রাজনীতি

রাজনীতি অবশিষ্ট নেই: রয়টার্সে সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস

dr yunus 1
print news

বাংলাদেশে আর রাজনীতি বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। একটিমাত্র দল সক্রিয়। তারাই সবকিছু দখল করে আছে। তারাই সব করে। নির্বাচনও হয় তাদের মতো। সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্যই করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ক্ষমতাসীন দল রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা দেশ থেকে বিদায় করেছে বলে মনে করেন তিনি।

গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়লাভ করেন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবারও এই নির্বাচন করেছে। নির্বাচনের আগে দলটির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই জেলে অথবা নির্বাসনে ছিলেন।

২০০৬ সালে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস বরাবর অভিযোগ করে আসছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িত। আর বাংলাদেশে প্রকৃত রাজনৈতিক বিরোধীর অভাব রয়েছে।

গত সপ্তাহে রাজধানী ঢাকায় নিজের অফিসে রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার দেন ৮৩ বছর বয়সী ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি অবশিষ্ট নেই। একমাত্র দল আছে, যারা সক্রিয় এবং সবকিছু দখল করে আছে, তারাই সবকিছু করে, তারাই নির্বাচনে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা (ক্ষমতাসীন দল) তাদের লোকদেরই বিভিন্ন রূপে নির্বাচিত করে। দলীয় প্রার্থী, ডামি প্রার্থী, স্বতন্ত্র প্রার্থী— ইত্যাদি রূপে সবাই একই দলের লোক।’

সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অবশ্য ড. ইউনূসের এসব মন্তব্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত নন। তিনি টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ‘শুধু আমিই একমত নই এমন নয়, দেশের জনগণও তাঁর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবে।’ তিনি বলেন, ‘এ দেশে গণতন্ত্র পুরোপুরি কার্যকর।’

বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে অর্থনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। যদিও সমালোচকেরা তাঁকে ভিন্নমত দমনের জন্য অভিযুক্ত করেন।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরও নির্বাচনে ‘ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার’ নিন্দা করেছে।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এই নির্বাচনী মহড়াকে একটি ‘লজ্জা’ বলে অভিহিত করেছে। তারা নির্বাচন বাতিল, শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নতুন নির্বাচনের জন্য একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে।

নির্বাচনের ঠিক আগে, একটি আদালত শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। যদিও ড. ইউনূস বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।

ড. ইউনূস অবশ্য সেই মামলায় জামিনে আছেন। তাঁকে কারাগারে যেতে হয়নি ঠিক, কিন্তু শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির অভিযোগে ১০০ টিরও বেশি মামলা তাঁকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তিনি এগুলো ‘খুবই দুর্বল এবং সাজানো গল্প’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ড. ইউনূসের সমর্থকেরা বলেন, শেখ হাসিনার সরকার তাঁকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যেই এসব মামলায় ফাঁসাচ্ছেন। কারণ তিনি একসময় ‘নাগরিক শক্তি’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের কথা ভেবেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হাসিনা এই বিতর্ককে অস্বীকার করেন। ২০১১ সালে তিনি ড. ইউনূসকে ‘গরিবদের রক্তচোষা’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

ড. ইউনূসের প্রশ্ন, একজন নাগরিকের কি রাজনৈতিক দল করার চেষ্টা করা অপরাধ? তিনি বলেন, রাজনীতির জন্য নিজেকে অনুপযুক্ত বুঝতে পেরে মাত্র ১০ সপ্তাহ পরেই তিনি এমন ধারণা ত্যাগ করেছিলেন।

ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ পুনরুজ্জীবিত করা কঠিন হবে। নতুন শুরু করা খুব কঠিন হবে, কারণ আমরা এটিকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে এসেছি যেখানে এটি (রাজনৈতিক পরিবেশ) সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে গেছে।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *