বাংলাদেশ ঢাকা

ডিজিটাল দুর্নীতি: নেওয়া হয় ২৬৩ কোটি টাকা

OVIBASONER GOTI
print news

ইত্তেহাদ নিউজ,ঢাকা : এ বছর অভিবাসী সংখ্যা অন্তত ৩০.৮০ শতাংশ কমেছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ, পর্তুগাল, ইতালি ও ফ্রান্সের অভিবাসন নীতিমালা কঠোর হওয়া এবং অভিবাসন খাতে দুর্নীতির কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। ডিজিটাল দুর্নীতির মাধ্যমে অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অন্তত ২৬৩ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ হতে শ্রম ও অভিবাসনের গতি-প্রকৃতি ২০২৪ অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আয়োজন করে অভিবাসন খাতের বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি রিচার্স মুভমেন্টস ইউনিট (রামরু)।

লিখিত বক্তৃতায় রামরু’র প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী প্রবন্ধ তুলে ধরে বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৯,০৬,৩৫৫ জন পুরুষ ও নারী কর্মের উদ্দেশ্যে বিদেশে গেছেন। ২০২৩ সালে অভিবাসী পুরুষ ও নারীর সংখ্যা ছিল ১৩,০৫,৪৫৩। চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে যে গতিতে অভিবাসন ঘটেছে, তা অব্যাহত থাকলে বছরের শেষে প্রায় ১০ লক্ষাধিক কর্মী বিদেশে যেতে পারতেন। অর্থাৎ ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে (নভেম্বর পর্যন্ত) অভিবাসীর সংখ্যা প্রায় ৩০.৮০% কমেছে। এছাড়া নারী অভিবাসীর সংখ্যা কমেছে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ। শোভন কর্মক্ষেত্রের অনিশ্চয়তার কারণে নারী কর্মীরা অবশ্যই অভিবাসনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। তাছাড়া বিদেশে যাওয়া অধিকাংশ শ্রমিকই অদক্ষ। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ২০২৪ সালে রেমিট্যান্সের মোট পরিমাণ ২৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সরকার এর আগে ঢালাওভাবে বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ কর্মীরা বিশ্বের ১৬৮ দেশে কাজ করছে বলে প্রচার করলেও বাস্তবে সিংহভাগ অভিবাসী উপসাগরীয়, অন্যান্য আরব দেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১২ থেকে ১৩টি দেশে অভিবাসী গমন করেছে। ২০২৪ সালে বেশ কিছু দেশে শ্রম অভিবাসন বন্ধ রয়েছে। ওমান, বাহরাইন সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালদ্বীপসহ বেশ কয়েকটি দেশে এ বছর কোনো অভিবাসন ঘটেনি। ইতালিতে জাল কাগজপত্রের কারণে এবং সার্বিয়ায় আবেদন প্রক্রিয়ার সার্ভার অকেজো এবং ফ্রান্সে অভিবাসন কঠোর হওয়ায় এই দেশগুলোতে শ্রম ও অভিবাসন কার্যক্রম থেমে গেছে। তাছাড়া সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার পুরোপুরি বন্ধ হয়ে রয়েছে। যুদ্ধের কারণে লেবানন থেকে ৯৬৩ জন কর্মী প্রত্যাবর্তন করেছে। ইতালিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত সব ওয়ার্ক পারমিটের বৈধতা স্থগিত ও সার্বিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি বিষয়ক শ্বেতপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী ডিজিটাল দুর্নীতির অংশ হিসাবে ২০২১ সালের ৮ মে অভিবাসী কর্মীদের স্মার্ট কার্ড প্রদান করাসহ বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা আমি প্রবাসী লিমিটেড নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই সংস্থা বিগত সরকারের আইসিটি বিভাগ এবং ব্র্যাকের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বিদেশগমনকারী অভিবাসীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৩০০ টাকা, স্মার্ট কার্ড ডাউনলোড করার জন্য ১০০ টাকা, স্মার্ট কার্ড সংশোধন ফি বাবদ ২৫০ টাকা গ্রহণ করত। প্রাক-বহির্গমন সার্টিফিকেট গ্রহণের জন্য ১০০ টাকা, গৃহকর্মীর ট্রেইনিংয়ের সার্টিফিকেট গ্রহণের জন্য ১০০ টাকা, এনরোলমেন্ট কার্ড গ্রহণের জন্য ১০০ টাকা, সাধারণ সার্টিফিকেট গ্রহণের জন্য ১০০ টাকা অভিবাসীদের কাছ থেকে এখনো গ্রহণ করছে। এ বাবদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত তারা কমপক্ষে ২৬২ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অভিবাসীদের ব্যক্তিগত তথ্য তাদের অনুমতি ছাড়াই প্রাইভেট কোম্পানির কাছে চলে গেছে। এছাড়া প্রতারিত অভিবাসীরা অভিযোগ প্রদানের ক্ষেত্রেও হয়রানির শিকার হচ্ছে।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরএমএমআরইউর পরিচালক (প্রোগ্রাম) মেরিনা সুলতানা, আইটি অ্যান্ড কমিউনিকেশন অফিসার মো. পারভেজ আলম প্রমুখ।

 

 

সর্বশেষ  গুরুত্বপূর্ণ  সব  সংবাদ, ছবি ,অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ও লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক  দিয়ে  অ্যাকটিভ  থাকুন।  ভিজিট করুন : http://www.etihad.news

* অনলাইন  নিউজ পোর্টাল  ইত্তেহাদ নিউজে  লিখতে  পারেন  আপনিও। লেখার বিষয়  ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন  [email protected] ঠিকানায় ।

সংবাদটি শেয়ার করুন....
ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

ইত্তেহাদ নিউজ ডেস্ক :

About Author

etihad news is one of the famous Bangla news portals published from Abudhabi-UAE. It has begun with a commitment to fearless, investigative, informative, and independent journalism. This online portal has started to provide real-time news updates with maximum use of Smart Technology.