ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স : ফেরত দিচ্ছে না আমানতের টাকা


ঢাকা প্রতিনিধি :ফারইস্টের গ্রাহকরা আমানতের টাকা ফেরতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সংশ্লিষ্ট শাখায় বারবার যোগাযোগ করেও সাড়া মিলছে না কর্তৃপক্ষের। স্থানীয় অফিসের গ্রাহকরা পাত্তা না পেয়ে আইডিআরএতে অভিযোগ করছেন অনেকে।পলিসির মেয়াদপূর্তি হওয়ার পরেও আবেদন করে আমানত তুলতে ব্যর্থ হচ্ছেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গ্রাহকরা। নির্ধারিত সময়ে আমানত না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন গ্রাহকরা। টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বারবার তারিখ পোঁছানো হচ্ছে। প্রদত্ত তারিখে গিয়েও মিলছে না সাড়া- এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী গ্রাহকদের। গ্রাহকদের শেষ আশ্রয় এখন আইডিআরের (ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট রেগুলেটরি অথরিটি) কাছে।কুমিল্লা থেকে জামাল হোসেন জানান, ৬ বছর আগে ৫ বছর মেয়াদি বীমা করেন তিনি। এরপর প্রায় দেড় বছর আগে তার পলিসি পরিপক্ব হয়। এখন আমানতের তিন লাখ বিশ হাজার টাকা ফেরত পেতে নিয়মিত কোম্পানির স্থানীয় অফিসে যান। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিচ্ছে না। টাকা দেওয়ার কথা বলে বারবার তারিখ দেওয়া হয় জামাল হোসেনকে। নির্ধারিত তারিখে গিয়ে পান না টাকা। আবার দেওয়া হয় নতুন তারিখ। চতুর্থবারেও টাকা না পেয়ে তিনি অভিযোগ জানাতে সরাসরি চলে যান আইডিআরে।আজাদ নামের একজন বীমা দাবিদার জানান, প্রায় ১৫বছর আগে দশ বছর মেয়াদি বীমা করেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে তার পলিসির মেয়াদ পূর্ণ হলেও বারবার সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করেও মিলছেনা কোনো সুরাহা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফারইস্টের এক কর্মকর্তা জানান, বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে এমন অনেক গ্রাহক তাদের আমানত ফিরে পেতে প্রতিদিন কোম্পানির স্থানীয় অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন।এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কুমিল্লা শাখার কর্মকর্তা আব্দুল মুবিন জানান, আমরা ক্যাশ সংকটের কারণে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করতে পারতেছি না।বছরের পর বছর অপেক্ষার পরও নানাভাবে বীমা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ গ্রাহকরা। তবে এমন পরিস্থিতির জন্য ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্তকে দুষছে স্থানীয় বীমা অফিসগুলো।
নাম গোপন রাখার শর্তে একাধিক গ্রাহক জানান, তারা কেউ মাটিকাটার কাজ করে, কেউ-বা রিকশা চালিয়ে তিলে তিলে টাকা সঞ্চয় করে এখানে জমা রেখেছেন। বীমার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না তারা।এ বিষয়ে জানার জন্য ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুর রহিম ভুঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না, তবে এটুকু বলতে পারি আমাদের কিছুটা ক্যাশ সংকট রয়েছে।কতজন গ্রাহকের পলিসি আটকে আছে, কি কারণে আটকে আছে এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তথ্য দিতে অপরাগতা জানান এই কর্মকর্তা।এর আগে গত ডিসেম্বরে মধ্যে বীমা গ্রহীতাদের পাওনা টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আইডিআরএ। ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের প্রিমিয়াম আয়, বিনিয়োগ হতে আয় ও লাইফ ফান্ড থেকে আয় অন্য কোনো খাতে খরচ না করার নির্দেশ দিয়েছিলো বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বীমা দাবি পরিশোধের জন্য বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তা নিষ্পত্তিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তেমন কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়