সংবাদ এশিয়া

বাবরি মসজিদের নাম মুছে ফেলা হলো ভারতের পাঠ্যবই থেকে

image 817656 1718544594
print news

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্কভারতের ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)’র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ের পাঠ্যসূচি থেকে মুছে ফেলা হলো বাবরি মসজিদের নাম। এনসিইআরটি’র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে কিছু সংশোধন হচ্ছে বলে আগেই খবর ছিল। কিন্তু কী সংশোধন হচ্ছে, কতটা সংশোধন হচ্ছে, তা আগে জানা যায়নি।

নতুন সংস্করণ সামনে আসার পরই অযোধ্যার ইতিহাস সংশোধন করা হয়েছে বলে জানা গেল। আগে যেখানে চারটি পাতায় অযোধ্যার ইতিহাস লিপিবদ্ধ ছিল, বর্তমানে সেটিকে দুই পাতায় এনে ফেলেছে এনসিইআরটি। এনসিইআরটির পাঠ্যক্রম মেনে চলে সিবিএসই বোর্ড। আইসিএসই এবং আইএসই বোর্ডও কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে। স্বাভাবিকভাবে এমন ঘটনায় দেশব্যাপী শুরু হয়েছে বিতর্ক।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে বাজারে আসা এনসিইআরটি’র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের নতুন সংস্করণে মাত্র দুই পৃষ্ঠার মধ্যে যে ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে তাতে কোথাও বাবরি মসজিদের উল্লেখ নেই। বাবরি মসজিদকে বইতে ‘তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুজরাটের সোমনাথ থেকে অযোধ্যার উদ্দেশে যে রথযাত্রা বের করেছিল বিজেপি, তার কোনো উল্লেখ নেই বইয়ে। উল্লেখ নেই করসেবকদের তাণ্ডবের। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধে তাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে সেই সময় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া, কিছুই আর নেই বইয়ে।

আগের এনসিইআরটি’র রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল বাবরি মসজিদকে ১৬ শতকে নির্মিত হয়েছে। বইয়ে লেখা ছিল মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাকি সেটির নির্মাণ করেছিলেন। বইয়ের নতুন সংস্করণে বাবরি মসজিদের নামই উল্লেখ করা হয়নি এক জায়গাতেও। বরং লেখা হয়েছে, ১৫২৮ সালে শ্রী রামের জন্মস্থানে তিন গম্বুজ সম্বলিত একটি নির্মাণ গড়ে তোলা হয়েছিল, যেখানে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন প্রতীকচিহ্ন দৃশ্যমান ছিল। কাঠামোর ভিতরে এবং বাইরে হিন্দু সৌধের ধ্বংসাবশেষ দেখা গিয়েছে। বইয়ের আগের সংস্করণের বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং সংঘর্ষের উল্লেখ ছিল। তবে নতুন সংস্করণে লেখা হয়েছে, ‘অযোধ্যা নিয়ে বিজেপির আফসোসের অন্ত ছিল না।’

পুরনো সংস্করণে লেখা ছিল, ফৈজাবাদ আদালতের নির্দেশে ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবরি মসজিদের তালা খুলে দেওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল দেখা দেয়। সোমনাথ থেকে অযোধ্যা পর্যন্ত রথযাত্রা, সাম্প্রদায়িক অশান্তি, করসেবকদের উন্মাদনা, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং দাঙ্গার উল্লেখ ছিল আগের সংস্করণে। নতুন সংস্করণে লেখা হয়েছে, ‘অযোধ্যা নিয়ে আফসোসের অন্ত ছিল না বিজেপির।’ ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে তর্ক-বিতর্কের প্রয়োজন রয়েছে বলে অযোধ্যা থেকেই ধারণা জন্মায় বলেও উল্লেখ রয়েছে বইয়ে।

নতুন সংস্করণে আরও লেখা হয়েছে, ‘শ্রী রামের জন্মভূমিতে মন্দির ভেঙে তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণটি দাঁড় করানো হয় বলে বিশ্বাস জন্মায়। মন্দিরের শিলান্যাস হওয়ার পরও নির্মাণের কাজ এগোয়নি। ফলে হিন্দুদের মনে ধারণা জন্মায় যে রামজন্মভূমি নিয়ে তাদের আবেগকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, মুসলিমরা গোটা কাঠামোর উপর দখলদারি চেয়ে দাবি জানায়। সেই নিয়ে দুই তরফে উত্তেজনা বাড়ে। আইনি টানাপোড়েন শুরু হয়। দীর্ঘদিনের এ বিবাদের নিষ্পত্তি চেয়েছিল দুই পক্ষই। ১৯৯২ সালে কাঠামোটি ধ্বংসের পর সমালোচকদের একাংশের মনে হয়েছিল, ভারতীয় গণতন্ত্রের নৈতিকতাই ঝুঁকির সম্মুখীন।

 

* সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *