ইত্তেহাদ এক্সক্লুসিভ

বরিশাল আইএইচটির হোস্টেল সুপার ডা. সানজিদার বিরুদ্ধে আন্দোলনের খেসারত দিচ্ছে ১৩ শিক্ষার্থী

4a3aab2c6e4ec420f6094476bddc8f47
print news

বাংলা ট্রিবিউন: বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) সহকারী অধ্যাপক ও হোস্টেল সুপার ডা. সানজিদা শহীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় খেসরাত দিতে হচ্ছে ১৩ শিক্ষার্থীকে। আকস্মিকভাবে ওই শিক্ষার্থীদের হোস্টেল থেকে কেন বহিষ্কার করা হবে না উল্লেখ করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকে শিক্ষাজীবন নিয়ে উৎকণ্ঠায় পড়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা। এ দিকে, হোস্টেল সুপার সানজিদার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি কারণে-অকারণে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেন, পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের ভয় দেখান। তাছাড়া, ছাত্রাবাসের সুপার পুরুষ শিক্ষক হওয়ার কথা থাকলেও ওই পদে আছেন ডা. সানজিদা।ছাত্রাবাসের ১০টি কক্ষের ১০ জনকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন– ৩১৮ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের মো. সোহেল, ৩০৬ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের মো. ঈসা, ৫০১ নম্বর কক্ষের ল্যাবরেটরি বিভাগের সাবিত হাসান, ৩০৭ নম্বর কক্ষের ফিজিওথেরাপি বিভাগের জহিরুল ইসলাম, ৩০১ নম্বর কক্ষের ডেন্টালের ফারদিন ইসলাম, ৫০৩ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের তাহমিদুল হক, ২১৫ নম্বর কক্ষের ল্যাবরেটরি বিভাগের আল শাহরিয়ার, ২১২ নম্বর কক্ষের ফার্মেসি বিভাগের হাসানুর রহমান, ২০৩ নম্বর কক্ষের ফিজিওথেরাপির সজীব ঘরামী এবং একই কক্ষের ডেন্টালের সৈকত পাল।

নোটিশ পাওয়া ছাত্রীনিবাসের তিন শিক্ষার্থী হলেন– ৪১৬ নম্বর কক্ষের রেডিওলজি বিভাগের সানমুন জাহান বুশরা, একই বিভাগের ৪০৯ নম্বর কক্ষের আছমিতা আহম্মেদ মিম এবং ৩১৮ নম্বর কক্ষের রেডিওথেরাপি বিভাগের শারমিন জাহান মুক্তা।ল্যাবরেটরি বিভাগের আল শাহরিয়ার জানান, এক মাসের বেশি সময় তিনি বাড়িতে অবস্থান করে হোস্টেলে আসেন। আসার পরপরই হল সুপার ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের একটি তালিকা হল ও একাডেমিক ভবনের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেন। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে হোস্টেলের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়। এক মাস হোস্টেলে না থেকেও কীভাবে আইনশৃঙ্খলা অমান্য করলেন জানেন না আল শাহরিয়ার।তিনি বলেন, সবার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হয়েছে। আসলে এটা বানানো কাহিনী। গত বছর মেয়েদের হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করেন শিক্ষিকা সানজিদা। ওই সময় তাকে এ কলেজ ক্যাম্পাস থেকে সরাতে মহাপরিচালক বরাবর আবেদন এবং বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। সিদ্ধান্ত হলেও প্রভাবশালী এক ব্যক্তির পরিচয়ে তাকে সরানো হয়নি। আন্দোলনে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, এখন তিনি তাদের ‘সাইজ’ করার মিশনে নেমেছেন।শাহরিয়ার বলেন, জুনিয়র শিক্ষার্থীদের সামনে মাদক সেবনের মিথ্যা অজুহাত তুলে অপমান করা হয়। তার বিরুদ্ধাচরণ করলে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার এবং ভ্যানিটি ব্যাগে লাইসেন্স করা অস্ত্র রয়েছে বলেও শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান।ল্যাবরেটরি বিভাগের সাবিত হাসান বলেন, একই কারণে এ বছর জানুয়ারি মাসে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষায় ফিজিওথেরাপি বিভাগের জহিরুল ইসলাম ও রেডিওলজি বিভাগের আছমিতা আহম্মেদ মিমকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাদের কোনও দোষ ছিল না। শিক্ষিকা সানজিদা নকলের অভিযোগ তুলে তাদের বহিষ্কার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দুই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করতে গেলে সহপাঠীরা তাদের রক্ষা করেন। তাদের দোষ ছিল তারা সানজিদা শহীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ছিলেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থী বলেন, কোনোভাবে তার বিরুদ্ধাচরণ করা যাবে না। তার বিরুদ্ধে গেলে সেমিস্টারে অকৃতকার্য করে রাখা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক ও হল সুপার ডা. সানজিদা শহীদ বলেন, শিক্ষার্থীদের পুলিশ কিংবা অস্ত্রের ভয় দেখানো হয় না।তিনি ভ্যানিটি ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে অস্ত্র রয়েছে কিনা এই প্রতিবেদককে দেখতে বলেন। সানজিদা জানান, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় তিনি এ নোটিশ দেননি। হোস্টেলে ওই শিক্ষার্থীদের কর্মকাণ্ড ভালো না থাকায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা লিখিত জবাব দেবে। তবে তারা কী ধরনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি এই শিক্ষিকা।

নিয়মানুযায়ী ছাত্র হোস্টেলে কোনোভাবেই একজন নারী দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, যে সময় আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, ওই সময় কোনও পুরুষ শিক্ষক ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে অধ্যক্ষ আমাকে হল সুপারের দায়িত্ব দেন। অধ্যক্ষ ডা. মানুষ কুন্ডু নোটিশের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের চাপে রাখার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।ছাত্র হোস্টেলে কীভাবে একজন নারীকে হলসুপার করা হলো প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, পুরুষ শিক্ষক না থাকায় তাকে হলসুপার করা হয়।ক্যাম্পাস সূত্র থেকে জানা গেছে, ওই সময় কলেজে দুই জন পুরুষ শিক্ষক ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে ছাত্রীদের হিজাব নিয়ে কটাক্ষ করায় শিক্ষার্থীরা ডা. সানজিদার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। এর আগে ডা. সানজিদা শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজে ফিজিওলজি, কমিউনিটি মেডিসিন ও বায়োক্যামিস্ট্রি বিভাগের লেকচারার ছিলেন। এ বিষয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. অহিদা সুলতানা বাংলা বলেন, তার মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের ভাবটা বেশি। এ কারণে বিভাগে কিছুটা হলেও সমস্যা সৃষ্টি হতো।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *