আড়িয়াল বিলে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : আদিলুর রহমান খান


ইত্তেহাদ নিউজ,মুন্সীগঞ্জ : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী আদিলুর রহমান খান বলেছেন, আড়িয়াল বিলের ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়িয়াল বিল এলাকায় যাতে অবৈধ ভূমিদস্যুরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে প্রশাসনকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকালে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘরে তার পৈতৃক বাড়িতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আদিলুর রহমান খান। এ সময় তিনি তার মা-বাবার কবর জিয়ারত করেন।
মতবিনিময় সভায় আদিলুর রহমান খান আরও বলেন, বাংলাদেশটা যেন ভালো থাকে, আপনারা সবাই যার যার অবস্থান থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও গৌরবোজ্জ্বল সত্যিকারের স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশাররেফ হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুজ্জামান, শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মুহিতুল ইসলাম, শ্রীনগর থানার ওসি তায়াবির আহমেদ, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী তাসকিন ফারহানা, মাকসুদ আহমেদ, কাজী মুহিত ও শ্রীনগর উপজেলা উপপ্রকৌশলী শরিফুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
কে এই আদিলুর রহমান খান:
আদিলুর রহমান খান একজন মানবাধিকার কর্মী এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের একজন আইনজীবী এবং সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হোসেন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আদিলুর রহমান খান এবং সুশীল সমাজের অন্যান্য সদস্যরা ১০ অক্টোবর, ১৯৯৪ সালে মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিএনপি-জামায়াত সরকার কর্তৃক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে, তিনি একটি মামলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন যেখানে হাইকোর্ট সরকারকে ইসলামপন্থি জঙ্গিদের দ্বারা বিচার বিভাগীয় বোমা হামলা থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে বলেছিল। তিনি ১৪ মে ২০০৭ এ তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
হেফাজত-ই-ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালের শাপলা স্কোয়ার বিক্ষোভের সময় নেতা-কর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ জন্য আদিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ১০ আগস্ট ২০১৩ সালে রাত সাড়ে ১০টায় তাকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ এর ৫৪ ধারায় তাকে আটক করা হয়েছিল এবং তাকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়া হয়নি। ঢাকায় হাইকমিশনার হিদার ক্রুডেনের মাধ্যমে কানাডা তার মুক্তির আহ্বান জানায়। বাংলাদেশের অসংখ্য মানবাধিকার কর্মী তার মুক্তির দাবি জানান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি জাফর আহমেদ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে খানকে কারাগারে ডিভিশনের মর্যাদা দিতে সরকারকে নির্দেশ দেন। ২০১৩ সালের অক্টোবরে, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি বোরহানউদ্দিন এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের কাছ থেকে জামিন পেয়ে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে, খান এবং অধিকারের পরিচালক এএসএম নাসিরুদ্দিন এলান, ২০১৩ সালের বিক্ষোভের প্রতিবেদনে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত হন। এরপর ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃক কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে খানকে আটক করা হয়। পরদিন তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে, ২০১৩ সালের শাপলা স্কয়ার বিক্ষোভ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বিক্ষোভকারীদের সরাতে সরকারী পদক্ষেপের জন্য দায়ের করা একটি মামলায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল দ্বারা খান এবং নাসিরুদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফ্রান্স ও জার্মানি এই রায়ে দুঃখ প্রকাশ করে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আইনজীবী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এই রায়ের প্রতিবাদ জানায়।
আদিলুর রহমান ২০১৪ সালে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার, মানবাধিকারের জন্য গোয়াংজু পুরস্কার (২০১৪), ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড এবং মার্টিন এনালস অ্যাওয়ার্ড ফাইনালিস্ট (২০১৪) পুরস্কার লাভ করেন।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়