ইসলামী ব্যাংকের লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েব


ইত্তেহাদ নিউজ,চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরে চকবাজার শাখার ইসলামী ব্যাংকের লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালংকার গায়েব হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ২৯ মে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানাজানি হয় আজ শনিবার (১ জুন)। লকার থেকে গায়েব হওয়া সোনার দাম প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, লকার থেকে গায়েব হওয়া ১৫০ ভরি স্বর্ণালংকারের মধ্যে রয়েছে ৬০ ভরি ওজনের ৪০ পিস হাতের চুড়ি (বড় সাইজ), ২৫ ভরি ওজনের গলা ও কানের ৪টি জোড়া সেট, ১০ ভরি ওজনের একটি গলার সেট, ২৮ ভরি ওজনের ৭টি গলার চেইন, ১৫ ভরি ওজনের ৪টি আংটি এবং ১১ ভরি ওজনের ৩০ জোড়া কানের দুল।
রোকেয়া বারীর ছেলে ডাক্তার রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘মা ২০০৭ সাল থেকে এই শাখায় তার স্বর্ণের গহনা রাখার জন্য লকার ব্যবহার করে আসছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে লকার রুমের ইনচার্জকে তার লকার দেখার অনুরোধ করেন। মায়ের কাছে লকারের মূল চাবি আছে এবং আরেকটি ডুপ্লিকেট চাবি ইনচার্জের কাছে থাকে।
তিনি বলেন, ‘তারা দুজন লকার রুমে প্রবেশ করেন। তখন ইনচার্জ প্রথমে দেখেন যে মায়ের লকারটি খোলা। আমার মা লকারটি পরীক্ষা করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বিষয়টি জানাই এবং চকবাজার থানার ওসি লকার রুম দেখে গেছেন। বুধবার রাতেই সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওসি আমাদেরকে বলেন মামলা করতে। আমরা পরিবারের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছি। এ বিষয়ে সোমবার আদালতে অভিযোগ দায়ের করব।ব্যাংক কর্মকর্তারা আমাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন যে তারা ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত দল গঠন করেছেন এবং সাত দিনের মধ্যে সঠিক ঘটনা উদঘাটন করবেন,’ যোগ করেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর রাত সাড়ে ৮ টায় দেশ জানান, গত ২৯ মে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত ইসলামী ব্যাংকের ওই শাখায় যান তিনি। গায়েব হওয়া স্বর্ণালংকারের মালিক রোকেয়া বারী নামে এক নারী। ভুক্তভোগীকে থানায় মামলা করতে বলেছিলাম। কিন্তু পরে আসবেন বলে তিনি আজও থানায় আসেননি। রোকেয়া বারী নগরের চট্টেশরী রোডের বিটিআই বেভারলী হিলসের বাসিন্দা। লকার থেকে সোনা গায়েবের বিষয়টি পুলিশের কাছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে বলে জানান ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর।
ওসি জানান, ১৭ বছর ধরে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার লকার ব্যবহার করে আসছিলেন ভুক্তভোগী নারী রোকেয়া বারী। গত (২৯ মে) দুপুরে ব্যাংকের লকার থেকে কিছু স্বর্ণালংকার আনতে যান তিনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তাকে লকার রুমের দরজা খুলে দেন। এরপর তার জন্য বরাদ্দ রাখা লকারের কাছে গিয়ে সেটি খোলা দেখতে পান রোকেয়া। লকারে মাত্র ১১ ভরি স্বর্ণালংকার অবশিষ্ট দেখতে পান রোকেয়া। এরপর দ্রুত ঘটনাটি জানালে ঘটনাস্থলে আসেন চকবাজার থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর।
এ বিষয়ে জানতে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার ম্যানেজার শফিকুল মাওলার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) আকিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি দেখছি। গ্রাহকের কাছে মূল চাবি আছে, কিন্তু আমাদের কাছে নেই। তিনি এক মাস আগে ব্যাংকে এসে লকারটি পরীক্ষা করেছিলেন। আমাদের কাছে কোনো গ্রাহকের লকারের সঞ্চয় সম্পর্কে তথ্য থাকে না। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়