বেইলি রোড ট্র্যাজেডি : বাবা-মায়ের পাশেই চির ঘুমে জামিরা


কক্সবাজার প্রতিনিধি: শুল্ক কর্মকর্তা শাহজালাল উদ্দিন সপরিবারে গ্রামের বাড়ি গেলে লোকজনের ভিড় লেগে যেত। পাড়া-প্রতিবেশী আসতেন, খোঁজখবর নিতেন, তাদের ফুটফুটে কন্যা ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে কোলে নিয়ে আদর করতেন। রোববারও কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মরিচ্যা গ্রামে তাদের বাড়ি গমগম করছিল স্থানীয়দের আগমনে। সবাই দেখতে এসেছিলেন এই কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু সবার চোখ বেয়ে ঝরছিল অশ্রু। কেউ কেউ নানা স্মৃতি মনে করে কাঁদছিলেন হাউমাউ করে। কারণ, তাদের সামনে রাখা ছিল শাহজালাল, তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নিসা হেলালী ও তাদের চার বছরের জামিরার নিথর দেহ। জানাজা শেষে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি ভবনের অগ্নিকাণ্ডে নিহত এই তিনজনের লাশ দাফন করা হয়েছে পাশাপাশি কবরে। বেলা ১১টার দিকে মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাদের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। সেখানেও শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। এর আগে মেহেরুন নিসার জানাজা তাঁর বাবার বাড়ি রামুতে পড়ানো হয়। সেখান থেকে মধ্যরাতে তাঁর মরদেহ মরিচ্যায় স্বামীর বাড়িতে আনা হয়।
শাহজালালের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, তিন দিনের ছুটিতে সপরিবারে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল শাহজালালের। সেখানে আর যাওয়া হলো না। বেইলি রোডের আগুনে নির্মমভাবে চিরবিদায় নিয়েছে তারা। লাশ হয়ে ফিরেছে আমার কাছে। ছোট্ট জামিরাকে শেষবারের মতো একটু আদরও করতে পারলাম না। কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।শাহজালালের বাল্যবন্ধু মিজানুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই শাহজালাল অত্যন্ত নম্র স্বভাবের ছিল, কখনও কারও সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে এমন স্মৃতি মনে পড়ে না। শাহজালালের আরেক বন্ধু আশীষ বড়ুয়া বলেন, শাহজালাল বন্ধুদের কাছে অভিভাবকের মতো দায়িত্ব পালন করেছে। কোনো মনোমালিন্য হলে সে মীমাংস করে দিত।শাহজালালের শ্বশুর প্রকৌশলী মোক্তার আহমেদ হেলালী বলেন, দেশে এমন নির্মম মৃত্যু আর যাতে না ঘটে, সেজন্য সরকারের প্রতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়