এমবিএ পাস জাবেদ এখন সফল খামারি


ইত্তেহাদ নিউজ,ফেনী:আনোয়ারুল জাবেদ ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়ার হাট সংলগ্ন আনোয়ারুল কবিরের ছেলে। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৯ সালে এমবিএ শেষ করেন। পড়াশোনা চলাকালীন তার চোখে ছিল ভিন্ন স্বপ্ন। লেখাপড়া শেষ করে গড়েছেন গরু-মহিষের খামার। এই খামারের স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন জাবেদ।
২০১৯ সালে ছোট্ট পরিসরে নিজ বাড়িতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৫টি মহিষ পালন শুরু করেন। মহিষ দিয়ে খামার শুরু করলেও বর্তমানে তার খামারে গরু-মহিষ দুটোই রয়েছে। মেধা, শ্রম আর অধ্যাবসায়ের কারণে তার খামারে বর্তমানে ছোট বড় প্রায় পাঁচ শতাধিক মহিষ ও গরু রয়েছে। খামারের সবগুলো গরু-মহিষ এবারের ঈদুল আজহায় বিক্রি হবে না। আগামী ঈদের জন্যও প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্তমানে ঈদে বিক্রির উপযোগী ৩৫টি মহিষ ও ৩০টি গরু প্রস্তুত রয়েছে।
প্রতি বছরই ঈদুল আজহার পূর্বে নিজেদের খামারে পালন করা মহিষ ও গরু বিক্রি করে প্রায় ৩০ লাখের অধিক টাকা আয় করে থাকেন। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজ খামারে পালন করা মহিষ বিক্রি করে এখন সফল ব্যবসায়ীদের একজন আনোয়ারুল জাবেদ। আসন্ন ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ইন্ডিয়ান মুর্রা, জাফ্রাবাদী, হাসা ও দেশীয় জাতের মহিষ।
শেডের সঙ্গে বাঁধা নানা জাতের সুন্দর, সুঠাম ও দৃষ্টিনন্দন গবাদি পশু মহিষ ও গরু। প্রতিবারের ন্যায় এবারো কোরবানি ঈদকে ঘিরে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এদের নাম ও সৌন্দর্য নজর না আটকানোর সুযোগ নেই। একদিকে চলছে পশু গোসলের ব্যস্ত কর্মযজ্ঞ অন্যদিকে চলছে খাবারের জোগান। শ্রমিকদের ব্যস্ততা থেমে নেই। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শৌখিন মানুষ কোরবানির পশু পছন্দের জন্য কবির এগ্রো ফার্মে ছুটছেন। ন্যায্য দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পশুগুলোর বেশি বেশি পরিচর্যা করে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারি ও শ্রমিকরা। মহিষগুলো দেখাশোনার জন্য ১০ জন শ্রমিক এই খামারে চাকরি করেন। তারা পশুগুলো ঈদুল আজহার শেষ মুহূর্তে নানাভাবে পরিচর্যা করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে খামারি আনোয়ারুল জাবেদ বলেন, প্রথমে অল্প পরিসরে মহিষ পালন শুরু করি। পরে মহিষের পাশাপাশি গরু পালনও শুরু করি। এলাকায় অনেক মানুষই কোরবানির জন্য মহিষ পছন্দ করেন। দিন দিন মহিষের ক্রেতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বছরই মহিষের সংখ্যা বাড়িয়েছি। কেননা এটি ডায়াবেটিস, হার্টসহ সকল ধরনের রোগী মহিষের মাংস খেতে পারে। তা ছাড়া এটি চারণভূমির বিধায় এটির পুষ্টিগুণও বেশি। তাই বর্তমান বাজারে গরুর পাশাপাশি মহিষেরও ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। অবৈধ পথে ভারত থেকে গরু আমদানি না হলে আমি এবার লাভবান হবার ব্যাপারে আশাবাদী।
আনোয়ারুল জাবেদ আরও বলেন, খামারটি শখ করে শুরু করে এখন বাণিজ্যিক আকারে চলছে। ঈদকে সামনে রেখে অনেকজন বেশি লাভের আশায় পশু পালন করে। আমি এ রকম না। ক্রেতা ন্যায্য দামে যেন তাদের পছন্দের পশুটি নিতে পারে সেটি আমার লক্ষ্য। গবাদি পশু নিয়ে ভিন্ন একটা আনন্দের জগৎ আছে আমাদের। এবারো আমার খামারে দেড় লাখ থেকে শুরু করে সাড়ে ৪ লাখ টাকার মূল্যের বিক্রয় উপযোগী মহিষ রয়েছে। আমার খামারে ছোট থেকে বড় মহিষের ওজন ধারণা করা হচ্ছে তিন মণ থেকে সাড়ে ১০ মণ ওজনের হবে। ঈদে মহিষ অথবা গরুর প্রয়োজনে ০১৮২৯ ৭৪৭ ৭৩২ নম্বরে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নেবু লাল দত্ত বলেন, আনোয়ারুল জাবেদ একজন সফল খামারি। লেখাপড়া শেষ করে গরু-মহিষের খামার গড়েছেন। শিক্ষিত বেকারদের এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উদ্যোগী হতে পারলে সমাজের বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক গতি বৃদ্ধি পাবে। দেশ হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে জাবেদ এর মতো দক্ষ উদ্যোক্তার বিকল্প নেই।
* সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়