ফিচার

সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দিতে ববিতার সংগ্রাম

image 778940 1709042017
print news

জামালপুর প্রতিনিধি : অভাব-অনটনের কারণে বাবার ইচ্ছায় অল্প বয়সেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ববিতা রানী দাস। বিয়ের পর সংসারে আসে ফুটফুটে দুই সন্তান। এক সময় পারিবারিক নানান কলহে স্বামীর সংসার ত্যাগ করতে হয় তাকে। ঠাঁই হয় বাবার সংসারে।জামালপুরের মাদারগঞ্জের কড়ইচূড়া ইউনিয়নের বড়ভাংবাড়ি (মিলনবাজার) গ্রামের বাসিন্দা ববিতার ভিটেমাটিসহ কোনো সহায়-সম্বল নেই। দুই সন্তানের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দিতে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চলছে তার জীবন সংগ্রাম।অনেক কষ্টে জীবন চললেও স্বামী পরিত্যক্তা এই নারীর ভাগ্যে এখনো জোটেনি কোনো সহায়তা। ঠাঁই হয়নি সরকারি কোনো আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। দু’মুঠো ভাতের জন্য বেছে নিয়েছেন বাবার শেখানো মুচির পেশা। ফুটপাতে বসে মানুষের জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন তিনি। উপজেলায় তিনিই একমাত্র নারী মুচি।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বড়ভাংবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৩ বছর বয়সি নারী ববিতা রানী দাস। দুই সন্তান জন্মের পর স্বামীর সংসার ছাড়তে হয় তাকে। ববিতা পেটের তাড়নায় বেছে নেন বাবার শেখানো পেশা।এরই মধ্যে ববিতার শরীরে বাসা বেঁধেছে নানান রোগ। টাকার অভাবে হচ্ছে না চিকিৎসা। দু’বেলা পেটে ভাত জুটানোই যেখানে দায়, সেখানে চিকিৎসা করাবেন কীভাবে! নিজের এলাকায় অনেক বিত্তবান ও রাজনৈতিক ব্যক্তি থাকলেও তার খোঁজ নেওয়ার মতো কেউ নেই।

নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরে ববিতা যুগান্তরকে বলেন, বাবার মৃত্যুর পর বাধ্য হয়ে এ পেশায় এসেছি। অবুঝ দুই সন্তান নিয়ে খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। ভাঙা ঘরে দুটি শিশু বাচ্চা নিয়ে থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এলাকার বিত্তবানরা একটু সহযোগিতা করলে অনেক উপকার হয়। বাবার বাড়িতে বোঝা হয়ে থাকতে চাই না।তিনি আরও বলেন, নারী হয়ে ফুটপাতে বসে অন্যের জুতা মেরামত করি বলে অনেকে আমার কাছে আসেন না। তাই আমি কম টাকায় জুতা সেলাইয়ের কাজটি নিপুণভাবে করে দিই। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে যা আয় হয়, তা দিয়ে ঠিকমতো সংসার চলে না।সংগ্রামী এই নারী জানান, অনেক সময় অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটলেও তার ভাগ্যে আজও জোটেনি কোনো সরকারি সহায়তা।এলাকাবাসী বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের পথে তখন অভাবের তাড়নায় ববিতার জুতা সেলাইয়ের কাজ খুবই দুঃখজনক। সমাজে অনেক বিত্তবান মানুষ রয়েছেন। তারা চাইলেই ববিতার জীবনমান বদলানো সম্ভব।স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বলেন, ববিতা জুতা সেলাইয়ের কাজটি পুরুষ কারিগরের মতোই করেন। তার সহযোগিতায় সবার এগিয়ে আসা উচিত।কীটনাশক ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন শাহীন বলেন, সবক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ থাকলেও মুচির কাজে তাদের খুব একটা দেখা যায় না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী ববিতা। তার কষ্টে আমাদের খারাপ লাগে।সমাজে যারা ববিতার মতো অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছেন, তাদের সাহায্যে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *