বরিশালে অধ্যক্ষের বাসায় কাজ করতে গিয়ে ১৩ সেলাই নিয়ে চিকিৎসাধীন কলেজের পিয়ন


বরিশাল অফিস : বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এহতেশামুল হক জোড়পুর্বক হুমকি দিয়ে কলেজের পিয়ন তপন কুমার শীলকে দিয়ে তার বাস ভবনের ছাদে বানানো অবৈধ রান্না ঘরের কাজ করাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন তপন। মারাত্মকভাবে পায়ের রগ কেটে গুরুতর আহতাবস্থায় শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।দেয়া হয় ক্ষতিগ্রস্থ বাম পায়ে তের সেলাই।বর্তমানে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের তৃতীয় তলায় অর্থোপেডিক্স পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে তপন কুমার শীল। ২৮ মে’২৪ তারিখ দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ আমির হোসেন জানান,ঘুর্নিঝড় রিমলের কারনে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এহতেশামুল হকের বাসার ছাদে বানানো অবৈধ রান্না ঘরের টিন এলোমেলো হলে সেই কাজ করতে গিয়ে টিনে কলেজের পিয়ন তপন কুমার শীলের বাম পায়ের আঙ্গুলের রগ কেটে যায়।এতে তপনের পায়ে প্রায় তেরটি সেলাই দেয়া হয়েছে।বর্তমানে তপন হাসপাতালের অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসক জানিয়েছেন,তপন নামে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের একজন অফিস সহায়ক অর্থপেডিক্স (পুরুষ) ওয়ার্ডের ৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।তাকে ২৮ মে দুপুর একটা চল্লিশ মিনিটে ভর্তি করা হয়েছে।নার্স নিপু তপনকে রিসিভ করেছেন। কর্মরত নার্সরা জানিয়েছেন, তপন সরকারি কর্মচারী তাই ফ্রিতে ভর্তি করা হয়েছে ।তার ভর্তি রেজিষ্ট্রেশন নম্বর ১৮৭৩১২/১৫৪ । এ ব্যাপারে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তপন কুমার শীল কথা বলতে নারাজ।
আরও পড়ুন: বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের এসি অধ্যক্ষের বাসায়
কলেজের বিশ্বস্ত একটি সুত্র জানায়,বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ পদে প্রফেসর মোহাম্মদ এহতেশামুল হক যোগদানের পরেই বাস ভবনের ছাদে অবৈধ ভাবে রান্নাঘর বানিয়ে কলেজের গাছ কেটে লাকড়ি বানিয়ে রান্না করেন।উজাড় করে দিচ্ছেন কলেজের অভ্যান্তরে থাকা গাছগুলো।
কলেজের টাকায় বেতন দিয়ে কুলসুমসহ একাধিক কর্মচারীকে দিয়ে রান্নাসহ বাসার কাজ করান অধ্যক্ষ । এহতেশামুল হক কলেজের স্থায়ী ও খন্ডকালীন পিয়নদেরকে চাকুরী থেকে বহিস্কার, এসিআর খারাপ দেয়া,বেতন বন্ধ করার হুমকি দিয়ে রান্নার কাজ,রান্নাঘরের মেরামত, বাসা পরিস্কারসহ ব্যক্তিগত কাজ করানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সুত্র জানায়,অবৈধ রান্নাঘর মেরামত কাঠ মিস্ত্রির কাজ হলেও অফিস সহায়ক তপনকে দিয়ে করানোর ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া ঘুর্নিঝড় রিমেলের কারনে কলেজের গাছ পরে গেলে তা গত সোমবার কলেজের পিয়নদের দিয়ে কাজ করানো হয়।কলেজটির চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের দিয়ে অধ্যক্ষের বাসা ও ব্যক্তিগত কাজ করানোর ফলে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ কথা বলেনা চাকুরী যাওয়ার ভয়ে।
এ ব্যাপারে বরিশাল সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এহতেশামুল হকের মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এহতেশামুল হকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ লোপাট, দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ । কলেজটিতে যোগদানের পর থেকেই কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী,শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অতিষ্ঠ।
অধ্যক্ষ এহতেসামকে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সকলেই। মাউশি, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, প্রশাসনসহ কলেজের সকলেই তার আচরনে বিরক্ত।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়