খাঁচার মধ্যে থাকাটা অপমানজনক: ড. ইউনূস


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আদালতে শুনানি চলাকালে একজন নিরপরাধ নাগরিকের একটা লোহার খাঁচার ভেতরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়টি অত্যন্ত অপমানজনক ও গর্হিত কাজ বলে মনে হয়েছে। আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। অনেক হয়রানির মধ্যে আছি। সেটারই অংশ, এটা চলতে থাকবে। আজকে সারাক্ষণ খাঁচার মধ্যে ছিলাম আমরা সবাই মিলে। যদিও আমাকে বলা হয়েছিল যে, আপনি থাকেন। আমি বললাম, সবাই যাচ্ছে, আমিও সঙ্গে থাকি। সারাক্ষণই খাঁচার ভেতরে ছিলাম।
বুধবার (১২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। এ দিন টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলায় বিচার শুরু হলো।
ড. ইউনূস বলেন, আমি আগেও প্রশ্নটা তুলেছি, আবারও সবার জন্য তুলছি। এটা কি ন্যায্য হলো নাকি? আমার বিষয় না, যেকোনো আসামি – যার বিরুদ্ধে এটা করতে যাচ্ছে, তাকে খাঁচায় নিয়ে যাওয়া। আমি যতটুকু জানি, যতদিন আসামি অপরাধী প্রমাণিত না হচ্ছে, ততদিন তিনি নির্দোষ-নিরপরাধ। একজন নিরপরাধ নাগরিককে একটা লোহার খাঁচার ভেতরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে আদালতে শুনানি চলাকালে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক।
তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং, আত্মসাৎ, প্রতারণা – এই শব্দগুলোর সঙ্গে আমার কিছু আছে আমি তো জানি না। এটা আমি শিখিনি কোনদিন, কোনদিন করিনি। হঠাৎ করে শব্দগুলো আমার ওপর আরোপ করা হচ্ছে। সেটার বিচার হবে, সেটা বুঝতে পারছি না। সেটা কেন হয়, এটাই হলো হয়রানি আমার কাছে। আমার কাছে, আমার সহকর্মীদের কাছে বোধগম্য হচ্ছে না। যারা আইনজ্ঞ আছেন, তারা এই বিষয়টি বিবেচনা করে দেখুক। সারা পৃথিবীতে যে সভ্য দেশগুলো আছে, আমরা তাদের মধ্যে পড়ি কিনা এটাও বিবেচনা করে দেখতে হবে।
আমরা সারা জীবন মানুষের সেবায় কাটিয়েছি, অর্থ আত্মসাৎ কেন করতে যাবো – এমন প্রশ্ন রেখে তিনি আরও বলেন, আমাকে নানা ধরনের কথা বলে হয়রানি করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো আমি বারবার বলেছি। আমাকে বলা হচ্ছে সুদখোর, অর্থআত্মসাৎকারী। আমি পদ্মা সেতুর টাকা আটকিয়ে দিয়েছি। এসব কথা বারবার বলা হচ্ছে। এভাবে বারবার হয়রানি করা হচ্ছে। আমাকে ২০১১ সালেই বলা হয়েছে রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে। আমি বারবার বলেছি এটা আমার বিষয় না। আমি রাজনৈতিক দল গঠন করবো না।
প্রসঙ্গত, আজও দুদকের মামলায় লোহার খাঁচায় দাঁড়াতে হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। বুধবার দুপুর ১১টা ৫ মিনিটে প্রবেশ করেন ড. ইউনূস। হাজিরা নেওয়ার জন্য বিচারক ড. ইউনূস ও পারভীন মাহমুদ ছাড়া সবাইকে লোহার খাঁচায় প্রবেশ করতে বলেন। আদালতের নির্দেশে ১২ আসামি ডকে প্রবেশ করেন। তাদের সঙ্গে ড. ইউনূসও ১১টা ৪৭ মিনিটে লোহার খাঁচায় প্রবেশ করেন। লোহার খাঁচায় দাঁড়িয়েই চার্জ গঠনের আদেশ শুনেন তিনি। আদেশ শেষে ১২টা ৩ মিনিটের দিকে লোহার খাঁচা থেকে বের হয়ে আসেন ড. ইউনূসসহ সব আসামি।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়