ই ঘটছে অগ্নিকাণ্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনা।বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, নগরের অর্ধেক রেস্তোরাঁর ‘ফায়ার লাইসেন্স’ নেই। যেগুলোর আছে সেগুলো নিয়ম মানছে না। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অগ্নিনির্বাপণের শর্ত না মানলে রাজধানীর বেইলি রোডের মতো ট্র্যাজেডি বরিশাল নগরীতেও যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে।গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বরিশাল নগরের রূপাতলী হাউসিং এলাকায় সুগার পেস্টি অ্যান্ড ডাইন রেস্তোরাঁয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই দিন অগ্নিনির্বাপণের দায়িত্বে থাকা একজন ফায়ারম্যান জানান, রেস্তোরাঁর ভেতর সিলিন্ডার ছিল ৫টি। কিন্তু ফায়ার এক্সটিংগুইশার বা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ছিল না। তাঁরা রেস্তোরার মধ্যেই রান্না করেন। পাশে চলে এসি ও ফ্যান। এ কারণেই অগ্নিকাণ্ড ঘটে।ফায়ারম্যান আরও বলেন, তাঁরা আগুন নেভাতে গিয়ে রিজার্ভ পানি পান না। নগরের বাণিজ্যিক এলাকা কাঠপট্টি, চকবাজার, গির্জা মহল্লায় রাস্তার দুই পাশে যেভাবে দোকানগুলো বর্ধিত করেছে তাতে গাড়ি ঢুকানো যায় না।বরিশাল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর আব্বাস উদ্দিন বলেন, রেস্তোরাঁগুলোতে ফায়ার লাইসেন্সের শর্ত মানা হচ্ছে না। উদাহরণ হিসেবে তিনি নগরের রূপাতলীতে সুগার পেস্টি অ্যান্ড ডাইন রেস্তোরাঁর কথা বলেন। রেস্তোরাঁটিতে গত শনিবার অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে কি পরিমাণ রেস্তোরাঁয় ফায়ার লাইসেন্স আছে তা তিনি বলতে চাননি। নগরীর গির্জা মহল্লা, চকবাজার, কাটপট্টি, পুলিশ লাইনস, নবগ্রাম রোড, চৌমাথা, সিঅ্যান্ডবি রোড, রূপাতলী, নথুল্লাবাদ দুই শতাধিক রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশেরই ফায়ার এক্সিট বা জরুরি বহির্গমন পথ নেই। কোনো কোনো রেস্তোরাঁ আবার আবাসিক ভবনে গড়ে উঠেছে।এ সময় গির্জা মহল্লায় নতুন গড়ে ওঠা কাচ্চি ডাইন রেস্তোরাঁয় আসা পশ্চিম কাউনিয়ার এক গৃহবধূ বলেন, ‘এই রেস্তোরাঁয় উঠতে হয় সরু সিঁড়ি দিয়ে। নেমে যাওয়ার আর বিকল্প পথ নেই। এটা আতঙ্কের বিষয়।জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, ভারী খাবার বিক্রির এই রেস্তোরাঁগুলোতে বড় বড় সিলিন্ডার থাকে। যেখানে বের হওয়ার পথ একটিই। আবাসিক কিংবা বাণিজ্যিক এলাকায় এগুলো হলে দুর্ঘটনা তো ঘটবেই। সম্প্রতি নগরের গির্জা মহল্লায় কাচ্চি ডাইন নির্মাণ করা হয়েছে বাণিজ্যিক এলাকায়। তাঁদের এক্সিট পয়েন্টও নেই।রফিকুল আলম প্রশ্ন রেখে বলেন, অগ্নিনির্বাপণ আইন না মানলে ফায়ার সার্ভিস কেন সেসব দোকান বন্ধ করে দেয় না? রাজধানীর বেইলি রোডের মতো ট্র্যাজেডি ঠেকাতে হলে বরিশাল নগর প্রশাসনকে এখনই কঠোর হতে হবে। এটি এখন জীবন-মরণের প্রশ্ন।বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ এইচ এম রাশেদ বলেন, রেস্তোরাঁ করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দরকার হবে। কিন্তু নগরে যেসব নতুন রেস্তোরাঁ গড়ে উঠেছে, সেগুলোর অধিকাংশেরই ছাড়পত্র নেই। যে কারণে পরিবেশসম্মতভাবে এগুলো গড়ে উঠছে কি না— তা খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের (বরিশাল) সহকারী পরিচালক বেলাল উদ্দিন বলেন, বরিশাল নগরীতে যে অপরিকল্পিত অবকাঠামোয় রেস্তোরাঁ গড়ে উঠছে সেগুলোর অধিকাংশই অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো মুহূর্তে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। শর্তানুযায়ী ফায়ার লাইসেন্স নিলেও অধিকাংশই নিয়ম মানছে না। নগরের শতকরা ৫০ ভাগ রেস্তোরাঁর ফায়ার লাইসেন্স নেই। আড়ালে-আবডালে এসব রেস্তোরাঁ গড়ে ওঠার কারণ ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া। আমরা গত ডিসেম্বরে নগরীতে ফায়ার লাইসেন্স না থাকা দোকানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। শিগগিরই আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে।
অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ বিধিমালাটি স্থগিত:মামলার সুযোগ সীমিত
অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩-এ স্পষ্টভাবে বলা আছে, অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত না করলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অভিযুক্ত ভবন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে। মামলায় সর্বনিম্ন ছয় মাসের জেলের বিধানও উল্লেখ আছে। কিন্তু অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত না করার দায়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মামলার তেমন নজির নেই।
এ প্রসঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক বলেন, অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইনের ২০১৪ সালের বিধিমালাটি ২০১৯ সালে একটি মহলের স্বার্থের কারণে স্থগিত করা হয়েছে। এ কারণে মামলার সুযোগ সীমিত হয়ে গেছে। এর পরও মামলা করা যায়, তবে মামলা ১০-১৫ বছর ধরে চলতে থাকে। আবার কর্মকর্তাদের বদলিসংক্রান্ত ঝামেলাও আছে। এ ছাড়া মামলার হাজিরা দিতে গেলে হয়তো সরকারের পক্ষ থেকে যাতায়াত ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু অন্য খরচ দেওয়া হয় না। এ জন্য অনেক সময় মামলা করা থেকে বিরত থাকতে হয়। এর পরও মামলার কাজটা সহজ হতো যদি বিধিমালাটা স্থগিত না থাকত। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সুযোগ আছে। তবে সিটি করপোরশনের যে রকম ম্যাজিস্ট্রেট আছে, ফায়ার সার্ভিসের নেই। এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করা যায় না।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ আকতার মাহমুদ বলেন, বিএনবিসির অধ্যায় ৭-এ ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি স্বাধীন ইমারত নির্মাণ কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা আছে। সেটাও গঠন হয়নি।
বিএনবিসিতে কোথায় কী ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে, তা স্পষ্ট করে বলা আছে। তবে অন্তত ৮০ শতাংশ ভবনে সেসব মানা হচ্ছে না। আবাসিক ভবন, বাণিজ্যিক ভবন, হোটেল, রেস্টুরেন্টের গ্যাস সিলিন্ডারগুলো ভবনের নিচে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার কথা থাকলেও কেউ আমলে নিচ্ছে না। সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে তলায় তলায় গ্যাস সরবরাহের কথা বলা হলেও তা করা হয় না। ভবনগুলো আগুনের সতর্ক করার যন্ত্র, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, পানির রিজার্ভার, ফায়ার এপিট রাখার কথা বলা আছে। মূল নকশা অবজ্ঞা করে ভবন মালিকরা ইচ্ছেমতো কাচ দিয়ে পুরো ভবন মুড়িয়ে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। এতে বড় ধরনের অগ্নিঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। গ্রিন কোজি কটেজের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে তদারক সংস্থা হিসেবে দেখভাল করেনি কেউ ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোঁরা মালিক সমিতি বরিশাল শাখার সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ বিষু বলেন,সমিতি থেকে সরকারি বিধি বিধান পালনের জন্য আমাদের অধীনে থাকা রেস্তোঁরা মালিকদের নির্দেশ দিয়েছি।তিনি বলেন,আমাদের দেয়া সুপারিশ গুলো সরকার বাস্তবায়ন করলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমে আসবে।