সীতাকুণ্ড উপজেলা পরিষদের পিয়ন সুমন অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে কোটিপতি


ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাকৃতিক কারণেই অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝখানে অবস্থান হওয়ায় দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই সীতাকুণ্ড। উপজেলা পরিষদের পিয়ন হিসেবে মোয়াজ্জেম হোসেন সুমন ২০০৯ সালে দৈনিক চুক্তিতে যোগদান করলেও পরবর্তীতে দৈনিক ২৮০ টাকায় চলে বেতন। কিন্তু সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আলহাজ এসএম আল মামুন নির্বাচিত হওয়ার পর হতে সুমন হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
সরকারি প্রজেক্ট, টিউবওয়েল, ইমারত ফাইল স্বাক্ষরের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পিয়ন সুমন হয়ে ওঠেন উপজেলা পরিষদের রাঘববোয়াল। তার কাছে অসহায় হয়ে পড়েন অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাহান এন্টারপ্রাইজ নামে পৌর সদরে কোটি টাকা দিয়ে মোবাইল দোকান ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান।
সীতাকুণ্ড উপজেলা যুব চত্বরে তার স্ত্রী লুপা আক্তারের নামে দোকান বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। ক্ষমতার দাপটে তার স্ত্রীকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে মোহরার পদে নিয়োগ করে নিয়েছেন। গত তিন বছরে চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর সুমনের পরিবারের নামে সীতাকুণ্ড পৌর সদরে একাধিক দোকান, চারটি সিএনজি ছাড়াও কয়েকটি ব্যাংকে করেছেন কোটি কোটি টাকার লেনদেন। চাকরি দেয়ার কথা বলে কয়েকজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এসব অনিয়ম নিয়ে কেউ ভয়ে মুখ খুলছেন না। তবে সীতাকুণ্ড উপজেলায় সরকারি সকল কাজের বিল তুলতে হলে সুমনকে ১৪% কমিশন দিতে হতো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেছেন, তার রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। এখানে রাজনৈতিক নেতা এবং সন্ত্রাসী ছাড়াও রয়েছে সিনিয়র দাবি করা সাংবাদিক। এ কারণে কেউ তথ্য দিলে তাদের বিরুদ্ধে ওই সব সাংবাদিক ভুয়া আইডি ও পেজ খুলে অপপ্রচার চালায়। পিয়ন হলেও সুমন অফিসে চেয়ার নিয়ে বসেন। বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন। অফিসারের মতো ভাবসাব নিয়ে চলেন দামি গাড়িতে। সরকারি বরাদ্দ পিআইসির আওতায় সুমনের নিজের বাড়ির দেয়াল নির্মাণ করছেন বলে একাধিক সূত্র বলছে।
তার এতসব অপকর্ম ও কোটি কোটি টাকার বিষয়ে সুমন বলেন, আমি হুকুমের গোলাম। অফিসের কর্তারা যা বলেছেন তাই করেছি। অনিয়ম-দুর্নীতি হলে স্যারেরা অপরাধী। তাদের টাকা এনে দিয়েছি। আমি অল্প টাকা করে নিতাম। কিন্তু বিভিন্ন ব্যাংকে এত অস্বাভাবিক লেনদেন, গাড়ি, সরকারি বরাদ্দের দোকান কিভাবে হলো- প্রশ্নে চুপ থাকেন। আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। তাছাড়া স্ত্রীর নামে একটি এলিয়ন প্রাইভেটকার রয়েছে। ফ্যামিলির অন্যজনের নামে আরেকটি প্রাইভেটকার ও চারটি সিএনজি সুমনের নামে আছে। সীতাকুণ্ডের মানুষ তার অঢেল সম্পদের হিসাব দুদকের মাধ্যমে তদন্ত চান।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়