বিশেষ সংবাদ

গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেবার দাবি

a18c40e0 53ee 11ef 8f0f 0577398c3339.jpg
print news

বিবিসি বাংলা: বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় সরব একটি সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা বা ডিজিএফআই-এর অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিল। মানবাধিকার কর্মীরা যখন ডিজিএফআই অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিল তার আগেই বহু বছর নিখোঁজ থাকা জামায়াতে ইসলামী সাবেক দুই শীর্ষ নেতার দুই ছেলের খোঁজ মিলেছে।

বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষায় সরব একটি সংগঠন ‘মায়ের ডাক’ মঙ্গলবার ঢাকা সেনানিবাসে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা বা ডিজিএফআই-এর অফিসের সামনে জড়ো হয়েছিল।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন গত ১৫ বছরে যেসব মানুষকে গুম করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘মায়ের ডাক’ নামের সংগঠনটি গড়ে ওঠে। গত এক দশক যাবত এই সংগঠনটি গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দাবিতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে।

‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মঙ্গলবার তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস ও জাতিসংঘ ঢাকা অফিসের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান হুমা খান।
বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের দুই কর্মকর্তা প্রথমে ডিজিএফআই অফিসের ভেতরে যান। সেখানে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে আবার বাইরে ফিরে আসেন। এরপর ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের চারজন প্রতিনিধিকে ডিজিএফআই অফিসের ভেতরে নেয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র প্রতিষ্ঠান আন্তবাহিনী জন:সংযোগ পরিদপ্তরের সাথে বিবিসি বাংলার তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ডিজিএফআই-এর তরফ থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তারা আমাদের জানিয়েছেন যে গত ১৫ বছরে গুম হবার ঘটনা ঘটেছে, সেটা তারা অস্বীকার করছেন না। তিনি বিষয়টি নিয়ে সেনাপ্রধানের সাথে কথা বলবেন এবং বুধবারের মধ্যে আমাদের আপডেট জানাবেন।”

ডিজিএফআই কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে সানজিদা ইসলাম বলেন, তারা অস্বীকার করছেন না যে গত ১৫ বছরে এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। তারা বলেছেন, ডিজিএফআই ছাড়াও আরো গোয়েন্দা সংস্থা আছে এবং সেখানে মানুষ আটক থাকতে পারে।

শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময় গত ১৫ বছরে বহু মানুষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন অভিযোগ ছাড়াই তুলে নিয়ে যায়। কারো কারো বিরুদ্ধে মামলা ছিল। তুলে নিয়ে যাওয়া বহু ব্যক্তির খোঁজ বছরের পর বছর গড়িয়ে গেলেও মেলেনি।

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন তাদের ‘গুম’ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের দিক থেকে অনেক প্রশ্ন আর সমালোচনার মুখে পড়েছিল শেখ হাসিনা সরকার

উল্টো তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছিলেন, যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তারা নিজেরাই আত্মগোপনে আছে।

ইতোমধ্যে দীর্ঘ আট বছর পর অজ্ঞাত স্থানে আটক থাকা সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী মুক্ত হয়েছেন। মি. আযমী জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আজমের মেজো ছেলে।

জামায়াতে ইসলামীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে তার ‘ফিরে আসার’ বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও তিনি কোথা থেকে ফিরে এসেছেন সেটি উল্লেখ করা হয়নি।

অন্যদিকে বহু বছর নিখোঁজ থাকার পর ফিরে এসেছেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে আহমেদ বিন কাসেম। মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মি. আযমী ও মি.কাশেমকে ঢাকার দিয়াবাড়ি এলাকায় বেরিবাঁধ এলাকায় পাওয়া গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

ব্রিটেনে মি. কাসেমের আইনজীবী মাইকেল পোলাক বিবিসিকে বলেন, আটক হবার পর মি. কাসেমের ভাগ্যে কী ঘটেছে সেটি নিয়ে তারা অনিশ্চয়তায় ছিলেন।

” গত শাসনামলে আটক হওয়া রাজনৈতিক বন্দিদের দ্রুততার সাথে মুক্তি দেবার বিষয়টি নিয়ে আমরা আশাবাদি। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে এই সংকেত পাওয়া যাচ্ছে যে মানবাধিকারের বিষয়ে তারা ইতিবাচক। এখন অন্যান্য বন্দিদের ব্যাপারে তথ্য তাদের পরিবারের কাছে জানানো হবে বলে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে,” বলেন মি. পোলাক।

“আমরা চাই যারা এখনো অজ্ঞাত স্থানে আটক আছেন তাদের যেন সসম্মানে বাসায় পৌঁছে দেয়া হয়। তাদের যেন এখানে-সেখানে ছেড়ে দেয়া না হয়,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন সানজিদা ইসলাম।

২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে গোলাম আযমের ছেলে আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে ঢাকার বড় মগবাজারের বাসা থেকে তাকে সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে আটক করা হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অব্যাহতি দিয়েছে।

তবে মি. আযমীকে আটকের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কখনোই স্বীকার করেনি।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে আহমেদ বিন কাশেমকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যায ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে।

তার পরিবার তখন অভিযোগ করেছিল, সাদা পোশাকে অস্ত্রধারী কয়েকজন ব্যক্তি তাকে মিরপুর ডিওএইচএসের বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছে।

মি. বিন কাশেম পেশায় একজন আইনজীবী এবং তার বিরুদ্ধে কোন মামলা বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিলনা বলে জানিয়েছিলেন তার স্ত্রী।

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায়

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *