সচিবালয়ে আগুন: তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন


ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : সচিবালয়ে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠপ্রশাসন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। এই কমিটির সদস্য-সচিব হবেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়)।
সদস্য হিসেবে থাকবেন- জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পদমর্যাদার নিচে নয়), ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধি এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রতিনিধি।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের উৎস ও কারণ উদঘাটন, অগ্নি দুর্ঘটনার পেছনে কারো ব্যক্তিগত বা পেশাগত দায়দায়িত্ব আছে কি না তা উদ্ঘাটন, এ জাতীয় দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে সুপারিশ প্রেরণ। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে।
বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে ভবনের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম তলা পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর ৪নং ভবন ছাড়া সব ভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিহীন থাকায় সচিবালয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে প্রবেশ করলেও কোনো কাজ করতে না পারায়, অনেকেই বাসায় ফিরে যাচ্ছেন।বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সচিবালয়ের ৪নং ভবন ছাড়া অন্যান্য ভবনে বিদ্যুৎ নেই। অনেক দপ্তর খোলেনি এবং বেশ কিছু দপ্তর এখনও তালাবদ্ধ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভেতরে ঢোকার সুযোগ পেলেও কোনো কক্ষেই প্রবেশ করা যাচ্ছে না। পুরো সচিবালয় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। কিছু স্থানে জেনারেটর চললেও অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ নেই।স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক কর্মচারী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের একাংশ পুড়েছে। পুরো ভবন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। আমরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বেড়িয়ে আসছি।
ছয় নম্বর ভবনে থাকা নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্মী আফসানা আক্তার বলেন, অন্য ভবনে আগুন লাগলেও আমাদের ভবনে বিদ্যুৎ না থাকায় ঢুকতে পারছি না। সেজন্য বেড়িয়ে আসছি। একই কথা বলেছেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রাজিব আহমেদ।এদিকে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে তাদের ২০টি ইউনিট ও ২১১ জন ফায়ার কর্মী কাজ করেছেন। দুর্ঘটনা এড়াতে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ অফ রাখা হয়েছে। ষষ্ঠ ও সপ্তম তলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মূলত বিদ্যুৎ লাইন দিয়ে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল।
সচিবালয়ে লাগা আগুন পরিকল্পিত হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নৌ-বাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার (পিও) আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, শর্ট সার্কিট থেকে সাধারণত একাধিক স্থানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ছয়তলা, নয়তলা একসঙ্গে আগুন লেগেছে, যা পরিকল্পিত হতে পারে।বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সহায়তায় নৌ-বাহিনীর একটি টিম মোতায়েন করা হয়।সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমিনুল ইসলাম বলেন, যেখানে আগুন লেগেছে, সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা এখনো সবকিছু সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারিনি, তবে তা করব। নৌ-বাহিনীর টিম এখানে কাজ করছে।পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ডের সন্দেহের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, শর্ট সার্কিটের আগুন সাধারণত এক জায়গা থেকে শুরু হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আগুন একসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে লেগেছে, যা অস্বাভাবিক।
সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সব সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। ভিজিট করুন : http://www.etihad.news
* অনলাইন নিউজ পোর্টাল ইত্তেহাদ নিউজে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায় ।