ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান


ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক : ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অন্তত ২০০ রকেট নিক্ষেপ করেছে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে স্কাই নিউজ।ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দাবি করেছে, ২০০ রকেটের মধ্যে অন্তত ৮০ শতাংশ ইসরায়েলে আঘাত করেছে।তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখন পর্যন্ত তেমন গুরুতর আহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ইসরায়েলে সরাসরি হামলার জন্য ইরানকে কড়া ভাষায় বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও ইরানের এসব হামলার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
ইসরাইলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম এমডিএ) বলেছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইল জুড়ে মাত্র দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা বলেছে, তারা তেল আবিবে শার্পনেলের আঘাতে সামান্য আহত হওয়া মাত্র দুজনকে চিকিৎসা দিয়েছে।এমডিএ আরও বলেছে, নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ানোর সময় পড়ে যাওয়া এবং তীব্র উদ্বেগের কারণে আরও কয়েকজন সামান্য আঘাত পেয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।এর আগে, ইসরাইল বলেছিল যে তাদের সৈন্যরা ‘সীমিত’ স্থল অভিযানের জন্য দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করেছে। তবে হিজবুল্লাহ ইসরাইলি বাহিনীর ওই অঞ্চলে প্রবেশের তথ্য অস্বীকার করেছে।লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, লেবানন তার ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়গুলোর একটির মুখোমুখি হয়েছে।এদিকে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে, মঙ্গলবার কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
ইরানি হামলার জবাব দেবার অঙ্গীকার করলো ইসরায়েল
ইরানের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েল প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করেছে। সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ইসরায়েল তার পছন্দের সময় এবং জায়গায় আক্রমণের জবাব দেবে।
“এই আক্রমণের পরিণতি আছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে, এবং আমরা সেটা করার সময় এবং জায়গা ঠিক করবো আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী,” ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হেগারি বলেন।
ইরান বলছে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ ‘প্রথম ধাপ’ মাত্র
ইসরায়েল লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার দায় দাবী করে ইরান বলেছে, এই আক্রমণ “প্রথম ধাপ” মাত্র। তবে তারা বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়নি। এই দাবী রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচার করা এক বিবৃতিতে করা হয়।বিবৃতিতে ইরান লেবাননের হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ এবং ইরানি রেভলিউশনারি গার্ড বাহিনীর জেনেরাল আব্বাস নিলফরুশানের কথা স্মরণ করে, যারা গত সপ্তাহে বৈরুতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন।বিবৃতিতে হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়েহ’র কথাও বোলা হয়, যিনি তেহরানে আততায়ীর হাতে নিহত হন। হানিয়ের হত্যার জন্য ইসরায়েলকে সন্দেহ করা হয়।
ইসরাইলকে মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হিজবুল্লাহ
লেবাননে সর্বাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। ইতিমধ্যে দেশটির সীমান্তে বিপুল পরিমাণ ট্যাংক মোতায়েন করেছে। ফলে যেকোনো সময় তারা লেবাননে স্থল হামলা চালাতে পারে। অন্যদিকে শুক্রবার হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যার পর যুদ্ধবিমান থেকে হামলা অব্যাহত রয়েছে। তবে ইসরাইলের এই আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার হুঙ্কার দিয়েছে হিজবুল্লাহ। সোমবার এ সংগঠনের উপপ্রধান নাঈম কাশেম ভাষণ দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেন, ইসরাইলের হামলা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হিজবুল্লাহ। দ্রুতই অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নতুন প্রধান নিয়োগ দেয়া হবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের উপকণ্ঠে হিজবুল্লাহর সদর দপ্তরে ইসরাইলের হামলায় নিহত হন এই যোদ্ধা গোষ্ঠীর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। ওই ঘটনার পর শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতা প্রথমবার জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। ইসরাইল তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না মন্তব্য করে ভিডিও বার্তায় নাঈম কাশেম বলেন, আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করব। ইসরাইল যদি স্থলপথে আগ্রাসনের সিদ্ধান্ত নেয়, আমরাও প্রস্তুত আছি। প্রতিরোধ বাহিনীগুলো স্থল হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে। লেবাননে দুই সপ্তাহে একের পর এক হামলায় হিজবুল্লাহকে ঘায়েল করে দিয়েছে ইসরাইল। এসব হামলায় গোষ্ঠীর প্রধানসহ কয়েকজন কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের পরবর্তী পদক্ষেপ লেবাননে স্থল অভিযান পরিচালনা করা। ইতিমধ্যে লেবানন সীমান্তে বিপুলসংখ্যক ট্যাংক জড়ো করেছে তারা। নাঈম কাশেম আরও বলেন, ইসরাইল লেবাননের সর্বত্র হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে আগ্রাসনের ছাপ পড়েনি। তিনি বলেন, ইসরাইল বেসামরিক লোকজন, শিশু, বয়োবৃদ্ধ, অ্যাম্বুলেন্সের ওপরও হামলা চালাচ্ছে। তারা যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়ছে না; বরং হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা টেনে হিজবুল্লাহর উপপ্রধান বলেন, সীমাহীন সামরিক সহায়তা দিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ইসরাইলের সহযোগীতে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বক্তব্যের শেষে কাশেম বলেন, আমরা জয়ী হবো, ঠিক যেভাবে ২০০৬ সালে ইসরাইলের সঙ্গে লড়াইয়ে জয়ী হয়েছিলাম।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।