বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী সৈয়দ মহিউদ্দিন শত কোটি টাকার মালিক


* পদই কিনেছেন ৪০ লাখ টাকায়,* উত্তরায় ফ্লাট*দুদকে লিখিত অভিযোগ
মামুনুর রশীদ নোমানী,বরিশাল:
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের যান্ত্রিক পওর বিভাগের মেকানিক সৈয়দ মহিউদ্দিন ওরফে মহিউদ্দিন শত কোটি টাকার মালিক। আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি ও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের প্রভাব ও আওয়ামীলীগের দাপট দেখিয়ে চাকুরীর পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ ভাগাভাগি এবং নিজ স্ত্রীর নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করে কাজ বাগিয়ে নিতেন।তিনি বিভিন্ন নামে পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রায় ২৬২ কোটি টাকার কাজ করেছেন। ৫ আগষ্টের পর ভোল্ট পাল্টে হয়ে গেছেন বিএনপি নেতা।২৬ নভেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন, বরিশাল আঞ্চলিক কমিটিতে সাধারন সম্পাদকের পদ ৪০ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এসব অভিযোগ অস্বিকার করে মহিউদ্দিন জানান,আমি এক সময়ে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও এখন বিএনপির রাজনীতির সাথে আছি। দুদকে লিখিত অভিযোগের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে স্ত্রীর নামে একটি ঠিকাদারী ফার্ম রয়েছে বলে স্বিকার করে বলেন, এখন কোন ঠিকাদারী কাজ করেনা। আমার স্ত্রী ও পুত্র সিমেন্ট ব্যবসার সাথে জড়িত।
শাহ আলম শাহিন ও আতাহার উদ্দিন নামে দুজন ব্যক্তি দুর্নীতি দমন কমিশনে মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ,জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,সৈয়দ মহিউদ্দিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল যান্ত্রিক বিভাগের কেন্দ্রীয় গুদাম থেকে রাতের অন্ধকারে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নিয়ে গেছেন।বরিশাল সদর আসনের সাবেক এমপি ও পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের প্রভাব দেখিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে জিম্মি করে নিজ স্ত্রী ও পছন্দ মত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কার্য্যপত্র ইম্যু করতে বাধ্য করতেন।তিনি আওয়ামীলীগের দাপুটে নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
সৈয়দ মহিউদ্দিন রুপালী কনাস্ট্রাকশন,সালে আহম্মেদ-নুর হোসেন জেভি,হাসান এন্ড ব্রাদার্স ও জে আর এন্টারপ্রাইজের নামে প্রায় ২৬২ কোটি টাকার কাজ নিয়ে কোটি কোটি টাকা অসৎভাবে আয় করে হয়েছেন ধনকুব । তিনি সরকারি চাকুরি করা অবস্থায় সরকারি বিধি -বিধান লঙন করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানান একাধিক কর্মচারীরা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, সৈয়দ মহিউদ্দিন একই কর্মস্থানে প্রায় দেড় যুগ থেকে স্ত্রী জাকিয়া আক্তার ও পুত্র সৈয়দ মাইনুল ইসলামের নামে অর্থ সম্পদ ও ব্যবসা বানিজ্য গড়ে তুলেছেন।এ দুজনের ব্যাংক হিসেবে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। দুদক তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে সৈয়দ মহিউদ্দিনের জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদের বিবরন।
এছাড়া মহিউদ্দিন তৃতীয় শ্রেনীর কর্মচারী হয়ে কিভাবে ঢাকার উত্তরায় ফ্লাট,জমি, বরিশালে স্ত্রী ও পুত্রের নামে জমি ক্রয় ও কোটি কোটি টাকার সম্পদের উৎস কি এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারন কর্মচারীরা।
শ্রমিকদলের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আওয়ামীলীগ শাসনামলে আওয়ামীলীগ নেতা ও ঠিকাদার আফতাব চেয়ারম্যানের পার্টনার ছিলেন সৈয়দ মহিউদ্দিন।শত শত কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছেন চাকুরীর পাশাপাশি। ফ্যাসিবাদের এই দোষর ৫ আগষ্টের পরে ভোল্ট পাল্টে হয়েছেন বিএনপি নেতা।তারেক রহমানের নির্দেশনা উপেক্ষা করে টাকার বিনিময়ে মহিউদ্দিন জাতীয়তাবাদী পানি উন্নয়ন বোর্ড শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন বরিশাল আঞ্চলিক শাখার সাধারন সম্পাদকের পদ ক্রয় করে নিলেন।মহিউদ্দিন সাধারন সম্পাদক হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত বিএনপি সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সৈয়দ মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল এমনটাই মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারীরা।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।