বরিশালের দু’ চিকিৎসকের বিচার চাওয়ায় হুমকি,নিরাপত্তাহীনতায় অভিযোগকারী আমান


বরিশাল অফিস : সুমাইয়াকে বিয়ে করেছিলেন আব্দুল্লাহ আল আমান।সুখে শান্তিতে সুখের সংসার ছিল। হাসিতে খুশিতে সন্তানের মুখ দেখার জন্য ২৯ এপ্রিল ডাঃ খালিদ মাহমুদের অধীনে বরিশাল মেট্রোপলিটন হাসপাতালে স্ত্রী সুমাইয়াকে ভর্তি করান। সুমাইয়া হাসপাতালে বসে একটি হাস্যোজ্জল ছবি তোলেন পরিবারের সকলকে নিয়ে।রাতে নরমাল ডেলিভারীতে একটি মৃত সন্তান জন্ম দেয়।ডাঃ খালিদ মাহমুদ ও ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হক এ দুজন আমানসহ তাদের পরিবারের লোকজনদের অগোচরে সুমাইয়াকে অপারেশন করান। এ অপারেশনই কাল হলো। মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে সুমাইয়া।আমানের চোখের সামনে দুটো লাশ।চারদিক অন্ধকার। হাসির বদলে কান্নার রোল।অপারেশন থেয়েটারে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে ডাঃ খালিদ মাহমুদ ও ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হক পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন:
বরিশালের দু’ চিকিৎসকের বিচার দাবীতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে স্বজনদের অভিযোগ
আমানের চারদিকে অমানিশার ঘোর।কি করবে বুঝে উঠতে পারছেনা।সুমাইয়াকে ভুল অপারেশন,অপচিকিৎসা ও অবহেলার অভিযোগ এনে আব্দুল্লাহ আল আমান স্বাস্থ্য সচিব ও সিভিল সার্জনের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ দেয়ার পরেই ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হক ও ডাঃ খালিদ মাহমুদের লোকজন আমানকে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য একদিকে হুমকি অপরদিকে সমঝোতার প্রস্তাব দেন বলে আমান জানান।
আরও পড়ুন:
বরিশালে ডাক্তারের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু’র অভিযোগ : চুপ মেট্রোপলিটন হাসপাতাল
আমান বলেন, ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হকের শশুর বাড়ির একাধিক লোক আমার বাসায় গিয়ে সমঝোতার নামে ঘটনাটি চেপে যাওয়ার কথা বলে আর্থিক সহযোগীতার প্রস্তাব করেন।সমঝোতায় না গেলে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।এসব হুমকির কথা রেকর্ডিং করে আমান।
ডাঃ মুবিনুল হকের স্বজনরা আমানের ভাই ও মা কে আর্থিক প্রস্তাব দেন ।এছাড়া শালিশ মিমাংসার প্রস্তাব দেন।গত বৃহস্পতিবার বেলা এগারটার দিকে এ হুমকি দেয়া হয়।আমান বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তানকে হারিয়ে ভালো নেই। তারপরের একের পর এক হুমকি আমাকে নিরাপত্তাহীন করে ফেলেছে।তাদের হুমকিতে আমি বৃহস্পতিবার থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমান বলেন,আমি কি বিচার পাবোনা। তাদের খুটির জোড় কোথায়।তারা কিভাবে আমার সন্তান ও স্ত্রীকে হত্যা করে আবার আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়।তিনি আইন শৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন। আমান স্বাস্থ্য সচিব,বিএমডিসি কর্তৃপক্ষ ও সিভিল সার্জনের নিকট দায়ী ডাঃ খালিদ মাহমুদ ও ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হকের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানান। ডাঃ মুবিনুল হক দম্ভোক্তি করে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়সহ সবখানটাই গুজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কিছু হবেনা বলে জনান সাংবাদিকদের।
আরও পড়ুন:
বরিশালে রোগী নিহত ও পঙ্গু করনের পরেও সর্বরোগের ডাঃ মুন্সী মুবিনুল হক বহাল তবিয়তে
প্রসঙ্গগত, ডাঃ খালিদ মাহমুদ বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালে এবং ডাঃ মুন্সি মুবিনুল হক বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আবাসিক মেডিকেল সার্জন হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এ দু’জন ডাক্তার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে দালাল প্র্যাক্টিসে জড়িত।তারা দালালদের মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করে বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন এবং রোগীদের অপারেশন করান।
উল্লেখ্য,২৯ এপ্রিল সুমাইয়াকে বরিশালের কালিবাড়ি রোডস্থ বরিশাল মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতেই অপারেশন করা হয় ওই হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হলে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।শেষ রাতে হাসপাতালের আইসিউতে মৃত্যু বরন করেন সুমাইয়া। শুরু থেকেই পরিবারের অভিযোগ, কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ভুল অপারেশন ও অবহেলায় বাঁচানো যায়নি সুমাইয়াকে। রোগীর মৃত্যর আগে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি মৃত শিশু প্রসব করে সুমাইয়া।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়