বাংলাদেশ চট্টগ্রাম

নাবিকের ভুলে জলদস্যুদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে যায় এমভি আবদুল্লাহ!

sa 1711496398
print news

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :   ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়া নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। জাহাজটি উদ্ধারে সময় ক্ষেপণের সঙ্গে নাবিক-ক্রুদের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক নিয়েও বিস্তর আলোচনা হচ্ছে শিপিং সেক্টরে। প্রশ্ন উঠেছে, জলদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার সুযোগ থাকলেও কেন নাবিকরা তা কাজে লাগায়নি।

অভিযোগ উঠেছে, তিন নাবিকের ভুলে জলদস্যুদের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে যায় এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুদের তৎপরতা আঁচ করতে পেরে ২০ জন নাবিক জাহাজটির গোপন কক্ষে চলে যান। ব্রিজ এবং ব্রিজের নিচে থেকে যান শুধু তিন নাবিক। তাদের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গোপন কক্ষে যাওয়া ২০ নাবিককে একে একে ব্রিজে নিয়ে আসা হয়। এরপর পুরো জাহাজের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জলদস্যুদের হাতে। তবে সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকরা অনেকে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা বলছেন, সিটাডেল বা গোপন কক্ষে তখনই নাবিকরা যান যখন কারও সহায়তার ব্যাপারে আশ্বাস পান। এর আগে গোপন কক্ষে যাওয়ার সুযোগ নেই। এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা সাহায্যের কোনো আশ্বাস পাননি। নাবিকদের এ ব্যাপারে দোষারোপ করা যাবে না।

শিপিং সেক্টরের সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিটি বাণিজ্যিক জাহাজসহ বড় জাহাজে একটি গোপন কক্ষ থাকে। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে গেলে নিয়ম অনুযায়ী নাবিকরা ওই কক্ষে আশ্রয় নেন। ওই কক্ষ সিটাডেল নামে পরিচিত। সিটাডেল অনেকটা দুর্ভেদ্য দুর্গের মতো। জাহাজ নির্মাণের সময়ই এ কক্ষ নির্মাণ করা হয়। এ কক্ষে বিপদের সময় আশ্রয় নেন নাবিক ও ক্রুরা। জলদস্যুরা ছাড়াও যেকোনো ধরনের সামরিক আক্রমণের সময় সিটাডেলে আশ্রয় নেন। ওই কক্ষে ভেতর থেকে দরজা আটকে দিলে সেখানে কোনোভাবে প্রবেশের সুযোগ নেই কারও। কক্ষটি বুলেট প্রুফ। সেখানে জরুরি প্রয়োজন মেটানোর মতো খাবার মজুদ থাকে।সুরক্ষিত সিটাডেল মর্টারশেলের আঘাতেও ভাঙা যায় না। গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে। জলদস্যুরা এমভি আবদুল্লায় উঠে পড়ার সময় নিয়ম মেনে ২০ জন নাবিক-ক্রু সিটাডেলে আশ্রয় নেন। কিন্তু জাহাজের ব্রিজে থেকে যান মাস্টার এবং সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। ব্রিজের নিচেও ছিলেন একজন সেকেন্ড অফিসার। ব্রিজে নাবিকদের জিম্মি করে জলদস্যুরা সিটাডেলে আশ্রয় নেওয়া নাবিকদের বের করে আনেন। এরপর সবাইকে ব্রিজে আটকে রেখে জাহাজের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, জলদস্যুরা জাহাজে উঠে যাওয়া কিংবা আক্রান্ত হওয়ার সময় নাবিকদের বেশির ভাগই সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অর্থাৎ সিটাডেল নামে জাহাজের দুর্ভেদ্য গোপন কক্ষে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু কয়েকজন বাইরে থাকায় এবং গোপন কক্ষে অন্যদের মতো আশ্রয় না নেওয়ায় জলদস্যুরা মূলত নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করার সুযোগ পায়। সবাই যদি সিটাডেলে আশ্রয় নিত তবে জলদস্যুরা সহজে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারত না।

তবে এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন সমুদ্রগামী জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউএ খান। তিনি  বলেন, সিটাডেলে নাবিকরা তখনই আশ্রয় নেন যখন তাদের উদ্ধারের জন্য কারও আশ্বাস মেলে। এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা জলদস্যুদের কবলে পড়ার সময়ে ক্যাপ্টেন আশপাশের জাহাজগুলোর কাছে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এসওএস বার্তা নামে পরিচিত ওই বার্তা পাওয়ার পর কারও কোনো সাড়া মেলেনি। এ অবস্থায় সিটাডেলে যাওয়াই বিপজ্জনক। সেখানে স্যাটেলাইট ফোন ছাড়া আবদ্ধ থাকা কঠিন। কেউ কমান্ডো অভিযান চালাবে এ রকম আশ্বাস পেলে কয়েক ঘণ্টার জন্য কেবল নাবিকরা সিটাডেলে যেতে পারত। এ ক্ষেত্রে নাবিকদের কোনো দোষ নেই। তারা কারও আশ্বাস না পেয়ে সিটাডেলে না গিয়ে ভালোই করেছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *